ডিমলায় শীতের প্রকোপে বেড়েছে ঠাণ্ডা জনিত রোগ

মোঃ ফয়সাল আহমেদ,প্রতিনিধি, ডিমলা( নীলফামারী ):  টানা এক সপ্তাহ ধরে ডিমলায় দেখা মিলছে না সূর্যের। কুয়াশায় চারপাশ ঢাকা।

শীতে জুবুথুবু প্রাণ-প্রকৃতি। শীতের এমন প্রকোপে  আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে ভাইরাস ও ঠাণ্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা।

শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্বর-সর্দি, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে প্রতিদিনই ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে  ভিড় করছেন আক্রান্তরা। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু ও বয়স্করা।
শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর চিত্র ধারণ ক্ষমতারও ৫-৬ গুণ বেশি। এর মধ্যে সপ্তাহ জুড়ে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ জন রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে।

বহিঃবিভাগে প্রতিদিন ৩শ থেকে ৫শ জন চিকিৎসা নেওয়াদের মধ্যেও শীত ও ভাইরাস জনিত রোগী বেশি। গত কয়েক দিনে ভাইরাস ও ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ ।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে হাসপাতালের বিভিন্ন  ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়,ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক-নার্সদের। বেশির ভাগই নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন বলে জানান কর্তব্যরত সেবিকা।

চিকিৎসার জন্য আসা রোগীর স্বজনরা বলছেন ঠাণ্ডা ও ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এলে চিকিৎসক ভর্তি করতে বলছেন । প্রতিটি  ওয়ার্ডে  রোগীর জন্য  পর্যাপ্ত বেড না থাকায় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে রোগী ও রোগীর স্বজনদের।

বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী আব্দুর রহমান জানান, শতশত মানুষ প্রতিদিন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসে। রোগীর তুলনায় চিকিৎসক কম হওয়ায় প্রায়ই সব রোগী শেষ না করেই কক্ষ ত্যাগ করেন চিকিৎসকরা। ফলে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

শীতে ঠাণ্ডা ও ভাইরাস জনিত রোগ থেকে শিশুর সুরক্ষায় অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন উপজলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ রাশেদুজ্জামান ।

তিনি জানান,  ঋতু পরিবর্তনের ফলে শীতকালে শিশুরা খুব অল্পতেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাই অভিভাবকদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে। ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে বাঁচতে শীতে শিশুকে আরামদায়ক ও গরম কাপড় পরাতে হবে। ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের ব্যবহৃত জামা-কাপড় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা খুবই জরুরি। শীতের সময় বায়ুবাহিত বিভিন্ন রোগজীবাণু শিশুদের সহজেই আক্রমণ করে। ধুলাবালি শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে নাক দিয়ে ফুসফুসে ঢুকে গলায় কিংবা নাকে প্রদাহ, সর্দি, কাশিসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।

উপজেলা পঃ পঃ বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ জাকারিয়া জালাল বলেন, মাত্রাতিরিক্ত দূষিত ধোঁয়া এবং ধুলাবালি শিশুদের নিউমোনিয়া কিংবা ব্রঙ্কাইটিসের মতো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। ভালোভাবে হাত না ধুলে এর মাধ্যমে অনেক রোগব্যাধি ছড়ায়। সেজন্য শিশুর খাওয়ার আগে ও পরে ভালোভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। শীতের সময় ঠাণ্ডা পানির পরিবর্তে হালকা গরম পানি ব্যবহার করা যেতে পারে। ভালোভাবে হাত না ধুলে সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়ার জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থেকে যায়। এসময় ঘরে পানি ফুটিয়ে পান করলে পানিবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। এতে করে শিশুর পানিশূন্যতা যেমন পূরণ হবে, সেই সঙ্গে গরম পানি তাকে ঠাণ্ডা লাগা থেকে সুরক্ষা দেবে। নবজাতকের প্রতি  অধিক যত্নবান হতে হবে। এছাড়া শিশু অসুস্থ হলে জরুরি ভিত্তিতে নিকটস্থ সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

সর্বশেষ সংবাদ