শর্তযুক্ত সংলাপে আগ্রহ নেই: ওবায়দুল কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে আগে শর্ত প্রত্যাহার করতে হবে। আর শর্তযুক্ত সংলাপে আওয়ামী লীগের আগ্রহ নেই। রোববার (১৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যদি শর্ত প্রত্যাহার করে তখন আমরা চিন্তাভাবনা করে দেখব। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুসারে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ,তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগে যে দাবি বিএনপি করেছে, তা বাস্তবায়ন অসম্ভব। প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন, নির্বাচনকালীন সরকার দেয়া দরকার সেটা তার এখতিয়ার, বলেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে সংলাপ বিষয়ে কোনো কথাই হয়নি। এখন তারা সংলাপের কথা বলার কে? যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রায়াস এখনও বিদ্যমান রয়েছে বলেও জানান তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার হতে পারে; প্রধানমন্ত্রী মনে করলে মন্ত্রিপরিষদ ছোট হতে পারে। তিনি মনে করলে এখন যেভাবে আছে মন্ত্রিপরিষদ তেমনও থাকতে পারে। তবে এর সিদ্ধান্ত হবে নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার পর। বিএনপি যদি শর্ত থেকে সরে আসে তাহলে তাদের সঙ্গে সংলাপে বসার চিন্তাভাবনা করবে আওয়ামী লীগ এ কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা বলছে তাদের শর্ত আছে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চায়, সংসদের বিলুপ্তি চায়, তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় সেটা তাদের প্রথম শর্ত। তারা নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগও চায়। আমরা তো সংলাপের চিন্তা করব তখন যখন তারা এ চারটি শর্ত যদি প্রত্যাহার করে নেবে। সংলাপ হলে শর্ত কিসের? শর্তযুক্ত কোনো সংলাপের ব্যাপারে আমাদের কোনো চিন্তাভাবনা নেই। অন্যান্য যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এগুলোতে আমরা সবাই একমত। নির্বাচন সম্পৃক্ত অন্যান্য যে বিষয়গুলো আছে যেমন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডসহ, নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে করা সেখানে তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই যোগ করেন মন্ত্রী। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এখানে নির্বাচনকালীন পরিবেশ তারপর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, পলিটিক্যাল পার্টি হিসেবে অংশগ্রহণকারী দলের যে সুযোগ সুবিধা, সে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। আমাদের প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে কার সঙ্গে আলোচনা করবে? রাষ্ট্রপতি আলোচনা করতে চেয়েছেন সেই আলোচনাও তারা বাতিল করেছেন। নির্বাচন কমিশনের সাথে পরপর তারা (বিএনপি) দুইবার আলোচনার প্রস্তাব খারিজ করেছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সংবিধানে নির্বাচনের বিষয়ে যেভাবে বিধি-বিধান আছে, সেগুলো মেনে আমরা নির্বাচন করব। দুনিয়ার অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, আমরা ঠিক সেভাবেই নির্বাচন করব। মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বলেছে যে, আপসহীন রাজনৈতিক মানসিকতা থেকে বের হতে হবে। এটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটা বাধা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপসহীনতা তো আসে শর্ত থেকে। আপনি আমার সাথে সংলাপ করবেন। এখন নির্বাচনের ব্যাপারে আপনি বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হবে। আপনি বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার। যা সম্ভব না। বিএনপির চাওয়া সংসদের বিলুপ্তি। এখানে আপসহীনতা কোথায়? তারা শর্ত দিয়েছে, আমরা তো কোনো শর্ত দিইনি। আমাদের শর্ত হচ্ছে শর্তমুক্ত হতে হবে। অনেক দেশেই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়। যারা আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেন, তারাও গণতন্ত্রের প্রবক্তা বলে নিজেদের দাবি করেন। আমরা নিজেদের সংবিধান অনুসারে নির্বাচন করব। এতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এ ব্যাপারে জাতির কাছে আমাদের অঙ্গীকার আছে-বলেন ওবায়দুল কাদের। মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের কাছে আমরা অঙ্গীকার করব কেন? তারা কারা? তারা বন্ধু হিসেবে এসেছে, যৌক্তিক বিষয়গুলো নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। কিন্তু তাদের কথামতো আমাদের নির্বাচন করতে হবে কেন? আমাদের নিজেদেরই নিয়ম ও বিধিবিধান আছে। আমরা নির্বাচন করবো, বন্ধু দেশ হিসেবে তাদের দেখার ব্যাপার আছে-দেখবে পর্যবেক্ষণ করবে।

সর্বশেষ সংবাদ