নানা হয়রানি ও ভোগান্তির পাশাপাশি মাসের পর মাস অপেক্ষা করে প্রকৃত এনআইডি না পেলেও মাত্র দুই মিনিটে জাল এনআইডি তৈরি করে দিচ্ছে একটি চক্র। সাধারণ মানুষের মতো রোহিঙ্গা এবং বিভিন্ন অপরাধীরাও এই জাল এনআইডি ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত তিন দিনে জাল এনআইডি চক্রের তিন সদস্যকে আটকের পাশাপাশি চলতি বছর অন্তত ১৫ জনকে আইনের আওতায় এনেছে র্যাব। চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে এনআইডি কার্ড পেতে সাধারণ মানুষের ভিড়। মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও কাঙ্ক্ষিত এনআইডি কার্ড পাচ্ছেন না তারা। কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী নানা তথ্য প্রমাণের কাগজ জমা দিতে দিতে হয়রান সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে মাত্র দুই মিনিটে জাল এনআইডি তৈরি করে দিচ্ছে জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। নগরজুড়েই সদস্যরা সক্রিয় রয়েছে। ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকার বিনিময়ে তৈরি করে দিচ্ছে চকচকে এনআইডি কার্ড। একজন ভুক্তভোগী বলেন, প্রায় ৪-৫ মাস ধরে এনআইডির ফর্মটা জমা নিচ্ছে না। একবার বলে, এটা নিয়ে আসেন, আবার বলে, ওটা নিয়ে আসেন, শেষ পর্যন্ত আরেকটা কাগজ নিয়ে আসতে বললো ওটা নিয়ে আসলাম তখন আর কেউ (কর্মকর্তা) নেই। র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক ফ্লাইট লে. নিয়াম মোহাম্মদ চপল বলেন, এনআইডি চক্রের সদস্যরা মূলত বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানগুলোতে বসে থাকে এবং লোক বুঝে তাদের চাহিদা মোতাবেক দুই মিনিটে তারা নতুন ভুয়া কার্ড তৈরি করে দেই। বলাবাহুল্য যে এই এনআইডি গুলো তারা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে। সেই জায়গাগুলোতে তারা এগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের থেকে আড়ালে চলে যাচ্ছে। এদিকে র্যাবের আলাদা তিনটি অভিযানে আটক করা হয়েছে এই চক্রের তিন সদস্যকে। জব্দ করা হয়েছে জাল এনআইডি তৈরির নানা সরঞ্জাম। র্যাবের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসছে, প্রকৃত এনআইডি কার্ড না পেয়ে জরুরী কাজ সম্পন্ন করার জন্য যেমন সাধারণ মানুষ এই জাল এনআইডি তৈরি করে নিচ্ছে। তেমনি বিভিন্ন অপরাধী এবং রোহিঙ্গারাও ঝুঁকছে এই জাল এনআইডির দিকে। র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, তারা টেকনিক্যালি এগুলো তৈরি করছে। আমরা দেখেছি তারা বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেটে অথবা ভিপিএন ব্যবহার করে মাত্র দুই মিনিটে ভুয়া নতুন এনআইডি তৈরি করছে। শুধু এনআইডি না বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভুয়া সনদ এগুলোও তারা তৈরি করছে। সাধারণ মানুষের হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তার দাবি, জাল এনআইডির কোনো তথ্য কেন্দ্রীয় ডাটা ব্যাংকে থাকবে না। চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে এনআইডি করার পরে এটা সেন্ট্রাল ডাটাবেজে পাঠায়, সেখান থেকে ম্যাচিং হয়ে তারপরে কিন্তু ফাইনাল ডাটাবেজের উপস্থিত হয় এবং ফাইনাল যাচাই-বাছাই পরেই কিন্তু ওই নাগরিককে আমরা স্মার্ট কার্ড দিয়ে থাকি। তাই যেখানে অরিজিনাল ডাটাবেজ আছে সেখানে ভুয়া এনআইডি প্রিন্ট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর আগে, রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড পাইয়ে দেওয়াসহ নানা অনিয়ম এবং অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের স্থায়ী-অস্থায়ী অন্তত ৮ জন কর্মকর্তাকে আটক করেছিলো দুদক এবং কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। এ সংক্রন্ত ৫টির বেশি মামলা বর্তমানে তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে।
চট্টগ্রামে ভুয়া এনআইডি চক্রের সদস্য আটক
December 27, 2021
20 Views
You may also like
সর্বশেষ সংবাদ
সারিয়াকান্দিতে থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ৫
3 months ago
শোক সংবাদঃ নৈশ্য প্রহরী শাহজাহান আলীর ইন্তেকাল
3 months ago
কাজিটুলা থেকে বৃদ্ধ নিখোঁজ; ১৯ দিনেও মেলেনি খোঁজ
3 months ago