ওএমএসের অনিয়ম ঠেকাতে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরী করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

মোঃ হায়দার আলী চাঁপাই নবাবগজ্ঞ থেকে ফিরে ॥ দরিদ্র মানুষের জন্য চালু করা ওএমএসের অনিয়ম ঠেকাতে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইউএনও।  শুরু করে ছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলায় এবং সফলও হযেছিলেন।
 ‘অধিকার ওএমএস’ নামে এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একজন প্রকৃত উপকারভোগী এসএমএস এর মাধ্যমে জানতে পারবেন তার নামে কতটুকু চাল বরাদ্দ হয়েছে এবং কোনদিন দেয়া হবে। এই পদ্ধতিতে একই ব্যক্তি একাধিক বার কিংবা একজনের চাল আরেকজন উত্তোলন করতে পারবে না। এছাড়া এর মাধ্যমে ডিলার ও উপকারভোগীর সম্পর্ক বাড়বে এবং জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। দরিদ্র মানুষের চাল প্রাপ্তির নিশ্চিত হবে শত ভাগ করা যাবে বলে জানিয়েছেন নাজমুল ইসলাম সরকার। ইতোমধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর অংশ হিসেবে রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বাসুদেবপুর ইউনিয়নে প্রাথমিকভাবে ‘অধিকার ওএমএস’ কার্যক্রম পাইলটিং করা হয়। এতে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার ১৯ হাজার ৫৯ জন দরিদ্র লোক উপকারভোগী হয়।
গোদাগাড়ী উপজেলার বাসুদেবপুর ইউপি চেযারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান বেবী বলেন,  সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলাম সরকার স্যার খুব ভাল মানুষ ছিলেন, উনি অনেক কষ্ট করে অধিকার ওএমএস কার্যক্রমটি করেন গরীব দুস্ত মানুষের  উপকারে আসে কেউ অনিয়ম করার সুযোগ পান নি, সঠিক লোক সরকারের দোয়া অধিকার টূকু ভোগ করতে পেরেছেন।
অধিকার ওএমএস অনলাইন প্ল্যাটফর্ম প্রণেতা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম সরকার নতুনবার্তা ২৪.কমকে বলেন, খোলাবাজারে কম দামে চাল কেনার একমাত্র কর্মসূচী ওএমএস। এই কর্মসূচী নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ আছে। উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা দায়িত্ব গ্রহণের পর দেখলাম দরিদ্র মানুষের নিকট সরকার কর্তৃক ঘোষিত যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীটি বাস্তবায়িত হচ্ছে তা আসলে প্রকৃত সাধারণের নিকট সঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে না। আবার অনেকের নামেই কার্ড করা হয়েছে। অথচ তারা জানেনই না, বছরের পর বছর তাদের নামে চাল তোলা হচ্ছে।
এরপর ক্রমাগতভাবে যখন অভিযোগগুলো আসছিল, তখন ভাবলাম প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি ব্যবস্থা দাঁড় করাব। যাতে একজনের কার্ডের চাল আরেকজন নিতে না পারে। এ লক্ষ্যে করোনার মধ্যে সকল উদ্যোক্তাদের নিয়ে অনেক কষ্ট করে সব তথ্য সংগ্রহ করি। তিনি বলেন, আমার এলাকায় ওএমএস আওতাভুক্ত উপকারভোগীদের তালিকা অনুযায়ী প্রত্যেক ইউনিয়ন ডিলারের অবস্থান অনুযায়ী ক্যাম্পেনের আয়োজন করা হয়। ক্যাম্পেনে উপকারভোগীরা জাতীয় পরিচয় পত্র, ওএমএস কার্ড, মোবাইল নম্বর সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হয়। উপস্থিত টেকনিশিয়ান তার নামে ওএমএস কার্ড আছে কিনা সেটি মূল তালিকার সঙ্গে যাচাই করে ডাটাসমূহ সরাসরি অনলাইনে ইনপুট করে। একজন ব্যক্তির এনআইডি ও মোবাইল নম্বর সিস্টেমে একবারই ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে যা সরাসরি ন্যাশনাল ডাটা সেন্টারের সার্ভারে সংরক্ষণ করা হয়। সিস্টেমটিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক তথ্য নিবন্ধনের মাধ্যমে চাল বিতরণের ব্যবস্থা সংযোজন করা হয়। এছাড়া মাসিক রিপোর্ট, ডিলার অনুযায়ী রিপোর্ট, ইউনিয়ন অনুসারে রিপোর্টসহ অন্যান্য ফিচার প্রস্তুতি গ্রহণের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। অধিকার ওএমএস পদ্ধতিতে একই ব্যক্তি একাধিকবার কিংবা একজনের চাল আরেকজন উত্তোলন করতে পারবেন না। উপকারভোগী তার নামে বরাদ্দকৃত সরকারী চালটি সঠিকভাবে বুঝে পাবে। সে লক্ষ্যে এসএমএস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উপকারভোগীর তথ্যের মধ্যে মোবাইল নম্বরটি অত্যাবশ্যক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ