ঢাকাসহ সারাদেশে বিজিবি মোতায়েন

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (২৬ মার্চ) রাতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে মাঠে থেকে দায়িত্ব পালন করবেন তারা।
বিজিবির পরিচালক অপারেশন লে. কর্ণেল ফয়জুর রহমান জানান, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে পুরনো পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশে শনিবার (২৭ মার্চ) বিক্ষোভ ও রোববার (২৮ মার্চ) হরতালের ঘোষণা দেয় হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুর রব ইউসুফী।
ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেতা-কর্মী ও প্রতিবাদী মুসল্লিদের হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে মূলত এই বিক্ষোভ ও হরতালের ঘোষণা দেওয়া হয়।
দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে মুসল্লিদের একাংশের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুঁড়ে। জলকামানও ব্যবহার করা হয়।
এরপরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশি কয়েকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়াও। শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা সদরের বিভিন্নস্থানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধরা। বিক্ষোভের ঘটনায় আশিক (২০) নামে এক তরুণ নিহত হন।
এ ঘটনায় শনিবার (২৭ মার্চ) দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং রোববার (২৮ মার্চ) হরতালের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এ অবস্থায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে নিহত যারা
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হেফাজতের মোদিবিরোধী মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে যে চারজন নিহত হয়েছেন তারা হলেন- রবিউল ইসলাম (২৩), মেরাজুল ইসলাম (২২) মিরাজুল ইসলাম, জামিল (২০) ও মিজান (৪০)। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

হাটহাজারীতে সংঘর্ষে হেফাজতের ৪ জনের মৃত্যু
আহতদের মধ্যে ইব্রাহিম খলিল (২৫), ইমরান হোসেন (২৪), ইমাম উদ্দিন (২২), বেলাল হোসেন (২২) ও সাইফুল ইসলাম (২৪) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। সংঘর্ষে চার পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। তবে তাদের নাম জানা যায়নি।
এএসআই আলাউদ্দিন জানান, নিহতদের মধ্যে তিনজন মাদরাসাছাত্র ও একজন ঘটনাস্থলের পাশেই দর্জির দোকানে কাজ করতেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিহত ১
চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে বিক্ষোভে উত্তাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিহত তরুণের নাম আশিক (২০)। তিনি জেলা শহরের দাতিয়ারা এলাকার সাগর মিয়ার ছেলে। শুক্রবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে বিক্ষুব্ধ মাদরাসাছাত্ররা জেলা শহরের কাউতলি এলাকায় পুলিশ সুপারের কার্যালয় এবং ২নং পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করে। এ সময় পুলিশ শটগানের গুলি ছুড়ে। এ ঘটনায় আশিক এবং পুলিশ পরিদর্শক নূরে আলমসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। পরে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর আশিককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় পুলিশ পরিদর্শক নূরে আলমকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ