ব্র্যাকের আলু বীজ হয়নি গাছ পায়নি ক্ষতিপূরণ তানোরের কৃষকরা

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে ব্র্যাকের আলুবীজ কিনে রোপণ করে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারিত হয়েছে। এ ঘটনায় গত ২ জানুয়ারী  রোববার মোহর গ্রামের  ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও  এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এসব কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ তো পায়নি, উল্টো তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি-ধামকি দিয়ে কথিত আপোষনামায় স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। এদিকে ব্র্যাকের মতো স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানের আলুবীজ কেলেঙ্কারির খবর ছড়িয়ে পড়লে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে।অন্যদিকে অভিযুক্ত বীজ ডিলারকে আটক ও ক্ষতিপুরুণের দাবিতে কৃষকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দানা বেঁধে উঠেছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ধুরইল বাজারের ব্র্যাকের বীজ ডিলার মোর্তুজা সোনার। কিন্ত্ত অধিক মুনাফার আশায় গোপণে দীর্ঘদিন ধরে  তিনি নীতিমালা লঙ্ঘন ও চোরাপথে তানোর-গোদাগাড়ী, মান্দা এবং পবা উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় আলুবীজ ও রাসায়নিক বিক্রি করে আসছেন। এসব বীজ সার বিক্রিতে কোনো রশিদ দেয়া হয় না। জানা গেছে, ব্র্যাকের আলুবীজ ডিলার মোর্তুজা সোনার ব্র্যাকের উচ্চ ফলনশীল আলুবীজ বলে তানোর উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) মোহর গ্রামের কীটনাশক ব্যবসায়ী মেসার্স সোহান ট্রেডার্সের কাছে বিক্রি করেছেন। এদিকে মোহর, লসিরামপুর ও শুকদেবপুর গ্রামের কৃষকেরা সোহান ট্রেডার্স থেকে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে ব্র্যাকের এসব আলু বীজ (বি-গ্রেড) কিনে রোপণ করে। কিন্তু  ভেজাল ও নিম্নমাণের বীজের কারণে গাছ গজায়নি। এতে কৃষকেরা চরম বিপাকে পড়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত প্রতি বিঘা আলু চাষে কৃষকের প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,গত ৩ জানুয়ারী মঙ্গলবার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের কথা বলে তানোর পৌর এলাকার কাশেমবাজার ডেকে নেয়া হয়। পরে স্থানীয় কাউন্সিলের নেতৃত্বে ব্যবসায়ী মোর্তুজা ও দুলাল কৃষকের কাছে থেকে কৌশলে তাদের স্বাক্ষর নিয়ে আপোষনামা লিখে নিয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কৃষি কর্মকর্তার কাছে করা অভিযোগ একজন কাউন্সিলর কি আপোষরফা করতে পারেন ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কৃষক বলেন, দ্রুত ক্ষতিপূরুন না পেলে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি দিবেন। এবিষয়ে মেসার্স সোহান ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী দুলাল মন্ডল বলেন, তিনি ধুরইল বাজারের ব্র্যাকের বীজ ডিলার মোর্তুজা সোনারের দোকান থেকে এসব বীজ কিনেছেন এর দায় মোর্তুজার।কারণ তিনি ব্র্যাকের প্যাকেট রিপ্যাক করে নিম্নমানের বীজ দেয়ায় এমনটি হয়েছে বলে তিনি মনে করছেন।
তিনি বলেন, চলতি মাসের ৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার কাশিমবাজার বসে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে সমঝোতা করা হয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে ধুরইল বাজারের ব্র্যাকের বীজ ডিলার মোর্তুজা সোনার বলেন, দুলাল তার ঘরে রাসায়নিক সারের সঙ্গে আলু বীজ রাখায় এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি মোহনপুর উপজেলার ডিলার হয়ে তানোর উপজেলায় বিক্রি করেন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদোত্তর না দিয়ে কৌশলে এড়িয়ে গেছেন।এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, অভিযোগ দেওয়ার পর পুনরায় কৃষকরা উত্তোলন করে নাকি আপোষ মিমাংসা করেছেন। আপনার কাছে অভিযোগ দিয়েছে কোন ব্যবস্থা হয়েছে কি জানতে চাইলে তিনি জানান অভিযোগ তুলে নিলে আমাদের কিছুই করনীয় নাই বলে এড়িয়ে যান ।

সর্বশেষ সংবাদ