ঈদকে সামনে রেখে সারিয়াকান্দিতে খাঁচি তৈরিতে ব্যস্ত কুঠিরশিল্প পল্লীর কারিগররা

ফুলবাড়ী, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) ঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ঈদ-উল-ফিতর এর ঈদকে সামনে রেখে পৌর এলাকার হিন্দুকান্দি ও নারচী ইউনিয়নের কুপতলা গ্রামের কুঠিরশিল্প এলাকায় সবাই এখন সেমাইয়ের খাঁচি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বগুড়া শহর সহ দেশের বিভিন্ন স্থানের নামীদামী সেমাই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অর্ডার মোতাবেক সরবরাহ করা হচ্ছে এসব খাঁচি। তিন বছর পূর্বে এসব এলাকায় কারিগরদের নিপুন হাতে তৈরী করা সেমাই রাখার জন্য খাঁচি সেমাই ব্যবসায়ীদের নজরে আসে। সেমাই প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নিকট খাঁচির ব্যাপক চাহিদা থাকায় এবার রোজা শুরুর মাস খানেক পূূর্ব থেকে খাঁচির ক্রেতাদের আগমনে সরগরম হয়ে উঠছে এসব পল্লী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বহুবছর র্প্বূ থেকে বংশ পরমপরায় সারিয়াকান্দির পৌর এলাকা হিন্দুকান্দি ও নারচী ইউনিয়নে কুপতলা গ্রামে কুঠিরশিল্প পাড়া হিসাবে পরিচিত প্রায় ৫শতাধিক পরিবার এ শিল্পের সাথে জড়িত। যুগযুগ ধরে বাঁশ দিয়ে চাটাই, দরজা, ঘরের ছাঁদ, ধান রাখার ডোল, বেড়ি, হোচা, কূলা সহ রকমারী পন্য তৈরি করে আসছেন তারা। বিভিন্ন চড়াই উৎরাই পার করে তারা বংশ পরমপরায় এ পেশাকে ধরে রেখেছেন। তবে তিন বছর পূর্ব থেকে সেমাই তৈরির পর বাঁশের তৈরি খাঁচিতে সংরনে বাজারজাতে উত্তম হওয়ায় সেমাই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা এ খাঁচি ক্রয়ে আগ্রহ দেখায়। গত তিন বছরের তুলনায় এবার বেশি পরিমানে খাঁচি সেমাই প্রস্তুতকারী প্রতিষ্টানের মালিকদের নিকট থেকে অর্ডার পাওয়ায় চলতি বছর এর চাহিদা বেড়ে গেছে। কুপতলা পূর্বপাড়া এলাকার পাইকারী ব্যবসায়ী শাহিদুল ইসলাম জানান, রমজান শুরুর ১০/১২ দিন আগে সেমাই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৩৫ হাজার খাঁচি তৈরির অর্ডার পেয়েছি। এরই মধ্যে প্রায় ১৫হাজার খাঁচি সেমাই তৈরির কারখানায় সরবরাহ করা হয়েছে। আগামী ঈদের ২/৩ দিন পূর্বেই বাকি ২০ হাজার খাঁচি সরবরাহ দেয়া সম্ভব হবে। এজন্য খাঁচি তৈরির কাজে ব্যস্ততা বাড়ায় গ্রামের সবার মধ্য চাঙ্গা ভাব দেখা দিয়েছে। গতকাল শনিবার হিন্দুকান্দি শিল্পপল্লীর বাড়ী বাড়ী ঘুরে দেখা গেছে, এ কাজে বসে নেই কেউই। কেউ বাঁশ কাটা, তেমাল তোলা, বাধাই করা, থরে থরে সাজিয়ে রাখা সহ নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে সবাই হাত লাগিয়েছেন এসব কাজে । খাঁচি তৈরির কারিগররা জানান, খাঁচি তৈরির অর্ডার পাওয়ার পর তাদের খুবই ভালো লাগছে। কারণ পন্য তৈরির পর বিক্রি করা নিয়ে একটা ঝামেলা পোঁহাতে হয়। কিন্তু মহাজনেরা অগ্রিম টাকা দিয়ে এ খাঁচি নিয়ে যায়। যা আমাদের জন্য খুবই ভালো। মনজু প্রামানিকের বাড়ির খাঁচি তৈরির মহিলা কারিগর সাহেনা, আয়েনা জানান, কাক ডাকা ভোর বেলা থেকে শুরু করে বিকাল পর্যন্ত দিনে আমরা ২০/২২টি খাঁচি তৈরি করে থাকি। মহাজনদের কাছে ২৯টাকায় বিক্রি করার পর আমাদের প্রতি পিচে লাভ থাকে ৭/৮টাকা। যা আমাদের জন্য অনেক কিছু। পৌর মেয়র আলহাজ্ব টিপু সুলতান বলেন, খাঁচি তৈরির কাজে উৎসাহ দেয়ার জন্য শিল্পপল্লীর লোকজনদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করা হচ্ছে। তাদের গ্রামের রাস্তাঘাট ও মসজিদের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ