লালমনিরহাটের নারীকে অপহরণ করে ধর্ষণ, মামলা দায়ের

জেলা প্রতিনিধি, লালমনিরহাট-নারীকে অপহরণ করে জোরপূর্বক দীর্ঘদিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার রাকিবুল ইসলাম শাওন নামে যুবকের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল-২ এ মামলা দায়ের করেছেন। আদালত কুমিল্লার বরুরা থানাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাকিবুল ইসলাম শাওন আদিতমারী উপজেলা সংলগ্ন আব্দুল মোরশেদ এর ছেলে ও চাকুরি সুত্রে চাদপুরে অবস্থান করতেন।
ভুক্তভোগী নারী কুমিল্লার বরুরা থানার আবুল হোসেনের মেয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার বাসিন্দা শাওন চাকুরি সুত্রে চাদপুরের হাজিগঞ্জে অবস্থান করতেন। চাকুরির পাশাপাশি টিউশনি করাতেন।  সেখানে প্রবাসীর সন্তানকে টিউশনি করাতে  গিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে  ফুসলিয়ে ভেগে নিয়ে যায়। সেখান থেকে  তার খালার বাড়ি গাইবান্ধায় দীর্ঘ দুই মাস আটকে রাখেন।  এ সময় ওই নারীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ১০/১৫ দিন ধর্ষণ করেন। তার পরিবারের সহায়তায় পরে ওই নারীকে আদিতমারীতে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে এসে আটকে রাখেন।
দীর্ঘদিন মেয়ের খোঁজ না পেয়ে তার প্রবাসী পিতা আবুল হোসেন দেশে ফিরে খোজখবর নেওয়া শুরু করেন। পরে এক পর্যায়ে আদিতমারীতে খোঁজ পেয়ে সেখানে মেয়েকে নিতে আসেন। কিন্তু অভিযুক্ত ও তার পরিবার মেয়েকে ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন টালবাহানা করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফাকা স্টাম্পে স্বাক্ষর করে মেয়েকে পিতার হাতে তুলে দেয়। বাধ্য হয়ে তিনি মেয়েকে নিয়ে ফেরত চলে যান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, আমাকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে, নির্যাতন করেছে। তার পরিবারের হুমকিতে আমি কারও সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। পরে আমাকে বিয়ের কথা বলে ভয় দেখিয়ে আমার বাবার হাতে তুলে দিয়েছে। কৌশলে জীবন নিয়ে সেখান থেকে চলে এসেছি। আমি এর বিচার চাই।
ভুক্তভোগী নারীর পিতা আবুল হোসেন বলেন, আমি দেশের বাইরে থাকি, মেয়ে জামাই ও থাকে। রি সুযোগে শাওন আমার মেয়েকে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। বিদেশ থেকে দেশে ফিরে হন্নে হয়ে তারপর পেয়েছি। সেখানে গিয়ে হুমকির মুখে মেয়েকে থেকে নিয়ে এসেছি। আমি এর বিচার চাই।
মামলার আইনজীবী কুমিল্লা জজকোর্টের  এডভোকেট রাসেল ভুইয়া বলেন, নারীকে আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল-২ এ আমরা মামলা দায়েরের পর আদালত তদন্তের জন্য থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ন্যায়বিচার পেতে আমরা চেস্টা চালিয়ে যাবো।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত শাওনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নাই। মোবাইলে কল দেওয়া হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়, তবে তার মা রিনা জানান, অপহরণ নয় তারা পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসছিলো। পরে কথা হবে বলে ফোন কেটে দেন।।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লা বরুরা থানার উপপরিদর্শক জি এম ফখরুল ইসলাম বলেন, মামলার কাগজপত্র হাতে পেয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি, তবে কোন অভিযোগ ও নির্দেশনা পায়নি। কাগজ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ