গাইবান্ধায় করোনা আক্রান্ত বেড়ে ৬৫৬, নতুন শনাক্ত ২

আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধায় গত ২৪ ঘন্টায় রবিবার (০২ আগস্ট) নতুন করে আরো ২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাড়ালো ৬৫৬ জন। জেলায় চিকিৎসাধীন আছেন ৩১৩ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩৩১ জন এবং মারা গেছেন ১২ জন। শনিবার (০১ আগস্ট) রাত আটটায় প্রাপ্ত জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সবশেষ পরিসংখ্যানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সিভিল সার্জনের অফিস থেকে জানানো হয়, শনিবার সন্ধ্যায় নতুন করে আরো ২ জনের করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। নতুন করে আক্রান্ত ২ জনের মধ্যে সুন্দরগঞ্জে ১ জন এবং সাদুল্লাপুর উপজেলায় ১ জন রয়েছেন। জেলার ৭ উপজেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ৬৫৪ জনের মধ্যে গোবিন্দগঞ্জে সর্বাধিক ২২৮ জন (এরমধ্যে পৌর এলাকায় ১১৮ জন) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া সদরে ১৬১ (এরমধ্যে পৌর এলাকায় ১২৯ জন), পলাশবাড়ীতে ৭৬ (এরমধ্যে পৌর এলাকায় ৪৭ জন), সাদুল্লাপুরে ৫৬, সাঘাটায় ৪৭, সুন্দরগঞ্জে ৫৫ (এরমধ্যে পৌর এলাকায় ২৪ জন) এবং ফুলছড়ি উপজেলায় ৩৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গাইবান্ধায় বর্তমানে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ৩১৩ জন বিভিন্ন আইসোলেশনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরমধ্যে ৯৭ জন গাইবান্ধা সদরে, সুন্দরগঞ্জে ২৬ জন, সাদুল্লাপুরে ২৪ জন, গোবিন্দগঞ্জে ৮৪ জন, সাঘাটায় ২৩ জন, পলাশবাড়ীতে ৩৮ জন ও ফুলছড়িতে ২১ জন।
গাইবান্ধায় করোনাভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, তবে এরই মাঝে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়ে জেলায় সুস্থ হয়ে উঠছেন অনেকেই। করোনাকে জয় করে জেলায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩৩১ জন। এরমধ্যে গাইবান্ধা সদরে ৬২ জন, সুন্দরগঞ্জে ২৮ জন, সাদুল্লাপুরে ৩১ জন, গোবিন্দগঞ্জে ১৪০ জন, সাঘাটায় ২৪ জন, পলাশবড়ীতে ৩৪ জন ও ফুলছড়িতে ১২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
জানা গেছে, এখন পর্যন্ত জেলায় মোট ১২ জন করোনা আক্রান্তরোগী মারা গেছেন। এরমধ্যে গোবিন্দগঞ্জে ৪ জন, সদরে ২ জন, সাদুল্লাপুরে ১ জন, পলাশবাড়ীতে ৪ জন এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় আরও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে গাইবান্ধার চার পৌর এলাকায় ক্রমাগত করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। গত ১১ দিন জেলার গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, সুন্দরগঞ্জ এবং গাইবান্ধা পৌর শহর ও আশেপাশের এলাকায় করোনা সংক্রামণ ক্রমাগত বাড়ছে। এ পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত ৬৫৪ জনের মধ্যে এই চার পৌর এলাকায় সংক্রমণের সংখ্যা ৩১৭ জন। এরমধ্যে গাইবান্ধা পৌরসভায় সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্ত ১২৯ জন।
তবে করোনা সংক্রমণ নিয়ে স্থানীয়রা অনেকটাই অসচেতন। চলাচলে অসতর্কতা এবং সামাজিক দূরত্ব ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বাস্থ্যবিধি কেউ সঠিকভাবে মেনে চলছেন না। সাধারণ মানুষ হাঁটবাজার, দোকানপাট ও রাস্তাঘাটে অবাধে চলাচল করছেন। চলছে চায়ের দোকানে আড্ডা। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে কমেছে প্রশাসনের নজরদারিও। এতে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টরা।
গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ জানান, জেলায় করোনা ‘পজিটিভ কেসগুলোর অধিকাংশই এখন সুস্থ হওয়ার পথে’। করোনা ভাইরাসজনিত বিশ্ব মহামারির কারনে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ন্ত্রনে সকল ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুষ্ঠানসমুহে স্বাস্থ্য বিধিমালা মেনে চলা বাধ্যতামুলক নাগরিক দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি সবাইকে সামাজিক দুরত্ব মেনে, মাস্ক পরে ঈদের নামাজ আদায় করে দরিদ্র মানুষদের সাথে পবিত্র ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার আহ্বান জানান। এছাড়া ঈদের নামাজ আদায় শেষে কোলাকুলি ও মুসাফাহ পরিহার করারও আহ্বান জানান তিনি।

সর্বশেষ সংবাদ