কেশরহাট পৌরসভার উন্নয়ন ফাইলে আছে বাস্তবে নাই

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত নির্বাচনের আগে প্রায় ৩ কোটি টাকার বরাদ্দ পান রাজশাহীর কেশরহাট পৌরসভার মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা শহিদ। শুধু এই ৩ কোটি না আরও কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ ফাইলে থাকলেও বাস্তবে নাই বলেও মনে করেন সচেতন পৌরবাসী। আবার মেয়রের এসব নিয়ে কেউ কথা বলতেও সাহস পায় না। এভাবেই পৌরসভাকে অনিয়ম দুর্নীতির আতুর ঘরে পরিনত করেছেন মেয়র ও প্রকৌশলী। শুধু তাই না দেশে প্রকৌশলীর এতই অভাব দীর্ঘদিন ধরে দুই পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করছেন সরদার জাহাঙ্গীর। তিনি দূর্নীতির গুরুদেব বলেও প্রচার রয়েছে। জানা গেছে, বিগত ২০১৬ সালে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন নৌকা প্রতীক নিয়ে শহিদুজ্জামান শহিদ। পুনরায় ২০২১ সালেও তিনি মেয়র হন। ভাগ্য বদল হয়ে যায় মেয়র শহিদের। এক প্রকল্প একাধিকবার দেখিয়ে লুটপাট করেই চলেছেন। কেশরহাট পৌরসভার জনগনের ভাগ্য বদল হয়নি। অথচ কাড়িকাড়ি টাকার নামে বে নামে সম্পদ করেছেন অঢেল। বেশকিছু পৌর নাগরিক রা জানান, জনগনের ভোটে মেয়র হলে জনতার কথা চিন্তা করত। কিন্তু তিনিতো এমপির আশীর্বাদের মেয়র।এজন্য সবাই মিলে লুটেপুটে খাচ্ছে। পৌরসভায় কত প্রকার বরাদ্দ আছে তা কেউ জানেনা। এক নবাগত মেয়র জানান পৌরসভা এক ভয়াবহ অনিয়ম দুর্নীতির জায়গা। কারন বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা ছাড় করতে মন্ত্রণালয়ে আগাম দিতে হয় ২০/২৫ পারসেন্ট ঘুষ। পৌরসভায় পৌছতে যায় কিছু।যে ঠিকাদারের কাছ থেকে আগাম টাকা নিয়ে প্রকল্প আনা হয়েছে তিনি তো আরো নিবেন এটাই স্বাভাবিক। আবার পৌর সচিব, প্রকৌশলী, হিসাব রক্ষক, কার্যসহকারী, এক কোথায় ধাপেধাপে টাকা দিয়ে যে ২০/৩০ পারসেন্ট থাকে তা মেয়র ও তদন্ত কর্তাবাবুরাই পেয়ে থাকেন। কাজ না হোক ফাইল ওকে তদন্ত এলে টাকা মারো সব হালাল। আর এজন্যই পৌরসভার উন্নয়ন হয় না। শুধু অনিয়ম আর অনিয়ম। গত পৌর নির্বাচনের আগেই ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার মেয়র শহিদুজ্জামান শহিদ। মেয়র শহিদ এই ৩ কোটি টাকা দিয়ে রাস্তার কাজ করেছেন। সামনে আরো ২ কোটি টাকার পানি নিষ্কাশনের বরাদ্দ পাবেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়াও আরো ৩ কোটি টাকার প্রজেক্ট দাখিল করেছেন মেয়র শহিদ। যা স্থানীয় সংসদ সদস্যের নের্তৃত্বে চলমান রয়েছে। পৌর এলাকার ব্রিজ-কালভার্ট কয়েকটি আবেদনে সাংসদ সুপারিশ করেছেন। যা ইঞ্জিনিয়ার দেখভাল করছেন। সামনে পাশ হয়ে যাবে। পৌরবাসীর উন্নয়নে কোটি কোটি টাকার বরাদ্দের কাজ আসলেও সেই কাজ গুলো চোখে দেখতে পাচ্ছেন না পৌরবাসী। অথচ পৌরসভার উন্নয়নে আশা কোটি কোটি টাকার বরাদ্দের কথা শুনলেও গাঁ মাথা ঘুরে দিশেহারা হয়ে পড়বেন পৌরবাসী। সম্প্রতি,আলোচিত স্থানীয় রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাংসদ আয়েন উদ্দিন এমপিকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করে দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিক সমকাল ও ডিবিসি নিউজ টেলিভিশন চ্যানেল। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) অখ্যাত একটি ফেসবুক পেজ থেকে লাইভে এসে তিনি সেসব সংবাদকে মিথ্যা, বানোয়াট দাবি করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পৌর মেয়র। লাইভ চলাকালীন সময়ে তিনি তার পৌরসভার কি কি উন্নয়ন করেছেন সাংসদ আয়েন উদ্দিন এমপির নেতৃত্বে সেসব কথা তুলে ধরেন। লাইভে এসে মেয়র শহিদুজ্জামান শহিদ তার পৌরসভা নিয়ে যে-সব তথ্য তুলে ধরেছেন তা ভিডিও বার্তায় জেনে স্থানীয় জনগণ হতবাগ হয়েছেন। কারন কথার সাথে বাস্তবতার তিল পরিমাণ মিল খুজে পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। তার এমন অবাস্তব কথা এখন মিথ্যার ফুলঝুরি ছাড়া কিছুই না বলে মনে করছেন পৌর নাগরিকরা। তিনি একটি রাস্তাকে বারবার দেখিয়ে বরাদ্দ এনে নিজেই খেয়েছেন। আবার সেই বরাদ্দ আনতে বাজেটের অর্ধেকই ঘুষের খাতায় দেখিয়েছেন। বাকি অর্ধেক দিয়ে তিনি নিজের পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে একই রাস্তা বারবার করেছেন। তবুও ১ টি রাস্তাও এখনো চলাচলের উপযোগী করতে পারেননি তিনি। স্থানীয়দের মন্তব্যের অনুসন্ধানে দেখা যায়, পৌর এলাকার প্রতিটি রাস্তায় ভাঙ্গাচোরা জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব রাস্তাগুলো বছরে দুবার করে সংস্কার কাজ করা হলেও তা নাম মাত্রই পাকা রাস্তা। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, ঠিকাদার নাম মাত্র রাস্তা তৈরির যে কাজ করেন তা মুরগীর ঠোকে উঠে যায়। যখনই স্থানীয়রা ভালো কাজ করার দাবি করেন তখনই তারা কাজ বন্ধ করে চলে যায়। কিছুদিন পরে আবার এসে নিম্নমানের কাজ শুরু করে। এভাবেই বছরের পর বছর চলে যায় কিন্তু রাস্তার কাজ আর সম্পুর্ন হয়না। এটাকে চরম দুর্নীতি বলে দাবি করেন এলাকাবাসী। সচেতন পৌর বাসী মনে করেন এমপি আয়েন উদ্দিনের আশির্বাদ যার উপর পড়েছে তাকে আর পিছু তাকাতে হয়নি।তিনি শুধু তরতর করে সামনে উঠে গেছেন।যেমন এমপি আয়েন উদ্দিন কৃষকের জমি কেড়ে জলসা ঘর ও তার একান্ত যাদুতে বিল হয়েছে ব্যক্তি মালিকানা পুকুর। ঠিক তেমনি ভাবে মেয়র শহিদও সব কিছু লুটে নিচ্ছেন। এই দূর্নীতির মুল হোতা সহকারী প্রকৌশলী সরদার জাহাঙ্গীর। তিনি একজন সহকারী প্রকৌশলী হয়ে কার কলগার্ল নিয়ে ইচ্ছে মত অফিস করেন। তিনি এতই পারদর্শী যে কেশরহাট পৌরসভা ছাড়াও তানোর পৌরসভার সচিব ও সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ করে এসবের অনুসন্ধান করা হোক। তাহলেই মেয়র শহিদের উন্নয়নের আসল রুপ বেরিয়ে আসবে। এমনকি আসল চেহারাও উন্মোচন বলেও ধারনা সচেতন পৌরবাসীর। উল্লেখ্য, স্থানীয় সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন এমপিকে জড়িয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় এমপির অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে এমপির পক্ষে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছান। যা পাঠকের হাসির খোরাক যোগাতে সহযোগিতা করছে। সেই সাথে তাঁদেরও অনিয়ম গুলো উঠে আসছে। কারন সত্য সত্যই একে মিথ্যা দিয়ে কখনো ঢাকা যায় না। তবে মেয়র শহিদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমার প্রতিপক্ষরা রাজনৈতিক ভাবে হেয় করতে অপপ্রচার শুরু করেছেন। কেশরহাট পৌরসভা মোহনপুর উপজেলার মধ্যে বানিজ্যিক এলাকা। কেশরহাটের আয় দিয়েই চলে পৌরসভা। কিন্তু হাটের কোন উন্নয়ন হয়নি। অথচ টেক্সের বোঝা দিনের দিন বাড়লেও নাগরিক সেবার মান বাড়েনি এতটুকুও। এমনকি মেয়র অনুসারী ও সাবের কাউন্সিলর নামের ব্যক্তি হাটের কোটি কোটি টাকার জায়গা দখল নিয়ে মার্কেট সহ নানা ভাবে বানিজ্য করছেন বলেও অহরহ অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও মোহনপুর উপজেলার ধূরইল ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনও এমপির সাফাই গেয়ে নিন্দা জানিয়েছেন। এই দেলোয়ারের বিরুদ্ধেও খাস পুকুর জলাশয় দখলেরও অভিযোগ রয়েছে। ওই উপজেলার বেশকিছু ত্যাগী নেতারা জানান, এখনতো মোহনপুরে আওয়ামী লীগ নেই, আছে এমপি ও শ্যালক দোলা ভাই লীগ। একজন আইন প্রনেতার বিরুদ্ধে যে ভাবে অভিযোগ উঠেছে এটা অত্যান্ত দুঃখজনক। তারা যা করছেন করেছেন সবকিছু দিবা রাত্রির মত পরিস্কার। এসব করে সাময়িক ভাবে সফলতা পেলেও অতীত কি হবে বলা কষ্টকর। কারন পাপ বাবকেও ছাড়েনা। আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দাবি করব এসব নিয়ে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্হা করা সময়ের দাবি হয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ