বিদ্যালয়ের কক্ষে চিরকুট লিখে প্রধান শিক্ষকের ‘আত্মহত্যা’

চাঁদপুরের একটি বিদ্যালয়ের কক্ষ থেকে রফিকুল ইসলাম নামে এক প্রধান শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে জেলা শহরের তালতলা এলাকার বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ মহীউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুর এ ঘটনা হত্যা না আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ ও পিবিআই যৌথভাবে মরদেহের পাশ থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। তবে পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করতে পারেন ওই প্রধান শিক্ষক। এসময় সেখানে থেকে কীটনাশকের বোতল এবং একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ মহীউদ্দিন জানান, নিজ হাতেই এই চিরকুটে মৃত্যুর কারণ লিখে যান রফিকুল ইসলাম। তবে তদন্তের স্বার্থে লেখার বিষয়বস্তু জানাতে চাননি এই পুলিশ কর্মকর্তা। তা জানতে হলে মৃতের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন তিনি। পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল থেকেই বিদ্যালয়ে অবস্থান করেন রফিকুল ইসলাম। তবে করোনার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সেখানে অন্য আর কোনো সহকর্মী তার সঙ্গে ছিলেন না। সকাল গড়িয়ে দুপুর তারপর বিকেল। এই দীর্ঘ সময় তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ ছিল পরিবারের। তবে মো. নাসির নামে একজন সহকারী শিক্ষক জানান, দুপুরে মুঠোফোনে প্রধান তাকে কল করে জানান, বিকেলে বিদ্যালয়ে একটু আসবেন। কিন্তু শেষ দেখা হলো, স্যারের মৃতদেহ। বিদ্যালয়ের তৃতীয়তলার একটি কক্ষে অচেতন অবস্থায় পেয়ে তাকে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাগর মজুমদার রফিকুল ইসলামকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুই মেয়ে সন্তানের বাবা রফিকুল ইসলাম মাত্র দুই বছর আগে চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদী আজিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ দেন। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শহরের নাজিরপাড়ায় চাঁদপুর পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভূঁইয়ার বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন। রফিকুল ইসলামের সহকর্মী চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি, ঘোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল বাবুল জানান, একজন নিরিবিলি প্রাকৃতিক মানুষ ছিলেন রফিকুল ইসলাম। কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন, তা বোধগম্য নয়। এদিকে, প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাবউদ্দিনসহ অসংখ্য সহকর্মী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সবশেষ, সন্ধ্যায় মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। তবে রাতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চাঁদপুর সদর মডেল থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি। থানা ভারপ্রাপ্ত আব্দুর রশিদ জানান, মামলা প্রক্রিয়াধীন।

সর্বশেষ সংবাদ