আইপিএল-বিপিএল-সিপিএলে যুবকদের অনলাইনে জুয়া খেলাতেন তারা

আইপিএল, বিপিএল, সিপিএলসহ বিভিন্ন খেলায় বাজি ও বেটিংয়ের মাধ্যম হিসেবে ‘বেট৩৬৫’ ও ‘৯উইকেট’সহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ভার্চুয়াল কারেন্সি ব্যবহার করে জুয়া খেলার আয়োজন করে একটি চক্র। এছাড়া বিদেশে অর্থপাচারও করে তারা। এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর সিআইডি এসব তথ্য জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, বুধবার (২ মার্চ) কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকাসহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তোফায়েল ইসলাম রাসেলকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শাকিল খান (৩৫), পারভেজ (২৪), সাগর (৩০) ও জিয়াউল হক রনিকে (৩৯) গ্রেফতার করা হয়। তিনি বলেন, গ্রেফতাররা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে যুক্ত হয়। পরে বেকার যুবকদের টার্গেট করে অল্প সময়ে প্রচুর টাকা উপার্জনের লোভ দেখাতে থাকে চক্রটি। এরপর ধাপে ধাপে অনলাইন গ্যাম্বলিং, বেটিংয়ে আসক্ত করে তোলে। এছাড়া তারা অবৈধভাবে ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচারও করছিল। সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেফতার তোফায়েল ইসলাম রাসেল অনার্সের ছাত্র। ইংরেজি ভাষায় তার বিশেষ দক্ষতা থাকায় অনলাইন গ্যাম্বলিংয়ে ভার্চুয়াল ডলার সংগ্রহ করে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশি মুদ্রায় পরিণত করার জন্য নেটেলার, স্ক্রিল নামক ভার্চুয়াল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন। এছাড়াও তিনি ইংল্যান্ডভিত্তিক বেট ৩৬৫ নামক অনলাইন গেম বিলিং অ্যাকাউন্ট বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করে টাকার বিনিময়ে অন্যান্যদের মধ্যে সরবরাহ করতেন। পরে তাদের কাছে নেটেলার, স্ক্রিল নামক ভার্চুয়াল মুদ্রা সরবরাহ করেন। অনলাইন গ্যাম্বলিং চক্রের এজেন্ট প্রধান তোফায়েল ইসলাম রাসেল ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করে আসছেন জানান অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন। তিনি বলেন, রাসেল নিজে এই বিষয়ে বিশেষভাবে পারদর্শী হওয়ায় সামাজিক বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে ‘ডলার বাই অ্যান্ড সেলিং’ গ্রুপের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন। এই লক্ষ্যে ভার্চুয়াল ইউএস ডলার অনলাইন জুয়াড়িদের মধ্যে কমিশন ভিত্তিতে সরবরাহ করেন। কোনো কারণে ভার্চুয়াল ইউএস ডলার অনলাইনে আটকে গেলে রাসেল তা ছাড়াতেও বিশেষভাবে পারদর্শী। গ্রেফতার শাকিলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, শাকিল রাসেলের বিশেষ সহযোগী এবং মাহিম খান (ছদ্মনাম) নামে ব্যবসায়ী হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করে ৯উইকেট নামে অপর একটি অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট ও বেট৩৬৫ নামের ওয়েবসাইটে অনলাইন গ্যাম্বলিং করে থাকেন। শাকিল নিজেকে ৯উইকেটের স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দেন। ইমাম হোসেন বলেন, চক্রটি যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় ও ধ্বংসের উদ্দেশে অনলাইনে জুয়া খেলে ডিজিটাল প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধ ই-ট্রানজেকশন ও সহায়তা করে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করাসহ নিজেদের নাম-পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশ ধারণ করে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ