সীমান্তে জ্ঞানের প্রদীপ

রুবাইত হাসান ,স্টাফ করেসপন্ডেন্ট: নওগাঁর সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন আগ্রাদ্বিগুন বাজারে একজন আইপিএ গবেষক স্থানীয় যুবক আলমগীর কবির নিজ পৈতৃক সম্পত্তিতে স্থাপন করেছেন মজিবুর রহমান স্মৃতি পাঠাগার যার আয়তন ১২০০ স্কয়ার ফিট।দৃষ্টিনন্দন এ উন্মোক্ত পাঠাগারটি ডিজাইন করেছেন ঢাকার হাতিরঝিল ডিজাইনার ইকবাল হাবিব।যার ডেকোরেশন খরচ পড়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা।শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পাঠাগারটিতে রয়েছে শেখ মুজিবর রহমান কর্নার,তাজউদ্দীন আহম্মেদ কর্নার ,শহীদ জিয়াউর রহমান কর্নার ,শিশুতোষ কর্নার ,জবস কর্নার।গল্প ও রচনা সামগ্রী,উপনাস,অনুবাদ,ইসলামিক,চিকিৎসা,বিনোদনমূলক,শরীরচর্চা ও খেলাধুলা বিষয়ক সব মিলিয়ে পাঠাগারটি জুড়ে ও মনজুড়ানো আসবাব ও শৈল্পিক ডিজাইনে সারি বদ্ধ ভাবে সংগ্রহে আছে প্রায় চার হাজার পাঁশশত বই (৪৫০০) বই।নিজস্ব ক্রয়কৃত বই ছাড়া বিভিন্ন লেখক,বই প্রেমী ,সচেতন মহল এখানে উপহার হিসাবে দিয়েছেন বই।এছাড়া পাঠাগারটিতে রয়েছে প্রতিষ্ঠাতা আলমগীর কবির তার মরহুম পিতার আলাদা একটি আর্কাইভ রয়েছে যেখানে তার বিভিন্ন সময়ে লেখা বিভিন্ন বই,ডায়েরি ও পত্রিকায় প্রকাশিত পেপার কার্টিং বিদ্যমান।বর্তমানে পাঠাগারটিতে স্কুল পড়ুয়া ও প্রবীণ পাঠক এবং অন্যান্য পাঠক মিলে দিনে গড় ৭০-৮০ জন পাঠক এখানে অবসরে মনমুগ্ধকর পরিবেশে সম্পূর্ন ফ্রিতে বই পড়ার সুযোগ পেয়েছেন।এখঅনে নিয়মিত আবৃতি ,কুইজ প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে ,বীজয়দের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার।প্রতিষ্ঠাতার পিতা মরহুম মজিবুর রহমান ফাউন্ডেশন কর্তৃক অসহায় মেধাবী শিক্ষার্থীদেও নিয়মিত উপবৃত্তি ,শীতকালীন কাপড় ,অসহায়দেও খাদ্য সামগ্রী ছাড়াও বেশ কয়েকটি সামাজিক উন্নয়ন মূলক কাজ কওে থাকেনযা ইতিমধ্যে সমাদৃত ও প্রশংশিত হয়েছে নিজ এলাকা ও জেলায়।এছাড়া পাঠাগারটি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মি. আলমগীর কবির জানান ,
এখনও পাঠাগারটির আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন হয়নি ,এটা খুব শীঘ্রই বড় পরিসরে করার চিন্তা করছি যেখানে রাজধানী ঢাকা থেকে আগত বেশ কিছু সম্মনিত মানুষজন উপস্থিত থাকবেন বলে আশাবাদী।আর সামনে আমার পরিকল্পনা গুলোর মধ্যে রয়েছে , বুক রিভিউ,সেরা পাঠক মাসিক/বার্ষিক নির্বাচন ,স্কুল ভিত্তিক বইপড়া কর্মসূচি ,পাঠাগার কর্তৃক গ্রাম ভিত্তিক বইপড়া কর্মসূচি,গণিত অলিম্পিয়াড,ইংলিশ অলিম্পিয়াড,বেকারত্ব দূরিকরনে আত্নকর্মসংস্থানের লক্ষে উদ্দ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষে কার্যক্রম ,বাইর্ষক বই মেলা পরিচালনা করার পরিকল্পনা ।লাইব্রেরিয়ান ও প্রোগামার প্রতিবেদককে জানান প্রতি শুক্রবার আমরা জাতির স্থপতি শেখ মুজিবর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উন্মোক্ত ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করে থাকি।এছাড়া প্রতিদিনের খবারখবর পত্রিকা ,মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সও আমরা রাখি।আমাদের একটি গেষ্ট হাউজের ব্যবস্থাও আছে।এছাড়া খুব শীঘ্রই আমরা আঞ্চলিক ইতিহাস সামগ্রী ,জেলা সমূহের ইতিহাস সামগ্রী ,মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই,বাংলা একাডেমির অভিধান যুক্ত করবো।প্রতিষ্ঠাতা আলমগীর কবির আরো জানান সকাল এই পাঠাগারটির ইচ্ছা ছিলো আমার বাবার ,আমার বাবা ভীষন বই প্রেমী একজন মানুষ ছিলেন।তিনি চাইতেন অন্তত নিজ এলাকার মানুষকে তিনি জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করবেন।তাই বাবার ইচ্ছে পূরন ছাড়াও নিজেও খুব তৃপ্তি পাই বাংলাদেশের শেষ সীমানায় একটি জ্ঞানের প্রদীপ জ্বলাতে পেরে। আমরা একটি সবে ওয়েবসাইটও খুলেছি ( ধীর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি ,বলতে গেলে আমার স্বপ্ন ঠিক বাবার মতোই দূও বহুদুর।পাঠাগারে চার জন স্টাফ সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন,বলছিলেন মি. আলমগীর কবির।এলাকাবাসীদের অভিমত তার বাবা একজন পরোপকারী ও সুন্দও মনের মানুষ ছিলেন এত টাকা পয়সা খরচ কওে আলমগীর কবির যা কিছুৃ করছেন তাতে আমরা এলাকাবাসী অনেক আনন্দিত।স্কুল পড়ুয়া সন্তানের কিছু অবিভাবক জানান, স্কুল থেকে ফিরে বিকেলে খেলার সময়ের পূর্ব পর্যন্ত আমাদেও সন্তানেরা অত্যান্ত নিরিবিলি ও সৌন্দর্যপূর্ন পরিবেশে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি এখানে বই পড়ে অনেক কিছু শিখছে জানছে যে সুযোগটা আমাদেও হয়নি।বয়বৃদ্ধ কয়েকজন মুরব্বী জানান ,আগে বিকেল বেলা বাজাওে এসে চায়ের দোকানে কেবলই গল্প গুজবে সময় পার হতো এখন পুরনো সঙ্গীদের নিয়ে চাহিদা ও পছন্দ মতো এখানে বই পড়ে অবসর সময়টুকু কাটাই খুবই ভালো লাগে।

 

সর্বশেষ সংবাদ