আড়াইহাজারের আলম হত্যার বিচারের দাবিতে শিশুপুত্র নিয়ে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

প্রেস বিজ্ঞপ্তি-৩০ মে ২০২৩ইং, মঙ্গলবার, সকাল: ১১ টায় ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্রাব) মিলনায়তন, সেগুনবাগিচা, ঢাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার অন্তর্গত কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের আলোর সেতু পাঠাগারে ২৭ মে ২০২০ সালে বহুল আলোচিত সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মোঃ আলম মিয়ার হত্যাকারীরা অদ্যাবধি পর্যন্ত ধরাছোয়ার বাইরে থাকায় হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে শিশু সন্তানসহ সংবাদ সম্মেলন করেন আলম মিয়ার স্ত্রী জোসনা খাতুন।

সংবাদ সম্মেলনের জোসনা খাতুন বলেন, ২৭ মে ২০২০ নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার অন্তর্গত কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের আলোর সেতু পাঠাগারে বহুল আলোচিত সন্ত্রাসী হামলায় আমার স্বামী মোঃ আলম মিয়াকে গুলি করে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। ঐ ঘটনায় আরো অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। সে সময় এলাকার ২—৩ হাজার মানুষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে এলাকায় থাকতে পারেনি। এমনকি আমার সাক্ষীরাও অনেকেই সেই হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। পরবর্তীতে আলম মিয়া যাতে চিকিৎসা নিতে না পারে সেজন্য সন্ত্রাসীরা অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাড়িঘর ঘেরাও করে রাখে। হাসপাতালে নিতে না পারায় বিনা চিকিৎসায় ১২ জুন ২০২০ তারিখে মারা যান। এরপর আমি আড়াই হাজার থানায় মামলা করতে গেলে আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানায় মামলা নেয়নি। পরবর্তীতে আমি ১৯ জুলাই ২০২০ তারিখে নারায়ণগঞ্জ কোর্টে সি,আর মামলা নং—৮০/২০ দাখিল করি। এই মামলার আসামীরা হলেন ১। মোঃ তোফাজ্জল (৩৫), ২। মাহাবুব (২৮), ৩। শাহ জালাল (২৫), ৪। মনির (২৭), ৫। আঃ সাত্তার সরকার (৩০), ৬। এমদাদুল হক (৩০), ৭। নুরুল হক @ হক্কা (৫০) ৮। দিদার (৩৫), ৯। সাইদুল্লাহ (২৫), ১০। হানিফা (৩৫), ১১। রিপন (২৮), ১২। সামছুল হক (৪৩), ১৩। ইব্রাহী @ ইব্রা (২৫), ১৪। দুলাল (৩৩), ১৫। খোয়াজ মিয়া (৫৬), ১৬। আঃ বাছেদ (৪২), ১৭। শামীম (২৫), ১৮। পরশ আলী (৩০), ১৯। রিফাত উল্লা @ রিফা (৪৮), ২০। মোনা মিয়া (৪৮), ২১। জাকির (৩০), ২২। আঃ মতিন (৩৫) সহ অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন।

তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে কোর্ট আসামী গ্রেফতার ও তদন্তের জন্য পুলিশ অফিসার তদন্ত শাখা নারায়ণগঞ্জ জেলাকে নির্দেশ দেন। মাহাবুব উর রহমান নামে একজন অফিসার তদন্ত কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তার বদলির কারণে দায়িত্ব নেন নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা (গ—অঞ্চল) এর অফিসার ইনচার্জ একেএম এনামুল কবির (বিপি নং—৬৫৯২০০৮০৮৬)। একেএম এনামুল কবির কোন আসামি গ্রেফতার না করে আমাকে এবং সাক্ষীদেরকে না ডেকে আসামীদের সাথে যোগসাজসে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করে গত ২৭/০৫/২০২১ইং তারিখে একটি মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে কবর থেকে আমার স্বামীর লাশ তুলে ময়না তদন্তের নির্দেশ দেন কিন্তু ০৩/০৯/২০২০ইং তারিখে কবর থেকে যে লাশ তোলা হয় তা আমার স্বামীর লাশ ছিল না, আমি সাথে সাথে প্রতিবাদ জানাই। কিন্তু একেএম এনামুল কবির তাতে কর্ণপাত না করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে পাঠায় এবং ঐ লাশের ময়নাতদন্ত শেষে জানা যায় আমার শ্বশুরের ঔরসজাত নয়। এ বিষয়টি তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ আছে। আমি ঐ তদন্তের বিরুদ্ধে গত ২২/০৯/২০২১ইং তারিখে একটি নারাজি দাখিল করি। যার ফলে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য সিআইডিতে দেওয়া হয়। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর আমাকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন আটকে রেখে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করে। আমি সেখান থেকে পালিয়ে এসে মামলা করি। সে কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে আছে। গত ০৮/০১/২০২৩ইং তারিখে সিআইডি নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার পুলিশ পরির্দশক মোঃ আবু তাহের খান (বিপি নং—৬৪৮৯০০৭৯৭১) আমাকে ডাকেন। আমি সেখানে গেলে একটি কাগজে সই নিয়ে চলে যেতে বলেন। পরবর্তীতে যোগাযোগ করে জানতে পারি তিনি বদলি হয়ে গেছেন। বর্তমানে যে অফিসার আছেন তিনি জানান তিনি তেমন কিছু জানেন না। আমার স্বামীর মৃত্যুর সময় আমি অন্তসত্ত্বা ছিলাম। বর্তমানে আমার বাচ্চার বয়স ২ বছর ৪ মাস। বর্তমানে আমি চরম অসহায় অবস্থায় আছি। আসামিদের ভয়ে আমি বাড়িতে যেতে পারি না। বিভিন্ন ভাবে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে।

সংবাদ সম্মেলনে জোসনা খাতুন সরকারের কাছে মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সর্বশেষ সংবাদ