প্রদীপ সাহা,সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: শিক্ষক সংকটের কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গেপড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে সাপাহার উপজেলা সদরের নারী শিক্ষার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষক সংকঠ লেগেই রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীদের কলরবে এক সময় জমজমাট ও সরগরোম বিদ্যালয়টি এখন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের অবকাঠামো বাহিরের আধিক্য অতীতের তুলনায় বাড়লেও শিক্ষার জৌলস শিক্ষার্থীর উপস্থিতি প্রায় জিরো কোঠায় ঠেকতে চলেছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ১০ জন শিক্ষকের পদের বিপরীতে কর্মরত শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৪ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের পাঠ দান। এ ছাড়া একসময় যেখানে সাড়ে ৮শত শিক্ষার্থীর কলরবে মুখরিত হয়ে থাকত পুরো বিদ্যালয় ক্যাম্পাস বর্তমানে সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৪০ জনে।
জানা গেছে, অতীতে এলাকায় নারী শিক্ষায় ব্রতী হয়ে নারী শিক্ষার প্রসার ঘটানোর জন্য এলাকার শিক্ষানুরাগী প্রবীণ ব্যক্তি আলহাজ্ব ডাঃ তাহের উদ্দীন আহম্মেদ ১৯৭৩ সালে উপজেলা সদরে এক খন্ড জমির উপর একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এর পর বিদ্যালয়টি এলাকায় প্রথম নারী শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় দিন দিন শিক্ষার্থী সংখ্যা বাড়তেই থাকে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ও শিক্ষার গুনগত মান বিশেষ করে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসাইন মুহাম্মাদ এইচ এম এরশাদ গত ১৯৮৮ ইং সালে সাপাহারে রাষ্ট্রীয় এক সফরে এসে বিদ্যালয়টিকে সরকারী ঘোষনা করেন সে হতে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি
এলাকায় নারী শিক্ষায় এক অগ্রণী ভূমিকা রেখে আসছে।
সারা জেলায় হাতে গোনা দু’একটি সরকারী বিদ্যালয়ের মধ্যে সাপাহার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় একটি। বিদ্যালয়টি শুরু থেকে বেশ সুনাম ও জাঁক জমকের সাথে পরিচালিত হয়ে আসলেও দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে চরম শিক্ষক সংকটে ভুগছে এমন কি ইংরেজী ও গণিত বিষয়ে নেই কোন শিক্ষক এবং এগার বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে শূন্য রয়েছে গণিত শিক্ষকের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকট লেগে থাকায় অভিভাবকগণ তাদের মেয়েদের আর ওই বিদ্যালয়ে ভর্তি করছেন না।
এ বিষয়ে সদ্য যোগদানকৃত ভার-প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.আমিনুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান,শিক্ষক সংকটের কারণে সমস্যা তো আছেই তবে সাপাহারের মানুষ শিক্ষানুরাগী হলেও সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মত গুরুত্বপূর্র্ণ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের খবরদারী একটু হলেও কম এবং শিক্ষক বদলী ঠেকাতে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ, অভিভাবক কিংবা এলাকার কোন শিক্ষানুরাগী মহলের তৎপরতা না থাকায় এখানে কোন শিক্ষক যোগদান করার পর কয়েক দিনের মধ্যে অন্যত্র বদলী হয়ে চলে যায়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানায়-ইংরেজি এবং গণিতের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিক্ষক না থাকায়
তারা হতাশ ও দূশ্চিন্তায় দিন পার করছেন এবং ভাল ফলাফলের জন্য খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে তাদের পড়ালেখার চাহিদাও মিটছেনা।
বর্তমানে ৬জন খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে চলছে সুনামধন্য নারী শিক্ষার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ সাপাহার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।