অর্থাভাবে পা হারাতে বসেছে শিক্ষার্থী তমা

জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট-এসএসসি পরীক্ষার্থী আমেনা খাতুন তমা (১৬)। প্রস্তুতি নিয়ে ভাল ফলাফল করে স্বপ্ন তার একদিন সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে পরিবার ও সমাজের সেবা করবেন। নারীর বিচরণ সবখানে প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবেন। কিন্তু বিধিবাম, এক বছরে আগে পায়ের টিউমার থেকে ক্যান্সার শুরু হয়। বাধ্য হয়ে কেটে ফেলতে হয় একটি পা। এখন অর্থাভাবে সঠিক চিকিৎসা ও উচ্ছশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে জীবন চালানোর আশা হারিয়ে ফেলছেন তমা।
সমাজের বিত্তশীলদের প্রতি তাকে বাঁচাতে  পরিবার আবেদন জানিয়েছে।
সে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের তমির উদ্দিন (৫৫) ও নাজমা বেগমের মেয়ে ও হাতীবান্ধার গড্ডিমারী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের  এসএসসি পরীক্ষার্থী।
আমেনা খাতুন তমা এক বোন দুই ভাই। দুই ভাই অটোরিকশা চালক। জায়গা-জমি বলতে কিছুই নেই। ৫ শতক জমির উপর বাড়ি ভিটা। বাবা অসুস্থ তমির উদ্দিন। মা নাজমা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান।
জানা যায়, গত বছর তার পায়ে টিউমার থেকে ক্যান্সার শুরু হলে চিকিৎসকের পরামর্শে গত( ০৪ মার্চ) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ডান পা কেটে ফেলা হয়। জীবন বাঁচাতে পা কেটে ফেলা হলেও এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন অসহায় মা নাজমা বেগম ও ভাই অটোরিকশা চালক নাঈম ইসলাম। শেষ সম্বল জমিটুকু যা ছিলো তাও বিক্রি করে তমার চিকিৎসায় শেষ হয়। আমেনা খাতুন তমা এখন চিকিৎসার অভাবে নিজ বাড়িতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।
 আমেনা খাতুনের ভাই নাঈম ইসলাম বলেন, গত এক বছর আগে আমার ছোট বোনের হাটুর নিচে একটি টিউমার ধরা পড়ে। পরে
রংপুরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান ডাঃ বিমল চন্দ্র  জানান, তমার পায়ের টিউমার  ইনফেকশন হয়ে ক্যান্সারে রূপ ধারণ করেছে। এখন তাকে বাঁচাতে হলেও তার একটি পা কেটে ফেলতে হবে। মানুষের কাছে ধার-দেনা করে টাকা সংগ্রহ করে তার একটি পা কেটে ফেলি।  এখন চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়মিত ঔষধ এবং ১০ দিন পর পর থেরাপি দিতে হবে। তা না হলে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তার ওষুধপত্র কেনার ও থেরাপি দেওয়ার টাকা আমাদের নেই তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে অর্থ সাহায্য চাচ্ছি।
আমেনা খাতুন তমা বলেন, আমার একটি পা কেটে ফেলে। এখন চিকিৎসা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু আমার বাবা-মা ও ভাইয়ের এত টাকা নেই। আমি বাঁচতে চাই। আমার চিকিৎসার জন্য সবাই সাহায্য করব।আমি আগের মত হাটতে চাই পড়াশুনা করতে চাই তাই রাবারের একটি পা খুবই প্রয়োজন তা আপনারা ব্যবস্থা করে দিবেন।
তমার মা নাজমা বেগম বলেন, টাকার অভাবে আমার মেয়ের চিকিৎসা করতে পারছি না। মেয়ে চিকিৎসার জন্য  ভিক্ষা চাচ্ছি সমাজের সবার কাছে। আমার মেয়ের যেন আগের মতো স্কুলে যেতে পারে। তার চিকিৎসা ও একটি রাবারের পা খুবই দরকার।
গড্ডিমারি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী  শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমাদের স্কুলের অদম্য মেধাবী তমার খুবই গরীব অসহায়। ক্যান্সারের কারণে তার একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে। এখন তার চিকিৎসা করার মত টাকাপয়সা নেই বলতে চলে । তাই সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।
এ বিষয়ে ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন বলেন, ক্যান্সারের কারণে এক শিক্ষার্থীর পা কেটে ফেলা হয়েছে বিষয়টি জেনেছি। তার পরিবার খুবই গরীব তার চিকিৎসা করার মতো তাদের কোন সমর্থন নেই। এ অবস্থায় তমার সুচিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
তমাকে সাহায্য পাঠাতে চাইলে তার বড় ভাই নাঈম ইসলাম যোগাযোগ ও বিকাশ নম্বর- ০১৭৩১-৩৮২১৩২।

সর্বশেষ সংবাদ