ঘোড়াঘাটে নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যে দিশেহারা মানুষ

মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ,ঘোড়াঘাট(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ-দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে লাগামহীন নিত্যপণ্যের মূল্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিম্ন-বিত্ত,মধ্যম বিত্ত ও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ । বিশেষ করে বেশী দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। রাত পোহালেই হুহু করে বাড়ছে পণ্যের দাম । উচ্চ মুল্যের কারণে ক্রেতা নেই কাঁচা বাজারে। এ কারণে বিক্রি কম হওয়ায় তারাও বিপাকে।
সরেজমিনে উপজেলার বাজার ঘুরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি কেজি আলু প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা,পটল ৬০ টাকা, বেগুন ৮০টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০টাকা,দেশী পেঁয়াজ ৯০টাকা, করলা ১০০টাকা, মিষ্টি লাউ ৫০টাকা, সুকনা মরিচ ৪০০টাকা, শশা ৫০টাকা, টমেটো ১০০টাকা,করলা ১০০টাকা, সিম ২০০টাকা, রসুন ২০০টাকা, আদা ২০০টাকা, পানি কচু ৭০টাকা।
উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজারে বাজার করতে আসা শফিকুল ইসলাম নামে এ শিক্ষক বলেন, মাসের পর যে বেতন পাই তা দিয়ে পুরো মাস আসেনা। ২ সপ্তাহ যেতেই টান পড়ে যায়। এর উত্তরণ কবে যে হবে। পৌরশহরের বাঘের হাটে কাঁচা বাজার করতে আসা রিক্সা চালক রশিদ মিয়া জানান, তিনি বাজার করতে এসে তরকারির দাম শুনে হতবাক। সারাদিন রিক্সা চালিয়ে পান মাত্র সাড়ে ৩শ থেকে ৪শ টাকা। এ টাকা দিয়ে আমরা গরীব মানুষ এত দামের সবজি কিভাবে কিনে খাব বলে চরম হতাশা ব্যাক্ত করেন।
রাণীগঞ্জ,ওসমানপুর,ঘোড়াঘাট ও ডুগডুগী রাস্তায় ভাড়ায় চালিত ্অটো বাইক,্অটো ভ্যান চালকদের ্অভিযোগ তারা জনান,যাত্রী তেমন হয়না। সারা দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকাও ভাড়া হয় না। ্অন্য কাজও নাই যে কাজ সংসার চালাবো। তরিতরকারির বাজারে গেলে সব শেষ হয়ে যায়। উপরন্তু সাপ্তাহিক এনজিও‘র কিস্তির জন্য টাকা রাখতে হয়।
এই হতাশা শুধু ভ্যান,রিক্সা চালকেরই নয়,হতাশা সর্ব স্তরে।
দিন মজুররা বলছেন, এই সময়ে কাজ কর্ম নাই। বড় কষ্টে দিন পার করছি।কাউকে বুঝানো যাচ্ছেনা। এই সংকট সময়ে কে শুনে কার কথা।
নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষরা পড়েছে মহা সংকটে। তারা না পারছে দিন মজুরী করতে না পারছে কিছু করতে।
এদিকে বৈরি আবহাওয়ার কারণে সময়ে ্অকাল বন্যায় ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি সবজি চাষিদের। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। এতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। অথচ সেই পণ্যে লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা। এভাবে দাম চলে যাচ্ছে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। কম সরবরাহ আর পরিবহন খরচ বাড়ার অজুহাতে আকাশচুম্বী হচ্ছে সবজির দাম।
অন্যদিকে আড়তদারদের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ,তার ওপর ্অকাল বন্যায় ক্ষতি গ্রস্ত হয় পোটল বেগুন সহ বিভিন্ন সব্জি। ফলে ফলনও কম।
আগের চেয়ে সরবরাহ কমেছে। চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু সবজি নয়, স্বস্তি নেই ডিম-চাল-ডালসহ প্রতিটি নিত্যপণ্যেই। খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি আর পরিবহন খরচ বৃদ্ধিতে ব্রয়লার মুরগীর দামও বেশি রাখছেন ব্যবসায়ীরা। সব দিক দিয়ে দিশেহারা ক্রেতারা।
বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকির দাবি জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ ও ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। জনদুর্ভোগ লাঘবে সচেতন মহল সরকারি ভাবে বাজার মনিটরিংসহ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বাজার মনিটরিং করছি। অসাধু ব্যবসায়ীদের ছাড় দেওয়া হবেনা। যে সকল ব্যবসায়ীরা বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ সংবাদ