রাণীনগরে এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু

এ বাশার (চঞ্চল).রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে শালিসি বৈঠকের মাধ্যমে জোর করে কাবিননামা রেজিষ্ট্রি করে নেওয়ার পর মোবারক হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এঘটনায় রাণীনগর থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার একডালা ইউনিয়নের দিঘিরপার গ্রামের মৃত পরেশ উল্লার ছেলে মোবারক আলী ভুট্টু একই এলাকার একডালা গ্রামের মৃত তানিজ উদ্দীনের মেয়েকে বিয়ে করে দীর্ঘদিন ধরে ঘরজামাতা থেকে সংসার করে আসছিল। এর মাঝে তাদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নেয়। গত প্রায় এক বছর আগে তাদের সংসারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দন্দ-কলহের কারণে মোবারক আলী পার্শ্ববর্তী শিয়ালা গ্রামে তার বোন জড়িনার বাড়ীতে আশ্রয় নিয়ে গত প্রায় সাত মাস আগে ওই গ্রামের মৃত আলেফ উদ্দীনের বিধাবা মেয়ে দুলালী (৪৫) কে বিয়ে করে। বিয়ের প্রায় ৬ মাস অতিবাহিত হলে তাদের মধ্যেও দন্দ শুরু হয়। প্রায় দেড় মাস আগে স্থানীয় দুলাল হোসেন ও চঞ্চল হোসেন চুনুর সমঝোতায় নগদ ১০ হাজার টাকা ও ৪ মন চাল দিয়ে স্ত্রী দুলালীকে ছেড়ে চলে যায় মোবারক। এই ঘটনার জ্বের ধরে স্ত্রী দুলালী গত বুধবার দিনগত রাতে গ্রামের কতিপয় লোকজন নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকে ওই গ্রামের সাবেক মেম্বার আইজুর হক বুলবুল এর নেতৃত্বে মোবারক হোসেনকে বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রি করার চাপ প্রয়োগ করে। বৃহস্পতিবার সকালে কয়েকজন মাতাব্বরের উপস্থিতিতে কাবিন রেজিষ্ট্র সম্পূর্ন করা হলে ওই দিবাগত রাতেই রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় মোবারক আলীর।
মোবারকের স্ত্রী দুলালী জানান, গত ৭ মাস আগে তারা দুই জন এলাকার দিঘীরপার গ্রামের এক ফকিরের মাধ্যমে বিয়ে করে। কিন্তু সে সময় কাবিন রেজিষ্ট্রি ছিল না। তাই গ্রামের লোকজন ডেকে কাবিন করে নিয়েছি। বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে এক সাথে ঘুমিয়ে পরলে রাত অনুমান ১১টার দিকে সে ছট-ফট করতে থাকে। এসময় স্থানীয় লোকজনদের ডেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথি মধ্যে তিনি মারা যান। তবে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা বলতে পারেন নি স্ত্রী দুলালী।
মোবারকের বোন আলতাফুন নেছা জানান, আমার ভাই দীর্ঘ দিন ধরে আমার বাড়ীতে আছে কিন্তু আমাদেরকে না জানিয়ে আমার বাড়ী থেকে বুলবুল মেম্বারের লোকজন শালিস করার কথা বলে জোর করে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল।
এব্যাপারে অভিযুক্ত সাবেক মেম্বার বুলবুল হোসেন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ বানোয়াট দাবি করে জানান, শান্তি-শৃংখলার লক্ষ্যে আমরা একটা মিমাংসা করে দিয়েছিলাম। বৃহস্পতিবার সকালে মাত্র ৯ হাজার ৯ শ’ ৯৯ টাকা দেনমোহর ধার্য করে কাবিন রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে। তবে কিভাবে তার মৃত্য হয়েছে তা বলতে পারছি না ।
রাণীনগর থানার এসআই তরিকুল ইসলাম জানান, যদিও ইউডি মামলায় বিষ খাইয়ে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে কিন্তু বিষের তেমন কোন আলামত প্রাথমিক ভাবে মেলেনি। লাশের ডান কান ও মলদার দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। তবে কিভাবে বা কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে ময়না তদন্ত রির্পোট পেলেই তা পরিস্কার জানা যাবে। এঘটনায় রাণীনগর থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

সর্বশেষ সংবাদ