জেলেদের ইলিশ লুট ও মারধরের ঘটনায় কোষ্টগার্ডের দুই সদস্য প্রত্যাহার!

বাগেরহাটের শরণখোলায় সুন্দরবন সংলগ্ন বলেশ্বর নদীতে কোষ্টগার্ডের (উপকূল রক্ষা বাহিনী) দুই সদস্যের বিরুদ্ধে। জেলেদের মারধর ও জোর পূর্বক ইলিশ লুট করে নেয়ার অভিযোগে সুপতি কন্টিজেন্টের দুই সদস্যকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে কোষ্টগার্ড।
পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিন চরদুয়ানী গ্রামের আলম জেলে এমাদুল হক জানান, মঙ্গলবার রাতে সুপতি কন্টিজেন্টের মোঃ কাওছার ও মোঃ ইব্রাহিম নামের দুই কোষ্টগার্ড সদস্য তার মাছ ধরা ইঞ্জিন চালিত নৌকাটি টহলের কথা বলে বলেশ্বর নদীতে নিয়ে রাত ১২ টা থেকে ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন নৌকা ও ট্রলারের লোকজনদের মারধর করে নগদ টাকাসহ ইলিশ মাছ নিয়ে আসে।
কোষ্টগার্ডের এ দুই সদস্য এ সময়ের মধ্যে পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিন চরদুয়ানী গ্রামের খলিল শিকদারের ছেলে রুবেল শিকদারের নৌকা থেকে ৮০ টি ইলিশ, মোঃ লতিফ খানের ছেলে বাবুল খানের নৌকা থেকে ৫টি ইলিশ, বেলায়েত খাঁনের ছেলে রনি খাঁনের নৌকা থেকে ১১টি ইলিশ, চাঁন মিয়া খাঁনের ছেলে রুবেল খাঁনের নৌকা থেকে ৫টি ইলিশ, হামেজ ঘরামীর ছেলে ছোরাপ ঘরামীর নৌকা থেকে ৫টি ইলিশ মাছ লুট করে নেয়। এসময় আলতাফ আকনের ছেলে আব্বাস আকনের নৌকায় মাছ না পেয়ে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। এছাড়া জেলেদের নৌকা প্রতি ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবী করেন বলে ভুক্তভোগী জেলেরা জানান।
মাছ লুটের ঘটনাটি পরেরদিন সকালে জেলেরা বন বিভাগ ও কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোনের মোংলা কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের জানান। খবর পেয়ে কোষ্ট গার্ডের একটি দল ঘটনাস্থল সুপতি কন্টিজেন্টে এসে জেলেদের কাছ থেকে শুনে ঘটনার সত্যতা জানতে পারেন। পরে তারা জেলেদের ইলিশ মাছ ফেরৎ দেন এবং কোষ্ট গার্ড সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
এদিকে জেলে এমাদুল হক ওই দুই সদস্যকে চিহ্নিত করে ঘটনাটি ফাঁস করে দিলে তাকে বেদম মারধর করে আহত করে কোষ্টগার্ড সদস্যরা। বর্তমানে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ব্যাপারে বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন জানান, মাছ লুটের ঘটনাটি জেলেরা জ্ঞানপাড়া ও চান্দেশ্বর টহলফাঁড়ির বনরক্ষীদের কাছে জানালে পরে ওই দুই টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও জেলেদের মহাজনদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন।
জানতে চাইলে কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা তার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে ইতিমধ্যে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।