তানোরে দিশেহারা কৃষক ॥ নির্বিকার কৃষিবিভাগ

সারোয়ার হোসেন, তানোর:রাজশাহীর তানোরে পর পর দু’দফা দীর্ঘস্থায়ী বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকেরা মহা ধুমধামে আমণ চাষ করেছিলেন। কিšত্ত কৃষকরা আমণ নিয়ে যে আশায় বুক বেঁধে ছিলেন শেষ মুহুর্তে আমণখেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে তাদের সেই আশা উবে যেতে বসেছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ না পেয়ে কৃষকরা নিজেরা তৎপর হলেও কারেন্ট পোকার আক্রমণ কমছে না। অনেক এলাকায় জমির পুরো ধান গাছ শুকিয়ে থড়ে পরিণত হয়েছে এক ছটাক ধান পাওয়ার আশা নাই। ফলে আমণ চাষে মুনাফা তো দুরের কথা কৃষকের খরচের টাকা উঠছে না। চলতি মৌসুমে আমণখেতে ইঁদুরের উপদ্রব, পোকার আক্রমণ ও রোগ-বালাই প্রতিরোধে আমণখেতে পলিথিন, অডিও ক্যাসেটের ফিতা ঝুলানোর পাশপাশি প্রার্চিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন গাছের ডাল ও কলাগাছ পুঁতে এসব প্রতিরোধ করার জন্য কুষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শ ও উৎসাহ দেয়ার পাশপাশি তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। কিšত্ত এতো কিছুর পরেও আমণখেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণে কৃষকরা রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন, গতকাল সোমবার তানোরের কলমা ইউপির ধঞ্জয়পুর, চৈতপুর ও বংপুর মাঠে দেখা গেছে আমণখেতে কারেন্ট পোকার ভয়াবহ আক্রমণ। বিশেষ করে আতপ ধানেরখেত কারেন্ট পোকার আক্রমণে পুরোপুরি নস্ট হতে চলেছে। কলমা ইউপির ধনঞ্জয়পুর গ্রামের চাষি রতন (৪০) জানান, ধনঞ্জয়পুর মাঠে তার দুই বিঘা আতপ ধান ছিল কারেন্ট পোকার আক্রমণে পুরো জমির ধান গাছ শুকিয়ে খড় হয়ে গেছে এক ছটাক ধানও তিনি পাবেন না। কৃষক আব্দুল মান্নান (৩৩) বলেন, তার এক বিঘা জমির আতপ ধান কারেন্ট পোকার আক্রমণে পুরোপুরি নস্ট হয়েছে। কিšত্ত তারা কৃষি বিভাগের কাছে থেকে তেমন কোনো সহযোগীতা বা পরামর্শ পাচ্ছেন না।
রাজশাহী জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আমণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার ২২৪ হেক্টর। এর মধ্যে পোকা দমণের পদ্ধতিতে পাচির্ং-লগ, লাইন এবং ধনিচা গাছ লাগনো হয়েছে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে। এছাড়াও রাজশাহী অঞ্চলের রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আমণের চাষাবাদ হবে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার হেক্টরের উপরে। তানোর উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারি কর্মকর্তা সমশের আলী বলেন, প্রার্চিং পদ্ধতি ও আলোক ফাঁদ ব্যবহার করে সহজেই আমণখেতের পোকা দমন করা সম্ভব এতে কীটনাশকের প্রয়োজন পড়ে না। তবে কারেন্ট পোকা কিছুতেই দমন করা যাচ্ছে না।

 

সর্বশেষ সংবাদ