বদলগাছীতে প্রকল্পের সোলার খুলে নিয়ে নিজের বাড়িতে স্থাপন করলেন মহিলা ইউপি সদস্য

আবু সাইদ বদলগাছীঃ নওগাঁর বদলগাছীতে প্রকল্পের সোলার প্যানেল লাগানোর পরেরদিন মহিলা ইউপি সদস্য নিজেই সোলার খুলে নিয়ে গিয়ে নিজের বাড়িতে স্থাপন করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আধাইপুর ইউপির বৈকন্ঠপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামে। ওই মহিলা ইউপি সদস্যর নাম সাবিনা ইয়াসমিন নিলু।
জানা যায়, ২০১৬-১৭ ইং অর্থ বছরের গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসুচীর আওতায় সাধারন বরাদ্ধের ১ম পর্যায়ে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের জন্য ২৯ লাখ ১ হাজার ৬১০ টাকা বরাদ্ধ প্রদান করা হয় । এর মধ্যে আধাইপুর ইউনিয়নে ৯টি প্রকল্প গ্রহন করা হয় । তার মধ্যে বৈকন্ঠপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের খাইরুল এর বাড়ি সংলগ্ন সোলার প্যানেল স্থাপন একটি প্রকল্প গ্রহন করা হয়।
সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ কলে ঐ গ্রামের প্রকল্প সুবিধাভুগী মিজানুর, ফেরে, হালিমা, শরিফুল ইসলাম ও খাইরুল জানান, গত ৩ মাস আগে ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন নিলু আমাদের ডেকে বলেন এই গ্রামে তো কোন বিদুৎ নেই, আমি তোমাদের ৫টি পরিবারের জন্য একটি সোলার এর ব্যবস্থা করে দিব। কিন্তু এই সোলার সরকারি ভাবে এখানে আনতে গেলে অফিসে টাকা দিতে হবে বলে ৫টি পরিবারের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে ৫ হাজার টাকা গ্রহন করেন। এবং প্রকল্প অনুযায়ী যথারীতি ইটকল অনুমোদিত পাতাকুড়ি কোম্পানীর লোকজন গত ২১ এপ্রিল শুত্রুবার প্রকল্পের সোলার প্যানেল টি খাইরুলের বাড়ির টিনের ছউনির উপর স্থাপন করে এবং খাইরুলের বাড়িতে ব্যাটারি রাখার জায়গা না থাকার করনে খাইরুল ও ঐ মহিলা ইউপি সদস্যর অনুমতি সাপেক্ষে তার পার্শ্বের বাড়ির মালিক শরিফুলের বাড়িতে সোলারের ব্যাটারিটি স্থাপন করেন। সোলার প্যানেল স্থাপনের জন্য কয়েক দিন আগে বাড়ি প্রতি আরও দুই শত টাকা করে আমাদের কাছ থেকে ১ হজার টাকা উত্তোলন করেন । তারপরও ফেরে ও হালিমার বাড়িতে কোন সোলারের সংযোগ প্রদান না করে ইউপি সদস্যা তার ফুফু নেপালী ও তার প্রতিবেশি মুকুল এর বাড়িতে সোলার দেন । এবং ফেরে ও হালিমার টাকা ফেরৎ দেওয়ার জন্য খাইরুল, শরিফুল ও মিজানুরের কাছ থেকে আরও ৫শত টাকা করে মহিলা ইউপি সদস্য চাইলে সেই টাকা দিতে না পারায় পরেরদিন গত ২২ এপ্রিল মহিলা ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন নিলু শরিফুল এর অনুপস্থিতে নিজেই তার ঘরে ঢুকে ব্যাটারি ও সোলার প্যানেলটি খুলে নিয়ে গিয়ে তার নিজের বাড়িতে স্থাপন করেন। এবং শরিফুল ইসলাম তার ঘর থেকে ব্যাটারি খুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে মহিলা ইউপি সদস্যর কাছে জানতে চাইলে তাঁকেও পরে আর কোন সংযোগ দেননি।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন নিলুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, সোলার প্যানেল টি নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ার কারনে আমি সোলার প্যানেলটি খুলে নিয়ে এসে আমার বাড়িতে স্থাপন করেছি।কিন্তু সোলার প্যানেল প্রদানের নামে ওই ৫টি পরিবারের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল করিম এর সাথে কথা যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইটকল অনুমদিত পাতাকুড়ি কোম্পানী এখনও আমাকে প্রকল্পের সোলার বুঝে দেয়নি । তিনি আরও বলেন প্রকল্পে সোলার প্যানেল স্থাপনের কোন অনিয়ম দূনীতি হলে খোঁজ নিয়ে প্রকল্পের সভাপতির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ইটকল অনুমদিত পাতাকুড়ি কোম্পানীর বদলগাছী উপজেলা ম্যানেজার শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান খবর পেয়ে ওই প্রকল্পে গিয়ে সোলার প্যানেলটি নির্দিষ্ট স্থানে পাইনি। এবং প্রকল্পে সোলার প্রদানের নামে টাকা গ্রহনের বিষয় নিয়েই সোলার প্যানেলটি মহিলা সদস্য নিজে খুলে নিয়ে গিয়ে তাঁর নিজ বাড়িতে স্থাপন করেছেন। তিনি আর ও বলেন ইউপি সদস্য সোলার প্যানেলটি নিজে খুলতে আইন লঙ্গন করেছেন। আমি এ বিষয়ে আমার উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো বলে জানান।

বিষয়টি নিয়ে বুধবার বিকেল ৪ টায় আধাইপুর ইউপির চেয়াম্যান জাকির হোসেন চৌধুরীর সাথে মোবাইলে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।

সর্বশেষ সংবাদ