ভেজা প্রকৃতির অনন্য রুপ বর্ষার চলনবিল

এ,এইচ খোকন চলনবিল প্রতিনিধিঃ পাবনা, নাটোর,  ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিস্তৃত ৯টি উপজেলার অংশ জুড়ে যে জলাভূমি, বর্ষা এবং বর্ষা পরবর্তী সময়ে দেখা যায় সেটাই বিখ্যাত চলনবিল। শুস্ক মৌসুমে এসব বিলে পানি থাকে না। তখন চাষাবাদ চলে বিলের জমিতে। তবে বর্ষায় কানায় কানায় পানিতে পরিপূর্ণ থাকে। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলনবিল ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। আসলে চলনবিল অনেকগুলো ছোট ছোট বিলের সমষ্টি। বর্ষায় এই বিলগুলোতে জলপ্রবাহ বেড়ে একসঙ্গে বিশাল এক বিলের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ, তাড়াশ, উল্লাপড়া, শাহাজাদপুর, পাবনা জেলার চাটমোহর,ভাঙ্গুঁড়া,এবং নাটোর জেলার গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম, নলডাঙ্গা, সিংড়া উপজেলা জুড়ে এ বিলের বিস্তৃতি। বিলের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্ত পাবনা জেলার নুন নগরের কাছে অষ্টমনীষা পর্যন্ত বিস্তৃত। এর প্রশস্ত তম দিকটি উত্তর-পূর্ব কোনাকুনি। নাটোরের গুরুদাসপুর থেকে গুমানী পাড়ের কচিকাটা পর্যন্ত এ বিলের সবচেয়ে বড় অংশ, যা প্রায় চব্বিশ কিলোমিটার দীর্ঘ। নাটোরের গুরুদাসপুর, সিংড়ার পূর্বপ্রান্ত থেকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ভদাই নদীর পূর্ব পাড় পর্যন্ত বিলের পূর্ব সীমানা। চলনবিলের সবচেয়ে বড় অংশ পড়েছে নাটোরের সিংড়া,গুরুদাসপুর, নলডাঙ্গা উপজেলায়। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, উল্লাপড়া, শাহাজাদপুর ও তাড়াশ উপজেলার বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে চলনবিলের অংশ বিশেষ। চলনবিলের বেশ কয়েকটি বিল পড়েছে এ উপজেলায়। সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে বনপাড়া সড়কে প্রবেশ করলে কিছু দূর যাওয়ার পর চলনবিলের যে অংশের দেখা মিলবে সেটাও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মধ্যে। এখান থেকে দক্ষিণ দিকের পুরো অংশটাই এই জেলার অন্তর্গত চলনবিল। পাবনার চলনবিল চাটমোহর উপজেলা সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চলনবিলের অংশ। গাজনা, বড়, সোনাপাতিলা, ঘুঘুদহ, চিরল, গুরকা ইত্যাদি বড় আকারের বিলগুলোর অবস্থান পাবনা জেলায়। সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল থেকে বনপাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ সড়ক তৈরি হয়েছে চলনবিলের বুকেই। সড়কের দুপাশে বর্ষার সময়ে যেদিকে চোখ যায় শুধু অথৈই জলরাশি। সড়কের দুপাশে বর্ষায় জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য,পালতোলা নৌকা, নৌকায় জন-মালামাল পরিবহন, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি চারনসহ চলনবিলের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় দুচোখ ভরে। নিজস্ব গাড়িতে গেলে ইচ্ছামতো থেমে এর সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব। এছাড়া চলনবিলের আকর্ষণীয় একটি বিল ‘হাইতি বিল’। এটি নলডাঙ্গা উপজেলায়। জেলা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে এ বিলের অবস্থান। হাইতিকে দেশের সবচেয়ে গভীর বিল বলা হয়। প্রায় ১২ মিটার গভীর এই বিলে সারা বছরই পানি থাকে। বর্ষায় পানির পরিমাণ বেড়ে যায় অনেক বেশি।

সর্বশেষ সংবাদ