চলনবিলে খেজুর রস ছাড়াই তৈরি হচ্ছে গুড়

এ,এইচ,খোকন চলনবিল প্রতিনিধিঃ খেজুর রস ছাড়াই তৈরি হচ্ছে গুড়। আটার গোলায় চিনি, ফিটকিরি, ডালডার মিশ্রণে দেয়া হচ্ছে পুরাতন গুড় আর টাটকা গুড়ের রঙ বানাতে মেশানো হচ্ছে খড় পঁচানো পানি। চলনবিলের ৯ টি উপজেলা সহ উত্তরবঙ্গের প্রায় এলাকাতেই চলছে একই অবস্থা ৷আর এই নকল খেজুর গুর প্রায় প্রত্যেকটি হাট বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ।

চিনি ও কেমিক্যাল মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরির মহোৎসব চললেও তা তৈরি ও বিক্রি ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই দিনে দিনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ওই অসাধু চক্রটি। সূত্র জানায়, বাজারে চিনির চেয়ে গুড়ের দাম বেশি থাকায় এবং বেশি লাভের আশায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল গুড় তৈরিতে ঝুঁকছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চাঁচকৈড় বাজারের ভেজাল গুড়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সাবেক শ্রমিক জানান,  এমন নিয়মে প্রতিদিন চাঁচকৈড় বাজার থেকে শত শত পাতিল ভেজাল খেজুর গুড় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আসল গুড় হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়তি মুনাফা লাভের আশায় এভাবেই তৈরি করছেন ভেজাল খেজুর গুড়। গুরুদাসপুর পৌর সদরের চাঁচকৈড় বাজারস্থ গুড় উৎপাদনকারী অন্তত দশটি কারখানায় দেদারছে এসব ভেজাল গুড় তৈরি হলেও নেই প্রসাশনের কোনো নজরদারি। আর এসব ভেজাল গুড়ই যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
নিম্নমানের ঝোলা ও নরম গুড় কিনে, গলিয়ে তাতে চিনি, রং, হাইড্রোজ, সোডা, ফিটকারি ও বিশেষ গাছের ছাল গুড়া দিয়ে গুড় তৈরি করছেন। সেই গুড় স্থানীয় হাট-বাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাক ভরে পাঠাচ্ছেন। সরেজমিনে চাঁচকৈড়ের গুড় উৎপাদনকারী কয়েকটি কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, বাজার থেকে কিনে আনা নিম্নমানের গুড়গুলো ময়লাযুক্ত মেঝেতে নোংরা স্যান্ডেল পায়ে শ্রমিকরা গুড়ো করছেন। পাশেই প্রকাশ্যে রাখা হয়েছে চিনির বস্তা । দিনভর ভেজাল গুড় তৈরি করা হচ্ছে। এ সবই হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। অথচ এসব ভেজাল গুড়ই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাজারজাত করা হবে৷চিনিমুক্ত গুড়ের রং হয় কালো। তাতে প্রকৃত স্বাদ-গন্ধ অটুট থাকে। এই গুড় প্রতিকেজি ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক রবিউল করিম জানান, খেজুর গুড়ে চিনি, রং, হাইড্রোজ, সোডা, ফিটকারিরমত ভেজাল মিশ্রণের কারণে খাদ্যনালীতে ক্যান্সার, কিডনি ড্যামেজ, লিভারে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সর্বশেষ সংবাদ