আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা থেকেঃ গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নলডাঙ্গা জে.সি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি সম্প্রতি কাল বৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্থ হওয়ায় ৭ম ও ৮ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীদের প্রায় দেড় সপ্তাহ থেকে খোলা আকাশের নীচে পাঠদান করা হচ্ছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম জানান ১৯৬৬ ইং সনে নারী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে অত্র এলাকার তৎকালীন প্রয়াত বিদ্যানুরাগী,গুণীজন ,দানশীল ও মহতী ব্যক্তিবর্গের পৃষ্টপোষকতায় প্রতিষ্টিত নারী শিক্ষায়নের মাধ্যমিক স্তরের একমাত্র এ বিদ্যাপিটটি দীর্ঘদিন ধরে অবকাঠামোগত সহ নানামুখী সমস্যার মধ্যে দিয়েও সফলতার সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্ত এরই মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এ অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আকস্মিক কাল বৈশাখী ঝড়ের আঘাতে বিদ্যালয়টির ২টি শ্রেণী কক্ষ বিধ্বস্থ হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৬ শতাধিক নারী শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। এমনিতে আগে থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্টানটিতে শিক্ষার্থীর তুলনায় শ্রেণী কক্ষের সংঙ্কট রয়েছে। বিদ্যমান এ পরিস্থিতিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান অনেটাই বিঘœ ঘটে থাকে। বিদ্যালয়টির আর্থিক দৈন্যতায় বিধ্বস্থ কক্ষ ২টি অদ্যবধি সংস্কার ও মেরামত করা সম্ভব হয়নি। তবুও পাঠদান অব্যাহত রাখতে অতি কষ্টে কখনও গাছ তলায় কখনও বারান্দায় আবার কখনও খোলা আকাশের নীচে শিক্ষকেরা রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে রুটিন মাফিক যথারীতি পাঠদান করা করছেন। তবে এবারে বর্ষাকাল শুরু হতে না হতেই আগাম প্রায়ই ঝড় বৃষ্টির কারণে পাঠদান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম আরও বলেন সাম্প্রতিক কালের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ভবনের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কে অবগত করা হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এইচ এম মাহাবুবুর রহমানের সাথে এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন অনেক শিক্ষা প্রতিষ্টান প্রধানেরা আমাকে বিষয়টি অবগত করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে সুনিদিষ্ট কোন নির্দেশনা পাইনি। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া ,মাজিয়া রকসি রিনা আদুরী বলেন ক্লাশ রুম স্বল্পতার কারণে মাঝে মধ্যে স্যারেরা আমাদের ক্লাশ বাইরে নেয়। এ সময় আমাদের খুব কষ্ট করে ক্লাশ করতে হয়। এছাড়া বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে তারা আরও বলেন বিশেষ করে আকাশ মেঘলা হলেই আমাদের খুব ভয় লাগে। তাই অনেক সময় ঝড় বৃষ্টির শুরুর আগেই আতংঙ্কে আমরা দৌড়াদৌড়ি করে ক্লাশে গিয়ে বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসে পড়ি । এতে জায়গা সংকুলান না হলে দাড়িয়ে থেকে অতি কষ্টে ক্লাশ করি। তবে এ সময় এসব কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম উৎকন্ঠা বিরাজ করে বলে জানা গেছে। ম্যানেিেজং কমিটির সভপতি বলেন বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার নারী শিক্ষায়নের বিস্তার ঘটাতে ও শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিতে অধিকতর গুরুত্বারোপ করে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাই অনতি বিলম্বে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ অবহেলিত নারী শিক্ষায়ন এ প্রতিষ্টানটির প্রতি সু-দৃষ্টি দিয়ে বিদ্যমান সার্বিক সমস্যাদি নিরসনে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ওই বিদ্যালযের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক শাহআলম,আইনুল হক,আব্দুল মান্নান ও আব্দুর রাজ্জাক সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা বলেন শিক্ষার্থীর তুলনায় অবকাঠামো অপ্রতুল হওয়ায় ছাত্রীদের অনেক সময় ক্লাশ রুমে বসতে দিতে না পারায় আমাদেরকেও বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। শুধু তাই নয় এতে সুষ্ট পাঠদানে বিঘœ ঘটে থাকে বলে তারা জানান। এ ব্যাপারে নলডাঙ্গা ইউ,পি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম নয়নের সাথে কথা বললে তিনি জানান আমার ইউনিয়নে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোর তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই সরকার এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন। খোঁজ নিয়ে স্থানীয়দের নিকট থেকে জানা গেছে বর্তমান প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলামের দূরদর্শিতা ও দিক নির্দেশনায় এবং সুদক্ষ,অভিজ্ঞ , মেধাসম্পন্ন ও কর্তব্য পরায়ণ শিক্ষক মন্ডলীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা আর অক্লান্ত পরিশ্রমে বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে জে,এস,সি ও এস,এস,সি পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হার প্রায় শতভাগ অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
সাদুল্লাপুরে ঝড়ে বিধ্বস্থ এক স্কুলের নারী শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নীচে পাঠদান
April 25, 2017
44 Views
You may also like
সর্বশেষ সংবাদ
সারিয়াকান্দিতে থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার ৫
3 months ago
শোক সংবাদঃ নৈশ্য প্রহরী শাহজাহান আলীর ইন্তেকাল
3 months ago
কাজিটুলা থেকে বৃদ্ধ নিখোঁজ; ১৯ দিনেও মেলেনি খোঁজ
3 months ago