করোনাকালীন গল্প নিয়ে স্পর্শহীন পথনাটক “জীবনযুদ্ধ” মঞ্চায়ন করলো পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থিয়েটার

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে নাট্যকর্মীরাও মঞ্চ ছেড়ে জনগণকে সাধ্যনুযায়ী সচেতন করতে মাঠে নেমেছে। আবার কোথাও কোথাও পৌঁছে দিয়েছে মানবিক সহায়তা উপহার। নাটক সমাজের দর্পণ। তাই যখন করোনার প্রাদুর্ভাবে সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশও যেন টালমাটাল। লোকজন শুনছে না কোন বারণ পেটের ক্ষুধায় হয়ত বের হচ্ছে ঘর থেকে। কিন্তু তারপরেও তো নিজের জন্য সমাজের সকলের জন্য কিছু সতর্কতা আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আবশ্যক। করোনার ছোবলে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ হারিয়েছে অনেক গুণী এবং মেধাবী মানুষকে। ঘরে বাইরে করোনা প্রতিরোধে তাই চাই সম্মিলিত উদ্যোগ এবং ব্যক্তিগত সচেতনতা। শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের একার পক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব নয় যদি না সবাই সচেতনতার মিছিলে যুক্ত না হই। যেহেতু দীর্ঘ লকডাউনে মানুষ বিপর্যস্থ সেহেতু সীমিত পরিসরে চলাচলের অনুমতিতে মানুষ যেন খুঁজে ফিরছে কিছুটা অবসাদ মনের ক্ষুধা মেটানোর বিনোদন। আর এমনই সব করোনাকালীন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সংকট, সমাধান ও বাস্তবক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া কিছু সামাজিক প্রতিবন্ধকতা এবং অসঙ্গতি দর্শকদের সামনে তুলে ধরতে স্পর্শহীন অভিনয়সহ আবারও মঞ্চে ফেরার পরীক্ষামূলক প্রস্তুতি চালাচ্ছে “হাতের মুঠোয় হাজার বছর, আমরা চলেছি সামনে” স্লোগানকে বক্ষে ধারণ করা বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের অন্যতম সংগঠন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থিয়েটার। আজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় দেবীগঞ্জের বিজয় চত্ত্বর প্রাঙ্গণে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে দেবীগঞ্জ থিয়েটার ওয়ার্কশপ ভিত্তিক প্রযোজনা “জীবনযুদ্ধ” মঞ্চায়ন করে। দর্শকদেরকেও তারা আহবান জানান দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরিধান করে নাটক উপভোগ করতে। ৩৫ মিনিট ব্যপ্তিকালের পথনাটকটি রচনা করেছেন দেবীগঞ্জ থিয়েটারের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক এবং নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দীপম সাহা। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ওয়াসিস আলম, নিয়াজ আহসান, সাওন রায়,পার্থ কুমার, শিমুল ইসলাম এবং খোকন ইসলাম। আবহ সঙ্গীতে ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মেনন,আব্দুল্লাহ আল মামুন,লাকু ইসলাম। পোশাক পরিকল্পনা জোবায়ের আলম, পলি রায় ও ভাষা লিজা।
অনেকদিন পর পুনরায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে এজন্য অনেকটা খুশি উপস্থিত দর্শকরা। তারা করতালির মাধ্যমে নাট্যকর্মীদের এমন প্রচেষ্টাকে অনুপ্রাণিত করেন। অনেক দর্শক পরামর্শ দিয়েছেন মানুষকে সচেতন করতে নাটকটি বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে এবং পারলে গ্রামে গ্রামে মানুষকে সচেতন করার জন্য মঞ্চায়ন করার। নাটকশেষে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে বক্তব্য রাখেন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার হিমালয়কন্যা থিয়েটারের সংগঠক নাট্যকর্মী সিজুল ইসলাম এবং অনিল চন্দ্র শর্মা। নাট্যকর্মীদের বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নাটকটির রচয়িতা দেবীগঞ্জ থিয়েটারের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক এবং নির্দেশক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দীপম সাহা।

সর্বশেষ সংবাদ