প্রেমিকাকে হত্যার চারদিন পর প্রেমিক গ্রেপ্তার

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে তরুণীকে গলা ও হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যার চারদিন পর অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। রোববার (১৯ জুন) সকালে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতাম্বরপুর গ্রামের একটি সবজিক্ষেত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চুরি, মোবাইল ও ওড়না উদ্ধার করে। এর আগে শনিবার বিকেলে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ি থেকে হত্যাকারী শাহাদাত হোসেন জীবনকে (২৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক। রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম। এসপি জানান, চলতি বছরের ২৯ মে জীবনের সাথে ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌস পাখির ফেসবুকে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামি জীবন বিবাহিত হলেও এ বিষয়ে পাখি কিছুই জানতেন না। পরবর্তীতে জীবন বিবাহিত জানতে পারলে পাখি জীবনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে আসামি তাকে এড়িয়ে যায়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার (১৫ জুন) পরস্পর যোগাযোগ করে তারা সোনাইমুড়ীর পিতাম্বরপুর গ্রামের মিনহাজি বাড়ির সংলগ্ন সবজি ক্ষেতের দক্ষিণ পাশে দেখা করেন। সেখানে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে জীবন ছুরি বের করে প্রথমে পাখির গলায় পোচ দেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত করতে জীবন পাখির গলায় উপর্যুপরি ছুরি দিয়ে আঘাত করে হাত ও পায়ের রগ কেটে দেন। গ্রেপ্তারের পর জীবন এ চাঞ্চল্যকর হত্যার বর্ণনা দিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পুলিশ জানায়, এ হত্যাকাণ্ডের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাইমুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম দেওটি ইউনিয়নের বাসিন্দা নুর নবী, স্বপন ও নবাগ উপজেলার মনির ও আবু সুফিয়ানকে আটক করেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতাম্বপুর গ্রামের দিলসাদের ছেলে ও নিহত নারীর প্রেমিক জীবনকে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে আটক করা হয়। পরে তার জবানবন্দির ভিত্তিতে আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মালামাল উদ্ধার করা হয়। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে পাখি তার বড় বোনের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাত ৮টার পর থেকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি। পরে বুধবার সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি সবজিক্ষেত থেকে পাখির গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাখির ভাই বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।