এক্সটেনশনের জন্য মরিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিতর্কিত প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান

প্রেস রিলিজ-জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সমগ্রদেশে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন খাতে হত দরিদ্রদের মাঝে ১৯৬৩ সাল হতে সুনামের সহিত সেবা দিয়ে আসছেন। অত্র অধিদপ্তরে হঠাৎ কোন ক্ষমতার জোড়ে ০৭/০৯/২০১৭ সালে সহকারী প্রকৌশলী ০৭/১২/২০১৭ সালে নির্বাহী প্রকৌশলী, ২৬/০৭/২০১৮ সালে তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী, ০৮/০৮/২০১৮ সালে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এবং ০৪/১১/২০১৮ সালে মোঃ দেলোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে টপকিয়ে তিনি প্রধান প্রকৌশলী হন। সাইফুরের পিতা প্রয়াত আজিজুর রহমান জামাত নেতা সোবাহান মাওলানা ও মতিউর রহমান নিজামীসহ মতি মিয়ার আস্থাভাজন ছিলেন। তার নিজ জেলা পাবনার ঈশ্বরদীতে। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তিনি বিএনপিপন্থীদের নিয়ে গ্রুপ তৈরি করে আওয়ামীপন্থীদের চরম চাপে রাখেন।
১৪ আগস্ট ২০২০ বঙ্গবন্ধুসহ বীর শহীদদের স্মরনে দোয়া মাহফিলের ব্যানার টাঙ্গাতে বাধা দেন। ১৫ আগস্ট ২০২০ জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্তর্ভূক্ত সংগঠন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধুসহ স্বপরিবারের ছবি সম্বলিত ব্যানার অপসারন করেন। এই নিয়ে নেতৃবৃন্দরা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়কে ম্যানেজ করে বেঁচে যান। বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তিনি যশোর জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী (চঃদাঃ) থাকাকালীন সময় হতে ঘুষ ও দূর্নীতির কারণে জাইকা তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করেন কিন্তু সেখান থেকেও তিনি রক্ষা পান অর্থের বিনিময়ে। অর্থের বিনিময়ে টিউবওয়েল বরাদ্দ, প্রাইমারী স্কুলে ওয়াশব্লক না করে বিল উত্তোলন, সময় বর্ধিত করন, মনোনীত ঠিকাদারদের অর্থের বিনিময়ে কাজ দেওয়া, সিএস এ ২%, তহবিল বরাদ্দের ২%-২১/২%, বিলে ২%, অধিদপ্তরে সকল প্রকল্পের এভাবে সিএস পাশে ২%-৩%,  ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর নিয়োগে ১০-১৫ লক্ষ টাকা, কর্মকর্তাদের বদলী ২০-৩০ লক্ষ, ২য় শ্রেণী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বদলীতে ২-৩ লক্ষ এবং প্রকল্প পরিচালক পদে নিয়োগে ৫০ লক্ষ থেকে ২ কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি করে প্রায় ১০০০-১৫০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এই সাইফুর রহমান প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে। তিনি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের অনুষ্ঠান নিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করে অনুষ্ঠানকে বানচাল করার জন্য সবোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করতেন। আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তিনি সব সময় বিভিন্ন বদলী ও সাময়িক বরখাস্ত করার ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজের বসে রাখতেন এমনি আওয়ামী তিনজন কর্মকর্তাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত করিয়েছেন।
যে সমস্ত কর্মকর্তা তার কথা শুনতোনা তাদের স্ত্রীর ফোনে মিথ্যা তথ্য দিয়ে স্ত্রী দিয়ে অভিযোগ দায় করিয়ে অধিদপ্তরে দুইজন আওয়ামী কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বসে আনতেন। অনিয়ম, দূর্নীতি ও অর্থের গরমে তিনি আবার ও ১০ই ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে তার আগেই বঙ্গবন্ধুর ছবি ভবনের প্রবেশ পথের পিলার হতে ও শেখ রাসেল চত্ত¡র অপসারন করেন। তিনি ভেবেছিল খালেদা ও তারেক জিয়া দেশ চালাবে কিন্তু আওয়ামী নেতারা তার চক্রান্ত ধরে ফেলে এবং এ নিয়ে বিএনপি পন্থীরা তার ঈশারায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জনসম্মুখে বিভিন্ন কটুক্তি করতে থাকলে আওয়ামী পন্থীদের সাথে বিভিন্ন বাকদ্বন্দে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়। তিনি বিচার না করে তালবাহানা করছে বলে জানা যায়।
সাইফুর রহমান বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে সম্পুন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে কোটা অনুযায়ী পদ না থাকলেও ৭৭ জন উপসহকারী প্রকৌশলীকে  সহকারী প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্বে মন্ত্রণালয় হতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। মোট সহকারী প্রকৌশলী পদ সংখ্যা ২৩৫ টি, অস্থায়ী পদ ৯৬ টি মোট ৩৩১ টি। তার মধ্যে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী হতে এক তৃতীয়াংশ ১১১টি পদ পান। প্রথম জিওতে ১৫১ জন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীকে সহকারী প্রকৌশলী চলতি দায়িত্ব প্রদান করেন। যোগদান করেন ১৪৮ টি অতিরিক্ত ৩৭ টি পদে এমনিতে কোটার বাহিরে পদায়ন করেছেন। মন্ত্রণালয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল চাকুরী রীতিমালা বহির্ভূতভাবে আর ৭৭ জন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীকে সহকারী প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব প্রদানের প্রজ্ঞাপন জারি করান। সেই প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় দুজনকে এক স্থানে পদায়ন করেছেন এবং যেখানে সহকারী প্রকৌশলীর পদ নেই সেখানেও পদায়ন করে প্রমান করেছেন নিময়নীতি বড় বিষয় নয়, অর্থের বিনিময়ে সব করা যায়।
অন্য দিকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে তার শেষ কার্যদিবস অথচ নিয়ম অনুযায়ী চাকুরি শেষ হওয়ার ৩ মাস আগে না-দাবী-নামা ও ১ মাস আগে পিআরএল এর জন্য আবেদন করতে হয় কিন্তু জানা যায় তিনি সরকারের বড় বড় মহলে বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে ২ বছর এক্সটেনশন (চুক্তিভিত্তিক) নিয়োগের জন্য মরিয়া হয়ে দৌড়া দৌড়ি করছেন। এবিষয়ে অধিদপ্তরে খোজ নিয়ে জানা যায় তিনি বিভিন্ন মহলে তার ২ বছর মেয়াদ চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ হয়েছে বলে প্রচার চালাচ্ছেন। এমনকি ভার্চূয়াল মিটিং এ তিনি ৬৪ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীদের নির্দেশনা দেন সব টেন্ডার ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য, তা না হলে ফেব্রুয়ারীতে তিনি তহবিল বরাদ্দ দিতে পারবেন না। এ সমস্ত কথা প্রচার করে সকলকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছেন।
অধিদপ্তরের অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই দূর্নীতিবাজ, ঘুষখোর বদমেজাজীর এক্সটেনশন হলে স্বেচ্ছায় চাকুরি ছেড়ে চলে যাবেন বলে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। তারা মাননীয় মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় বরাবর এই দূর্নীতিবাজ প্রধান প্রকৌশলীর এক্সটেনশন যাতে না হয় তার প্রতিবাদ জানাবেন বলে জানা যায়।
অন্য দিকে এই দূর্নীতিবাজ, ঘুষখোর প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মাননীয় মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় বরাবর সাইফুর রহমানের গোপনে বিয়ে করা স্ত্রী মোসাঃ কানিজ ফাতেমা, পিতা মোঃ আলমগীর চোকদার, পূর্ব নাওডোবা, চোকদার কান্দি, জাজিরা, শরীতপুর তার শিশু কন্যার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে সরকারি পেনশন নীতিমালা মোতাবেক সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রাপ্য অধিকার প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেন।
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ ও বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের ও জাতীয় শ্রমীকলীগের অন্তর্ভূক্ত সংগঠনের নেতাদের কাছে দূর্নীতিবাজ সাইফুর রহমানের এক্সটেনশন বিষয়ে জানতে চাইলে নেতৃবৃন্দরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে তার সুযোগ্য কন্যা দেশ রতœ জননেত্রী শেখ হাসিনা “যেখানে দিন রাত দেশের মানুষকে ডাল-ভাত, অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের সুব্যবস্থাসহ দেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসাবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাড় করানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, সেই দেশে বিএনপি জামায়াত পন্থী দূর্নীতিবাজ, ঘুষখোর সাইফুর রহমানের চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ কখনও তা কাম্য নয় এবং তা প্রতিহত করার জন্য জীবন দিতেও দ্বিধাবোধ করবেন না বলে জানিয়েছে। এই নিয়ে  জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সকল সংগঠনের নেত্রবৃন্দ এই প্রধান প্রকৌশলীর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিপক্ষে মাননীয় মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়  ও সচিব বরাবর নেতৃবৃন্দরা যৌথ স্বাক্ষরে আবেদন করেন। এমনকি যদি দূনীতিবাজ প্রধান প্রকৌশলীর এক্সটেনশন হয় তা বিহত আন্দোলনের মাধ্যমে তা প্রতিহত করা হবে।

সর্বশেষ সংবাদ