পল্লবীতে অভিনব প্রন্থায় বেপরোয়া মাদক কারবার

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর পল্লবী থানা এলাকায় অভিনব ভিন্ন ভিন্ন পন্থায় মাদক ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে ব্যবসা পরিচালনা করছে। পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়গুলো জেনেও ঝামেলার ভয়ে এড়িয়ে চলার অভিযোগ উঠেছে।
মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন নিবন্ধনহীন অনলাইন পত্রিকা ও মানবাধিকার সংগঠনের কার্ড ব্যবহার করে পল্লবীতে মাদক বাণিজ্য চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
রাজধানীর চিহ্নিত মাদক কারবারী মিসেস শাহিনুর আহমেদ। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ২ হাজার পিস ইয়ারার মামলা।মোহাম্মদপুর থানায় পুলিশের উপর হামলার মামলা।
জাবিনে বের হয়ে বাসা পরিবর্তন করে চলে এসেছে পল্লবী থানার সামনে স্বপ্ন সগর এলাকার ৫ নং বিল্ডিংয়ে। এখানে আসার পূর্বেই সম্পর্ক গড়ে তুলে
নিবন্ধনহীন অনলাইন দেশ প্রান্তর নামে একটি পত্রিকার প্রকাশক পরিচয়দানকারী ব্যক্তি জীবনের সাথে। “ আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন” নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের পরিচালকও পরিচয় দেয় জীবন।
সরেজমিনে দেখা যায় “ আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন” এর অফিস খুলে এবং তাদের সহযোগী সংগঠন হিসেবে দৈনিক দেশ প্রান্তর ( অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টাল)’র নাম ব্যবহার করে সে আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে।
ওই অফিসে যেয়ে দেখা যায়, মানবাধিকার সংগঠন ও পত্রিকার কোনো সাইনবোর্ড বাইরে প্রদর্শন করা হয়নি। যা আছে সব রুমের ভিতরে । ওই রুমে প্রবেশ করতেই দেখা যায় অনিবন্ধিত অনলাইন পোর্টালের প্রকাশক এস.এম. জীবন রুমের বামপাশে তার টেবিলে ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছেন, অনুপাশে একই কায়দায় ডানদিকের টেবিলে ল্যাপটপ সামনে নিয়ে বসে আছেন ইয়াবা কন্যা শাহিনূর আহাম্মেদ (৪৩)। রাজধানীর বহুল আলোচিত এই মাদক কারবারী ইয়াবা কন্যা শাহিনূর ইতোপূর্বে বেশ কয়েকবার পুলিশী অভিযানে গ্রেফতার হন বলে জানা যায় এবং তার নামে মাদক মামলায় চার্জশিটও দেয় পুলিশ। কারামুক্তির পর ফিরে এসে সে আবারো মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পরে বলে অভিযোগ রয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিচরণ
শেষে গত একবছর যাবৎ এই ইয়াবা কন্যা রাজধানীর পল্লবীতে ঘাঁটি করে মাদক বাণিজ্য চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইতোমধ্যে পল্লবীর কিছু চিহ্নিত মাদক কারবারীদের সাথে তাকে আড়ালে-আবডালে গোপন মিটিং করতে দেখা গেছে। শুধু ইয়াবা কন্যা শাহিনূরই নয়।বড় কোন মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের আটক করলেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। তাদের নিজস্ব উকিলের মাধ্যমে অভিযোগ তৈরী করে। এতে পুলিশ সদস্যরা নানা হয়রানীর শিকার হয়। এই হয়রানী থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ এখন বড় মাদক ব্যবসায়ীদের এড়িয়ে যায়। এছাড়াও মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে রয়েছে কিছু বিহারী নেতার সখ্যতা। এক্ষেত্রে কোন মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করলেই বিহারী নেতারা তাদের অনুগতদের দিয়ে পুলিশের উপর আক্রমণ, পুলিশের বিরুদ্ধে মিছিল-মিটিং করায়। সর্বশেষ এই বছর ২৫ জুলাই পল্লবী থানার এসআই জহির এক মাদক ব্যবসায়ীর বাসায় অভিযান চালায়। এই সময় আত্নহত্যা করে মাদক ব্যবসায়ীর মেয়ে। এরপর থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করতে গেলেই আত্নহত্যার হুমকী দেয়। ফলে পুলিশ ঝামেলা
এড়াতে মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করা কমিয়ে দিয়েছে। পল্লবী থানার সম্প্রতিক মামলার পরিসখ্যানে বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

এ বিষয়ে পল্লবী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, ডিএমপি কমিশনার স্যারের নির্দেশে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজসহ সকল অসামাজিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের চলমান অভিযান আরও বেগবান করা হয়েছে। অপরাধী যত শক্তিশালিই হোক না কেনো কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবেনা।

উল্লেখিত মানবাধিকার সংগঠন প্রসঙ্গে সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক এই প্রতিবেদককে বলেন, পল্লবীতে “ আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন” এর কোনো অফিস খোলার জন্য কাউকে লিখিত অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তাছাড়া এমন কোনো বিষয় অবগত নয়, মাদক ব্যবসায়ী হয়ে থাকলে এবং তার প্রমাণ থেকে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ