দাবি পুরণের আশ্বাসে বুড়িমারী স্থলবন্দরে কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা 

জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট-দাবি পূরণের আশ্বাসে কাজে ফিরেছেন লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরের শ্রমিকরা। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, কাস্টমস প্রতিনিধিদের সাথে যৌথ বৈঠকে শ্রমিকদের যাবতীয় দাবি পূরণে আশ্বাস দেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই লোড -আনলোড কাজ শুরু করেছেন শ্রমিকরা। এতে অচলাবস্থা কেটে গিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বন্দরের আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। তবে ফল আমদানিকারক ব্যাবসায়ীরা ইতিমধ্যে লোকসানের মুখে পড়েছেন।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে বুড়িমারী স্থলবন্দর পরিদর্শন ও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে মতবিনিময় শেষে, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী, স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ,  জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলামসহ কাস্টম কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেন শ্রমিক নেতা ও আন্দোলনকারীরা।

বৈঠক শেষে কোন সিদ্ধান্ত না জানালেও রাতে শ্রমিকরা কাজে ফেরার ঘোষণা দেন। সেই মোতাবেক সকাল থেকেই লোড আনলোড কাজ শুরু করেছেন তারা।

গত ১২ সেপ্টেম্বর হতে বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে ৫ দিন ধরে পণ্য ওঠানামার কাজ বন্ধ রাখে শ্রমিকেরা। গত ১২ সেপ্টেম্বর শ্রমিকদের মজুরীর টাকা না দেওয়া ও সাধারণ শ্রমিকদেরকে কাজের সিরিয়াল দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রমিক ও সরদার গ্রপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল মারে, এতে ১৫ জন আহত হয়।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন থেকেই নিয়মিত মজুরি পাচ্ছেন না তারা। এর পাশাপাশি মজুরি না বাড়ায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে শ্রমিক পরিবারগুলো। এ অবস্থায় শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেও সমাধান না পেয়ে আন্দোলনের পথ বেছে নেন তারা।

শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতি ৩ বছর পরপর সংগঠনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম থাকলেও ২০০৯ সালের পরে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। ফলে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে দুর্নীতি করে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন অনেক শ্রমিকনেতা।’‌ লোড-আনলোডের ক্ষেত্রে ১ টাকা করে সংগঠনের শ্রমিকদের চিকিৎসা বাবদ রাখা হলেও এ পর্যন্ত কোন শ্রমিক সে সুবিধা পায়নি।’

শ্রমিক মাজিজুল ইসলামের ভাষ্য, ‘কোনো সর্দারের বয়স বেশি হলে বা কেউ মৃত্যুবরণ করলে তাদের সন্তানকেই সর্দার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, যা নিয়মের বাইরে।’

তবে বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সফর উদ্দিদের দাবি, শ্রমিকনেতারা দুর্নীতি করেন না। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের দাবি অনুয়ায়ী মজুরি বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

সর্বশেষ সংবাদ