শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের লক্ষ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি

মোঃ হায়দার আলীঃ বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান) এর উদ্যোগে শিক্ষক কর্মচারীর ৭ দফা দাবী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকায় এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
১৯ মার্চ, রবিবার সকাল ১১ টার সময় জাতীয় প্রেসক্লাবে  অনুষ্ঠিত এ সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ এম.এ. আউয়াল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে বক্তব্য উপস্থাপনা করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিসেস বিলকিস জামান। লিখিত বক্তব্যে বিলকিস জামান বলেন  শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য  দূরীকরণের লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ, পূর্ণাঙ্গ বাড়িভাড়া, উৎসব ভাতা ও চিকিৎসাভাতা প্রদান, বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেলের অনুরুপ বেতন স্কেল নির্ধারণ, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদেরকে অবসর সুবিধাবোর্ডে ও কল্যাণ ট্যাস্টের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা প্রদানের পরিবর্তে পূর্ণাঙ্গ পেনশন চালুকরণসহ ৭ দফা দাবী পেশ করেন।
৩০ মার্চ সকাল ১১ টায় জেলা সদরে ১ ঘন্টা মানববন্ধন, ৬  এপ্রিল জেলা সদরে শিক্ষক কর্মচারি সমাবেশ ও সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী নিকট স্মারকলিপি প্রদান, ৬ মে ২০২৩ ইং সকাল ১০ টার সময় প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষককর্মচারি সমাবেশ।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সহঃ সাধারন সম্পদক ও অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য শাহে আলম, মিসেস হাসিনা পারভীন,  বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি এম.এন. রিদওয়ান ফেরদৌস, সহঃ সভাপতি মোঃ সফিকুল ইসলাম, সহঃ সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।
এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহাজোটের উদ্যােগে বেসরকারি শিক্ষকদের   চাকুরী জাতীয়করণের জন্য অবস্থান কর্মসূচী অব্যাহতভাবে পালন করছেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে সারা দেশের লাখ লাখ  শিক্ষক-কর্মচারী লাগাতার ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস বর্জন করছেন। অন্যদিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চলছে আমরণ অনশন কর্মসূচি এবং আন্দোলনকারীরা বলেছেন, দাবি-দাওয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
 কখনও বা অনশন ধর্মঘটের মতো চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করে সেগুলো পালন করা হচ্ছে।    বেসরকারি যেসব শিক্ষক-কর্মচারী এখনও জাতীয়করণের আওতায় আসেননি, তাদের আর্থিক দুর্দশার বিষয়টি না বোঝার কথা নয়। কিন্তু জাতীয়করণের দাবি পূরণের জন্য আন্দোলনের যে সময়টি তারা বেছে নিয়েছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আশা করব, যারা এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের কথা ভেবে তারা এই সময়কে আন্দোলনের বাইরে রাখবেন। বেসরকারি শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের একজন মুখপাত্র বলেছেন, মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে এবং তিনি জাতীয়করণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজ চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের আলোচনা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন, আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে এমন নির্দেশনা দেবেন, যা আন্দোলনের শিক্ষক-কর্মচারীদের উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক হবে। প্রেস ক্লাবের সামনে ২৪ দিন ধরে যে আমরণ অনশন চলছে, সেখানে ইতিমধ্যে ১২০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ ধর্মঘট চলতে থাকলে আরও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়বেন, সন্দেহ নেই। তাই অবিলম্বে সংকটটির সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, আন্দোলনকারীদের সমস্যাটি মানবিক কারণে সহৃদয়তার সঙ্গে বিবেচনা করুন। পাঁচ লাখ আন্দোলনকারীর জীবন স্বচ্ছন্দময় হয়ে উঠতে পারে। তারা তো ছাত্রছাত্রী পড়াচ্ছেনই। তাদের শ্রম ও মেধার মূল্যায়ন করা রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।

সর্বশেষ সংবাদ