আদমদীঘিতে সহপাঠী হত্যার বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ

আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ “ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ফারজানার খুনিদের ফাঁসি চাই” ফারজানার সহপাঠীদের এমন আবেগঘন শ্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত ছাতিয়ান গ্রাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সান্তাহার-আক্কেলপুর সড়ক। সহপাঠী হারানোর বেদনায় শোকাগত হয়ে শোককে শক্তিতে পরিনত করে দ্বিতীয় দিনের মতো আজো রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে।
গত ১৭ আগস্ট আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়নের অন্তর্গত হারদাম গ্রামের ফেরদৌস আলীর মেয়ে ছাতিয়ান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ফারজানা আক্তার (১৪) পারিবারিক ভাবে সৎ মা ও সৎ ভাইয়ের যোগসাজশে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু বরণ করে। পুলিশ সৎ ভাইকে গ্রেফতার করতে পারলেও কয়েক দিন পার হয়ে গেছে উক্ত ঘটনার মূল হোতা তার সৎ মাকে আজ অবধি গ্রেফতার করতে পারেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ান গ্রাম ইউনিয়নের হারদাম গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস আলী স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করছিলো। তার স্ত্রী কয়েক বছর আগে কাজের জন্য সৌদি আরবে গেলে স্বামী ফেরদৌস প্রথম স্ত্রী প্রবাসে থাকা অবস্থায় অন্যত্র আবার বিবাহ করে। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর অন্য পক্ষের একজন ছেলে ছিলো। সেই ছেলে প্রায়শই তার মায়ের সাথে দেখা করতে এসে মায়ের সাথে থাকতো। ফেরদৌসের প্রথম স্ত্রী তার বড়ো ছেলেকে কাজের জন্য সৌদি আরবে নিয়ে গিয়ে নিজে দেশে ফিরে আসে। তারপর স্বামী ফেরদৌসকে তালাক দিয়ে নতুন করে আবার বিবাহ করে। বিবাহের কয়েক মাস পর তার দ্বিতীয় স্বামীকে তালাক দিয়ে পুনরায় প্রথম স্বামী ফেরদৌসকে বিবাহ করে মায়ের বাড়িতে অবস্থান করেন। কিন্তু তার পক্ষের মেয়ে ও ছোটো ছেলে স্বামীর সাথে থাকতো। কিন্তু ফারজানার সৎ মা ফারজানা এবং তার ছোটো ভাইকে একদম সহ্য করতে পারতো না। এরই প্রেক্ষিতে ফারজানার সৎ মা ও সৎ ভাই চক্রান্ত করে ফারজানাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে ঘরের আড়ের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। উক্ত ঘটনার খবর পেয়ে আদমদিঘী থানা পুলিশ এসে ফারজানার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। সুরতহাল প্রতিবেদনে শরীর বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ফারজানা হত্যার ঘটনায় জরিত বাকি আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে তার সহপাঠীরা গত দুদিন ধরে প্লেকার্ড হাতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে যাচ্ছে। আর তারই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে সহপাঠীরা সান্তাহার-আক্কেলপুর সড়ক প্রায় তিন ঘন্টা যাবৎ অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা তাদের অবরোধ তুলে নেয়। সহপাঠীর হত্যার ঘটনায় অকাল মৃত্যু তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না।  উক্ত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আদমদিঘী থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম রেজা বলেন, সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে তৎক্ষনাৎ ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের সহপাঠী হত্যার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে তারা তাদের অবরোধ  তুলে নেয়।

সর্বশেষ সংবাদ