বগুড়ায় জুতা সেলাই করে লেখাপড়ার খরচ চালায় শ্যামল

বগুড়া : নেই সরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও জুতা সেলাই কাজের পাশাপাশি স্কুলে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র শ্যামল রবিদাস। সরকারিভাবে শিক্ষাবৃত্তি এমনকি কোনো ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা পাইনি এই স্কুলছাত্র। দিনমজুরের ঘরে জন্ম নেয়া এই শ্যামল রবিদাসের স্বপ্ন পড়ালেখা শিখে সরকারি চাকুরি করবে। সেই ইচ্ছা শক্তি অটুট রেখে স্কুলের ফাঁকে জুতা সেলাই কাজ করে লেখাপড়ার খরচসহ সংসারে হাল ধরেছে শ্যামল রবিদাস। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে লেখাপড়ায় এগিয়ে যেতে পারে এই স্কুলছাত্র।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের কড়িতলা গ্রামের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র শ্যামল রবিদাস। পড়াশুনার পাশাপাশি কড়িতলা বাজারে রীতিমতো জুতা সেলাই করে লেখাপাড়ার পাশাপাশি পরিবারের খরচ যোগাতে সাহায়ক ভূমিকা পালন করছে। সে সারিয়াকান্দির নওখিলা পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের (ক) শাখার ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র। বাবা কার্তিক রবিদাস ১ জন দিনমজুর হওয়ায় দুই ছেলে মেয়েকে পড়াশুনা করাতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি। ছোট বোন প্রিয়াও ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী। তাই এই অভাবের সংসারে পড়ালেখার খরচের সাথে সংসারের দায়ভার কাধে নিয়েছেন সংখ্যালঘু পরিবারে শিশু শ্যামল রবিদাস। উপজেলার ১১ হাজার ৮শত ১১ জন শিক্ষার্থী শিক্ষাবৃত্তি পেলেও এখন পর্যন্ত কোন শিক্ষা বৃত্তি না পাওয়ার কথা জানান শ্যামল রবিদাস। শ্যামল জানায়, আমরা দুই ভাই বোন পড়াশুনা করি। আমার বাবা একজন দিন মজুর, নিজেদের জায়গা জমি নেই। নদী ভাঙ্গার পর নানা বাড়ীতে আমরা আশ্রয় নিয়েছি। আমি জুতা সেলাই করে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা রোজগার করি, কোন দিন কমও হয়। আমি পড়াশুনা করে সরকারি চাকুরি করতে চাই। আমি এই মহুর্তে সরকারি সহযোগীতা পেলে আমার পড়াশুনার পাশাপাশি আমার পরিবারে অনেক উপকার হবে। যোগায্গো করা হলে নওখিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, শ্যামল রবিদাস পড়াশুনায় খুব ভালো। তার শিক্ষাবৃত্তি পাওয়ার ব্যাপারে আমি চেষ্টা করছি। খুব শিঘ্রই সে শিক্ষাবৃত্তির অর্ন্তভুক্ত হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ গোলাম ছাদেক বলেন, শিক্ষাবৃত্তির বিষয়টি এলজিইডি কর্তৃক পিএমটি পদ্ধতিতে বাছায় করা হয়। এখানে কেউ বাদ পড়লে আমাদের কিছিই করার থাকে না। শিক্ষাবৃত্তির প্রয়োজন শ্যামল রবিদাসের মতো এমন অনেক শিক্ষার্থী এখনো এই কার্যক্রমের বাহিরে রয়েছে।

 

 

সর্বশেষ সংবাদ