লঞ্চে আগুন: ফেরিঘাটেই মেয়ের মৃত্যু, মা-ছেলে পৌঁছালেন ঢাকায়

ঝালোকাঠিতে ভয়াবহ লঞ্চ দুর্ঘটনায় মা-ছেলেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়েছে। এরা হলেন জিয়াসমিন আক্তার (২৮) ও তার ছেলে তামিম হাসান (১০)। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে তাদের ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ঢাকায় আসার পথে মাওয়া ফেরিঘাটে মারা যায় তার জিয়াসমিনের মেয়ে মাহিনুর (৬)। জিয়াসমিনের মামা মো. মামুন জানান, জেসমিন তার স্বামী সন্তান নিয়ে বরগুনা সদরে থাকেন। তার বাবার বাড়ি ঢাকার কেরানীগঞ্জের সুবাড্ডা এলাকায়। ১০-১২ দিন আগে জিয়াসমিনের নানীর মৃত্যুর খবর শুনে দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি আসে সে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে আবার সন্তানদের নিয়ে বরগুনা ফিরছিল। তখন লঞ্চে এ দুর্ঘটনার শিকার হয়। তিনি আরও জানান, দগ্ধ অবস্থায় তাদের বরিশাল মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে তাদের ৩ জনকে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছিল। পথে মাওয়া ঘাটে মেয়ে মাহিনুরের মৃত্যু হয়। তার মরদেহ কেরানীগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে আবাসিক চিকিৎসক ডা. এস এম আইউব হোসেন জানান, দু’জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের ভর্তি রাখা হয়েছে। তাদের দু’জনের হাত-পা ও মুখে আগুনে দগ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত তিনটার দিকে সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামক লঞ্চের ইঞ্জিন থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে দগ্ধ হয়েছেন বহু মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যাত্রীরা জানিয়েছেন, লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল। ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালের ঠিক আগে গাবখান সেতুর কিছু আগে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সেই আগুন পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। লঞ্চে প্রায় ৩০০ থেকে সাড়ে তিনশ যাত্রী ছিল। বহু হতাহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দগ্ধও হয়েছেন অনেকে। নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে কোস্টগার্ডের সদস্যরা।

সর্বশেষ সংবাদ