গোদাগাড়ীতে সিনর্জেনটার ‘ভিরতাকো’ বিষ প্রয়োগ করে লাভ হয়নি- দাবী কৃষকদের

শামসুজ্জোহা বাবু,গোদাগাড়ী প্রতিনিধিঃ গোদাগাড়ী উপজেলার কেশবপুর এলাকায়  এই মৌসুমে প্রায় ৩৬০ হেক্টার জমিতে  ইরি-বোরোর চাষ হয়। কেশবপুর নিমতলা গ্রামের আকবর আলী  বর্গা নেওয়া জমিতে ধানের চারা রোপণ করেছিলেন। এরপর যথা নিয়মে জমির ধানের পরিচর্যা করতে থাকেন,কিন্তু দিন যায় মাস যায় জমির ধানগাছ বাড়তে থাকে। কিছুদিন পরে জমিতে ধানের গাছের গোড়া কাটতে থাকে মাঝরা পোকা এই পোকা দমন করার জন্য বাজার থেকে সিনর্জেন্টা  কোম্পানির ‘ভিরতাকো’ নামের বিষ কিনে  জমিতে স্প্রে করেন তিনি। তারপরেও  কাজ হয়নি পোকা দমনে। ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা  ধানগাছগুলো লালচে আকার ধারণ করে এবং মরতে থাকে । আবার যেগুলো দাঁড়িয়ে আছে, সেগুলোও যেন দুর্বল প্রকৃতির হয়ে আছে। এই অবস্থায় ধানগাছ বাঁচাতে একের পর এক সারসহ নানা পরিচর্যা করে চলেছেন কৃষক আকবর। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হচ্ছে না বরং অন্য কোম্পানীর বিষ ব্যবহার করে ধান গাছগুলো কালো মিশমিশে হয়ে ধানের দানা তৈরীর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে  । একই এলাকার কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন,অন্য বছরের তুলনায় এবার পোকার ধরন আলাদা তবে সিনজেন্টা   কোম্পানির ‘ভিরতাকো’ বিষ ব্যবহার করার পর কাজ না হহওয়ায় কোম্পানীর লোকদের অভিযোগ দিলে তারা বলেন এই বিষে এ পোকা মারা সম্ভব না।  সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শুধু এই কৃষকেরই নয়, এবার চলতি মৌসুমের ইরি-বোরোর জমিতে মাঝরা পোকা দমনের জন্য সিনজেন্টা  কোম্পানির ‘ভিরতাকো’ নামক  বিষ প্রয়োগ করে গোদাগাড়ী উপজেলার শতাধিক কৃষকের অন্তত ৩৬০ হেক্টর জমির ধান প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। ধানগাছগুলোর এমন দশা হয়ে আছে যে, আশা অনুযায়ী ফলন একেবারেই কম হবে। গত মৌসুমে যে খরচ করে বা এই বিষ বব্যবহার করে বিঘা প্রতি গড়ে ২০ মণ ধান ঘরে তুলেন কৃষকেরা কিন্তু এবার বেশী খরচ বা এই বিষ ব্যবাহার করে বিঘা প্রতি ১৫ মণ ধান ঘরে তুলতে পারবে কি না সন্দেহ আছে। এই বিষে কাজ না হওয়ায় অন্য কোম্পানীর বিষ ব্যবহারে যেমন খরচ বেশী তেমন ফলনও কম হবে। এই অবস্থায় দিশাহীন হয়ে পড়েছেন ধানচাষিরা।

গোদাগাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার কেশবপুর ব্লকে ৩৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। সিনর্জেন্টা  কোম্পানির ‘ভিরতাকো’ বব্যবহারে যে কোন ধরনের ক্ষতি হয়েছে তা কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি কিন্তু মাঝরা পোকা দমনে আমরা বিষ প্রয়োগ করতে নিষেধ করি কারণ পার্চিং ( জমিতে গাছের ডাল রাখা)  পদ্ধতি প্রয়োগ করলে এই পোকা দমন করা সম্ভব। তবে এখুন আমরা জানলাম খোজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। এ প্রসঙ্গে সিনজেন্টা বাংলাদেশ লিমিটেডের   সেলস এন্ড প্রমোশন অফিসার বশির আহম্মেদ বলেন, অনান্য বছরের তুলনায় এবার পোকার ধরন আলাদা তাই এই বিষে এ ধরনের পোকা মারা সম্ভব না।  আমরা কৃষদের মাঝ থেকে অভিযোগ পেয়েছি আমরা আমাদের কোম্পানীর কর্মকর্তাদের জানিয়েছি তারা ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। এবং আমার জানামতে আগামী ২০২১ সালের আগে এই পোকা দমনের আমাদের কোম্পানীর বিষ বাজারে আসবে না। তবে আমরা কৃষকদের বলেছি এই ধরনের মাঝরা পোকা এই বিষে দমন করা সম্ভব না।

সর্বশেষ সংবাদ