যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় ৭০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে বিশ্বের ৭০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে চীন, রাশিয়া, ইরান ও মিয়ানমারের কর্মকর্তারা রয়েছেন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস এবং বিশ্ব মানবাধিকার দিবস সামনে রেখে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সরকার আলাদাভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে আশার কথা হচ্ছে, এ তালিকায় বাংলাদেশের কেউ নেই। যদিও বাংলাদেশের বিরোধী পক্ষরা আশা করেছিল এবারও র‌্যাবের মতো হয়তো অন্য কারও ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। সে চেষ্টাও তারা করেছিল। তবে সে আশা তাদের পূরণ হয়নি। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবিষয়ক দফতর এক বিজ্ঞপ্তিতে দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ৯ দেশের ৪০ জনের বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানায়। নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত ইরান, মিয়ানমার, রাশিয়া, চীন, গুয়াতেমালা, লাইবেরিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া ও পশ্চিম বলকান অঞ্চলের। তাদের মধ্যে উত্তর কোরিয়া সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞায় ভারতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফুনসাগা পিটিই লিমিটেডের পরিচালক দীপক যাদবের নাম রয়েছে। এর আগে যুক্তরাজ্যের সরকার ৩০ জন বিদেশির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসে এ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেন ব্রিটিশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘যারা মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোর জঘন্য লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত, আমাদের এ নিষেধাজ্ঞা তাদের মুখোশ উন্মোচন করবে।’ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার বলছে, আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞাগুলো সমন্বিত করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় এমন ব্যক্তিদের রাখা হয়েছে, যারা বন্দি নির্যাতন ও বেসামরিক নাগরিকদের ধর্ষণের জন্য সেনা মোতায়েনের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত। বিশ্বের মোট ১১টি দেশের নাগরিককে এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনে ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে তালিকায় রয়েছে নিকারাগুয়া, পাকিস্তান ও উগান্ডার নাগরিকও। যৌন সহিংসতায় জড়িত থাকায় দক্ষিণ সুদানের স্থানীয় কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া কাতিবা ম্যাকিনা গ্রুপ নামে মালির একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ও মিয়ানমারের তিন সামরিক প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রাখা হয়েছে। রাশিয়ার যেসব ব্যক্তিকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন রামিল রাখমাতুলোভিচ ইবাতুলিন নামে রুশ সেনাবাহিনীর এক কর্নেল। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানে রাশিয়ার ৯০তম ট্যাংক ডিভিশনের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ইরানের কারা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত এমন ১০ কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬ জন ইরানি বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। যারা বিভিন্ন আন্দোলনে অংশ নেয়া বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুদণ্ডের মতো শাস্তি দেয়ার জন্য দায়ী। ব্রিটিশ সরকারের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় মিয়া আবদুল হক নামে এক পাকিস্তানিও আছেন। তিনি অমুসলিমদের জোরপূর্বক ধর্মান্তর ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িত। পৃথকভাবে বৈশ্বিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে বার্ষিক পর্যালোচনায় যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, গত বছর উইঘুর মুসলিম প্রশ্নে চীনের অবস্থানের অবনতি হয়েছে। উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে ‘ভয়ঙ্কর নিপীড়নমূলক’ আচরণ করা হয়েছে বলে মত দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সর্বশেষ সংবাদ