নন্দীগ্রামে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়ায় কৃষক-খামারিদের মাঝে আতঙ্ক 

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক মাসে উপজেলার বিভিন্ন স্থান হতে অর্ধশতাধিক গরু মারা যাবার খবর পাওয়া গেছে। লাম্পি স্কিন রোগের কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে উপজেলার কৃষক-খামারিরা। তবে এ রোগ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর হতে বিভিন্ন হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করে লাম্পি স্কিন রোগ সম্পর্কে জনসাধারণকে সতর্ক করা হচ্ছে। লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুগুলোকে মশারি টাঙ্গিয়ে রাখাসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
সরেজমিনে উপজেলার দোহার, বুড়ইল, নন্দীগ্রাম সদর, কালিকাপুর, হাটুয়া, আলাইপুর, চাকলমা, হাটকড়ইসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষক-খামারিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের গরুর শরীরে ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দিয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীর হঠাৎ গরম হয়ে যায়। গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছোট আঁচিলের মতো ফুলে ওঠে। তা আস্তে আস্তে বড় হয়ে যায়। এক পর্যায়ে চামড়া উঠে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এ রোগে আক্রান্ত গরু খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়। চিকিৎসা করেও তেমন প্রতিকার পাচ্ছেন না গরু পালনকারী কৃষক ও খামারিরা। লাম্পি স্কিন আক্রান্ত অনেক গরু মারা যাচ্ছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের চাকলমা গ্রামের তারেক মাহমুদ জানান, আমার ৫টি গরুর মধ্যে ২টি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়। ১টি গরু এ রোগে মারা গেছে। লাম্পি স্কিন রোগে গরু খুব কষ্ট পায়। চিকিৎসা করেও কোনো লাভ হয়নি।
বুড়ইল ইউনিয়নের দোহার গ্রামের কৃষক কৃষ্ণ চন্দ্র বলেন, আমার একটি ১০ দিনের বাছুরসহ ৫টি গরু অজানা এ রোগে আক্রান্ত হয়। গরুর গায়ে হঠাৎ করে টিউমারের মতো গুটি গুটি কী যেনো বের হয়। তারপরে জ্বর এলো। এরপর থেকেই গরু খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিয়ে শুধু ঝিম ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। পশু চিকিৎসকের চিকিৎসাও নেওয়া হচ্ছে। তবুও গুটি ফেটে বড় গরুর গায়ে এখন ঘা বের হয়েছে। আর বাছুরটা মনে হয় বাঁচবে না।
নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার কালিকাপুর গ্রামের রুবেল হোসেন বলেন, ভাই প্রায় ২ মাস হলো এই গরুটা নিয়ে ভুগছি। গরুর কষ্ট দেখলে ভালো লাগেনা। এখন একটু খাওয়া ধরেছে, ঘাগুলো শুকাতে শুরু করেছে। তবে এখনও গরু দাঁড়াতে পারছে না। তিনজন পশু চিকিৎসককে গরু দেখাই। কোনো চিকিৎসা দিয়ে কাজ হয়নি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কল্পনা রাণী রায় বলেন, লাম্পি স্কিন একটি ভাইরাসজনিত রোগ। বর্ষা মৌসুমে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। বিশেষ করে মশা ও মাছির কামড়ে এ ভাইরাস পশুকে সংক্রমিত করে। গবাদি পশু লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হলে জ্বরের ঔষধ ছাড়া তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। আমরা বিভিন্ন হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করে লাম্পি স্কিন রোগ সম্পর্কে জনসাধারণকে সতর্ক করে দিচ্ছি।

সর্বশেষ সংবাদ