চাকরির নামে ভয়াবহ প্রতারণা শাহিরুলের

বাসের হেলপার থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক। খুলে বসেন ভুয়া মানবাধিকার কমিশন। ১৮ বছর ধরে চলছে তার প্রতারণা। শেষ পর্যন্ত রাজধানীর রামপুরা থেকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে প্রতারক শাহিরুলের ভয়ংকর প্রতারণার সব তথ্য। জব্দ করা হয় দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকটি অস্ত্র। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাস চালকের সহকারী হিসেবে কাজের সময় বিভিন্ন সিকিউরিটি কোম্পানিতে গার্ড সরবরাহের নামে প্রতারণা শুরু করেন শাহিরুল। মানুষ ঠকানোর হাতেখড়ি তার এখান থেকেই। এরপর ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন হোমল্যান্ড নামে সিকিউরিটি অ্যান্ড গার্ড সার্ভিস, বেভারেজ কোম্পানিসহ নানা ধরনের ব্যবসা। পরে নিজেকে প্রভাবশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে গড়ে তোলেন ভুয়া মানবাধিকার সংস্থা। বনে যান সংস্থার চেয়ারম্যান। রাজধানীর বনশ্রীতে অফিস ভাড়া নিয়ে বেকার ও শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের চাকরি দেওয়ার নামে আত্মসাৎ করেন লাখ লাখ টাকা। নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের কথা বলে প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হতো ১৫-২৫ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণ শেষে চাকরি না দিয়ে উল্টো ভয়ভীতি দেখাতো সাহিরুল। বিভিন্ন সংস্থায় আউট সোর্সিংয়েরর নামে কর্মী নিয়োগ দিলেও দেওয়া হতো না বেতন। ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রথম মাসে বেতন চাওয়ায় বলেছে পরের মাসে। তার পরে বললে বলে একবারে টাকা পাবা। ভুক্তভোগী এক নারী জানান, সরকারি চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেয়। পরে আর চাকরি দেয়নি। গেলেই ভয়ভীতি দেখান সাহিরুল। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে নিজের ক্ষমতা জাহির করা সাহিরুল সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির নামে নিত ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা। হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির নামে প্রতারণার জাল বিছায় সাহিরুল। রাজধানীর রামপুরা থেকে গ্রেপ্তারের সময় জব্দ করা হয় বেশ কয়েকটি অস্ত্র, গুলি। র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা যে অস্ত্রশস্ত্র জব্দ করেছি, তার কোনোটারই কাগজপত্র তার কাছে নেই। মানবাধিকার সংস্থার যে চেয়ারম্যানের নাম, সেটা ভৌতিক নাম। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তার ২৩ কাটা জায়গা রয়েছে, দুটি অত্যাধুনিক গাড়ি আছে, সব মিলিয়ে আমরা এখন পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকা সমমূল্যের সম্পদ রয়েছে জানতে পেরেছি। সাহিরুলে সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।

সর্বশেষ সংবাদ