কাপ্তাই হ্রদে সিভাসু’র গবেষণা জাহাজ ‘তরীর’ যাত্রা

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম জলাধার রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে যাত্রা শুরু করেছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) গবেষণা জাহাজ তরী।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রাঙামাটিতে গবেষণা জাহাজ তরীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেন জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ।

এ অনুষ্ঠানে রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যায়ের  উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইনুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু ও রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা ও জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবির ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের রাঙামাটি জেলা ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার এম. তৌহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জের একটি জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান রাঙামাটির পুরনো হেলিপ্যাড এলাকায় এ জাহাজ তৈরির কাজ শুরু করে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে পরীক্ষামূলকভাবে এ জাহাজ লেকে নামানো হয়। ৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত জাহাজের অভ্যন্তরে ল্যাব তৈরি করা হয়। এ তরীতে প্রায় ১৫টি বিষয় নিয়ে গবেষণার কাজ করা হবে।

সেগুলো হলো-রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সংখ্যা বের করা। মাছের অভয়াশ্রম সৃষ্টির জন্য স্থান নির্বাচন। সময়ের সঙ্গে হ্রদের বিভিন্ন ভৌত রাসায়নিক পরিবর্তন বিশ্লেষণ করা। বিলুপ্ত মৎস্য প্রজাতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা। হ্রদে চাষযোগ্য সম্ভাব্য প্রজাতি বের করা। বিভিন্ন মাছের প্রজনন ক্ষেত্রের বাস্তব অবস্থা নিরূপণ। প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ ও পদক্ষেপ গ্রহণ। স্থানীয় জনশক্তিকে খাঁচায় ও পেন কালচারের মাধ্যমে মাছ চাষে উদ্যোগী করা। ঘোনায় মাছ চাষের সুবিধা-অসুবিধাগুলো যাচাই করা। হ্রদের মাছের প্রাকৃতিক খাদ্যের বিস্মৃতির অবস্থা নিরূপণ। প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে করণীয় নির্ধারণ। হ্রদ ভরাট হওয়ার কারণ উদ্ঘাটন। বিশ্লেষণ ও নিরূপণে উদ্যোগ এবং হ্রদের দূষণ দূরীকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সিভাসু গবেষাণা তরীটি ৬৮ হাজার হেক্টর আয়তনের হ্রদে চলাচল করবে। এ জাহাজের মাধ্যমে হ্রদের মাছ কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান ও সংরক্ষণে নানা পরিকল্পনা, উদ্যোগ এবং সিভাসুর এমএস ও পিএইচডি লেভেলের শিক্ষার্থীরা সারা বছর গবেষণা কার্যক্রম চালাতে পারবেন।

এসময় পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সোলার প্যানেল প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সর্বশেষ সংবাদ