সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা ননী গোপাল ও তার স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় আ’লীগ নেতা সহ আটক ৫ ॥ ৩দিনের রিমান্ড

সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধিঃ নাটোরের সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা ননী গোপাল কুন্ডু ও তার স্ত্রী চিত্রা রানী কুন্ডুকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় নিহতের শ্যালক গোবিন্দ কুন্ডু বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে রবিবার বিকেলে সিংড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক কালু সহ ৫জনকে আটক করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান মুন্নির আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আটককৃতরা হলেন, উপজেলার কলম ইউনিয়নের পার শাঐল গ্রামের সিরাজুল হকের ছেলে কলম ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক কালু (৪০), গোলাপ সরদারের ছেলে মনতাজ আলী (৪০), আঃ ছালামের ছেলে আঃ খালেক (৪২), লালচাঁদ ফকিরের ছেলে শামসুল হক (৪০) ও মনিরুদ্দিনের ছেলে মকবুল হোসেন (৪০)।
উল্লেখ্য, সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের শাঐল শাহপাড়া গ্রামে চারচালা টিনের ঘরে স্বস্ত্রীক বসবাস করতেন মুক্তিযোদ্ধা ননী গোপাল কুন্ডু। গত ১২ জুলাই রাতের কোন এক সময় নিজ বাড়িতেই দুবৃত্তদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন ননী গোপাল কুন্ডু ও তার স্ত্রী চিত্রা রানী কুন্ড। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের বাইরে বাড়ীর উঠানে নলকুপপের পাশে মুখের ভিতরে কাপড় গুজা অবস্থায় পড়ে রয়েছে ননী গোপাল কুন্ডুর স্ত্রী চিত্রা কুন্ডুর লাশ। অপরদিকে দরজা খোলা ঘরে খাটের ওপর তোষক চাপা অবস্থায় মুখটা হা করানো নিহত ননী গোপাল কুন্ডের লাশ। ঘরের মেঝেতে সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, আসবাবপত্র ও কাগজপত্রাদির ছড়াছড়ি। স্থানীয়দের ধারনা রাতের কোন এক সময়ে তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।মুক্তিযোদ্ধা ননী গোপাল ও তার স্ত্রীর হত্যাকান্ডের সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে বলে স্থানীয়দের আশস্ব করেন, জেলা প্রশাসক মশিউর রহমান, নাটোর জেলা পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখার্জী। এছাড়াও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, ইউএনও সালমা খাতুন, সহকারী কমিশনার ভূমি জাহিদুল ইসলাম, এএসপি সার্কেল রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট ওহিদুর রহমান শেখ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুল ওয়াদুদ দুদু ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মইনুল হক চুনু সহ সিআইডির একটি টিম।
সিংড়া থানা পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। লাশ ময়না তদন্ত পর স্থানীয় গ্রামে রবিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান শেষে তাদের দাহ করা হয়।
এঘটনার নিহতের শ্যালক গোবিন্দ কুন্ডু বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে ওইদিন বিকেলেই সিংড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার পর রাতে পার শাঐল গ্রাম থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয় ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক কালু সহ মকবুল হোসেন, মনতাজ আলী, আব্দুল খালেক ও শামসুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। ৫জনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের বেশ কিছু তথ্য পাওয়ার পর আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার দুপুরে তাদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান মুন্নির আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সর্বশেষ সংবাদ