কুষ্টিয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে ৪ জনের নামে থানায় মামলা, ১জন গ্রেফতার,পলাতক ৩জন

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখি ইউনিয়নের রাতুল পাড়া গ্রামের চতুর্থ শ্রেণীর নাবালিকা মেয়েকে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগে কুষ্টিয়া মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ৪ জনের নামে মামলা দায়ের হলে তালেব সাধুর ধর্ষক ছেলে মাসুদ গ্রেফতার হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে তালেব সাধুসহ  তিনজন। মেয়ের পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় রাতেই সরল মনে খালার বাড়িতে যেত ১১ বছরের নাবালিকা মেয়েটি। সেই সুবাদে নাবালিকা মেয়েটির আপন খালাতো ভাই মাসুদ প্রায় রাতেই তার উপর যৌন নির্যাতন চালাত। নাবালিকার বুদ্ধি কম। সবকিছু ভাল বোঝে না। এই সুযোগে খালাত ভাই তার উপর প্রায় এক বছর ধরে যৌননির্যাতন চালিয়ে আসছে। অন্যদিকে খালুর ভক্ত ছেলেও তার উপর যৌন নির্যাতন চালায় বলে মেয়েটি জানিয়েছেন।জানা গেছে, এক পাড়ায় বাড়ি হওয়ায় ভাইরাভাই স্থানীয় আবু তালেব সাধুর বাড়িতে প্রায় রাতেই থাকতে পাঠাত শিশু কন্যার বাবা। আবু তালেবের কোন মেয়ে নাই এ কারনে সেই দাবী করে মেয়েকে তার বাড়িতে রাখতো। এভাবে কিছুদিন থাকার পর তালেব সাধুর যুবক ছেলে মেয়ের আপন খালাতো ভাই মাছুদ ও তার বন্ধু পান্টির মিলনের লালসার শিকার হয় মেয়েটি। ছেলে মাছুদ ও তালেব সাধুর ভক্ত ছেলে পান্টি এলাকার বাসিন্দা মিলন প্রায় ৬ মাস ধরে এই শিশু কন্যাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভিতি দেখিয়ে পালাক্রমে যৌন নির্যাতন করে আসছিল। তাদের ভয়ে মেয়েটি তার পিতা মাতার কাছে কখনো বলতে সাহস পায়নি।শিশুর মা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমার আপন বোন ও তার স্বামী আবু তালেব এবং ছেলে মাছুদ প্রায় প্রতিদিনই মেয়েকে দিনের বেলাতে ডেকে নিয়ে যেত তার বাড়ীতে বিভিন্ন কাজ কর্মের অজুহাত দেখিয়ে। তখন আমি কিছুই বুঝতে পারি নাই যে আমার বোন আমার মেয়েকে নিয়ে গিয়ে ছেলেকে দিয়ে ধর্ষন করাচ্ছে। আমি বুঝতে পারলাম গত ৫দিন আগে। কারণ গত ৪ দিন আগে সন্ধ্যার পর আমার বোনের ছেলে মাছুদ বাড়ীতে এসে বলে মা পাঠিয়েছে আজ ভাল রান্না হয়েছে ওকে খাওয়াবে তাই নিতে এসেছি এবং রাতে আমাদের ওখানে খাকবে। আমি না করি নাই কারণ আমার বোনের কোন মেয়ে নেই শুধু একটি মাত্র ছেলে মাছুদই আছে। এ বিষয়ে নাবালিকা মেয়ের সাথে সরাসরি কথা বললে তিনি বলেন, আমাকে প্রায় ৬ মাস ধরে কখনো মাছুদ কখনো খালা এসে দিনের বেলাতে আমাকে তাদের বাড়ীতে ডেকে নিয়ে যেত। খালাত ভাই মাছুদ আমাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে খারাপ কাজ করতো। খালার বাড়ীতে আসা পান্টি এলাকার মিলনও আমার সাথে খারাপ কাজ করতো। কিন্তু তার আগে আমাকে বিভিন্ন বড়ি খাওয়ায়ে দিত এ বিষয়ে আমি কিছুই বুঝতাম না। কিন্ত গত চার দিন আগে রাতে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমাকে বড়ি খাওয়ায়ে রাতভর মিলন ও মাছুদ একাধিকবার খারাপ কাজ করলে আমার শরীর খারাপ হওয়ায় সকালে খালার বাড়ী থেকে চলে এসে আমার মাকে সব খুলে বলি। মেয়ে এটাও বলে আমার খালু আবু তালেবও আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল ঐ খারাপ কাজটা করার জন্য। কিন্ত আমি রাজি হয় নি। এ বিষয়টি নিয়ে উক্ত এলাকাতে গুঞ্জন শুরু হলে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মাসুদের সাথে ওই নাবালিকার বিয়ের তোড়জোড় শুরু করেন। অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে না বসে বরং উল্টো হুমকি দিয়ে চলছিল আবু তালেবের পরিবার। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগী মেয়ের পরিবার বর্গ কুষ্টিয়া মডেল থানায় এসে ধর্ষক মাসুদ, মাসুদের পিতা আবু তালেব, মাসুদের মাতা, ও পান্টির মিলনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন উক্ত মামলা দায়েরের পরদিন কুষ্টিয়া মডেল থানা মাসুদ কে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে কিন্তু বাকি তিনজন এখনো বহাল তবিয়তে তার নিজ বাড়িতে বসবাস করছে।এ বিষয়ে গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবেদক এর কাছে বলেন সাধু আবু তালেব শুধু ওই বাচ্চা মেয়েটাকে নিয়ে ব্যবসা করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। সাধু বেশে আবু তালেব আরো একাধিক মেয়েকে তার বাড়িতে এনে তার ভক্তবৃন্দকে দিয়ে যৌন নির্যাতন করাতো তার বিনিময়ে আবু তালেব প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করে নিয়েছে। আমরা এই ভন্ড সাধু আবু তালেবের কঠোর শাস্তি দাবি করছি অচিরেই তাকে গ্রেফতার করা হোক এবং আইনের কাঠগড়ায় এনে তাদেরকে বিচার করা হোক। গ্রামবাসী এটাও বলেন আবু তালেব একজন বড় মাপের গাঁজা ব্যবসায়ী তার বাড়িতে সার্বক্ষণিকভাবে তার ভক্তরা এসে গাঁজা সেবন করতো। রাতুল পাড়া গ্রামের বাসিন্দারা আগে জানতো তালেব সাধু একজন গাঁজা ব্যবসায়ী কিন্তু এখন হাতেনাতে প্রমাণ পেল সবাই যে তিনি শুধু গাঁজা ব্যবসায়ী নয় তিনি মেয়েদের দিয়ে দৈহিক ব্যবসাও করাতো।এ বিষয়ে ভন্ড সাধু গাঁজা ব্যবসায়ী ও অনৈতিক কাজের মূল হোতা আবু তালেবের মুঠোফোনে কথা বললে তিনি সাংবাদিকদেরকে হুমকি প্রদান করেন যে, আমি আপনাদেরকে দেখে নেব আপনারা কত বড় সাংবাদিক হয়েছেন। এই ভন্ড সাধু বর্তমানে বাড়িতেই অবস্থান করছেন বীরদর্পে কিন্তু পুলিশ প্রশাসন তাকে ধরছে না কেন এই বিষয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে, গ্রামবাসীরা জানান তার সাথে রয়েছে গ্রামের কিছু মন্ডল মাতব্বর। তাদের যোগসাজসে এই ভন্ড সাধু আবু তালেব বীরদর্পে এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছেন গ্রামের মধ্যে।গ্রামবাসীদের এখন একটাই দাবি মেয়ের পিতা একজন দরিদ্র গুটো বিক্রেতা ভ্যানে করে বিভিন্ন এলাকাতে তিনি তা বিক্রি করে বেড়ান এবং বসবাস করেন সরকারি ক্যানেলের জায়গার ওপর। আমরা ভন্ড সাধু আবু তালেবের কঠোর বিচার দাবি করছি যে অচিরেই তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।বর্তমানে তালেব সাধুদের বিরুদ্ধে মামলা করাতে মেয়ে পরিবার এখন আরো বিপদের মুখে পড়েছে। মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে বলে মেয়ের পরিবার প্রতিবেদক এর কাজে জানিয়েছেন। তারা এটাও বলেন তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদেরকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য। আমরা এখন চরম বিপদের মুহূর্তে রয়েছি।

 

সর্বশেষ সংবাদ