আর্থিক সংকটে ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত বাতিল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনের জন্য ২ লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম একথা জানিয়েছেন। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) নির্বাচন কমিশন (ইসি) কার্যালয়ে সরকারের এ সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের জানান তিনি। ইসি সচিব আরও বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণ দেখিয়ে ২ লাখ ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে সরকার। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইভিএম প্রকল্পটি বিস্তারিত পরীক্ষা, নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে এবং বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সরকারের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় আপাতত প্রক্রিয়াকরণ না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানিয়েছে। রোববার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এ তথ্য জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ইসি সচিব। এর আগে গত বুধবার (১৮ জানুয়ারি) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন না পাওয়ায় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত নয় কমিশন। গত বছরের অক্টোবরে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ লাখ ইভিএম ক্রয় ও ব্যবস্থাপনার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় ইসি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইভিএমের বিষয়টি সামনে আসে। বিশেষ করে গত বছরের ৭ মে আওয়ামী লীগ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে ৩০০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। পরে নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করে পরবর্তী নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রস্তাবনা দেয়। নির্বাচন কমিশনের কাছে বর্তমানে প্রায় দেড় লাখ ইভিএম রয়েছে এবং তা দিয়ে তারা ৭০ বা ৮০টি আসনে নির্বাচন করতে পারবে। ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার শুরু হয়। এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন নির্বাচন কমিশন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার শুরু করলেও কোনো সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়নি। ২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনও জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করেনি। নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতিটি সংশোধন করে এবং ৬টি আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করে।

সর্বশেষ সংবাদ