সাতক্ষীরা উপকূলে ১৩০ থেকে ১৫০ কি.মি. বেগে ধেয়ে আসছে বুলবুল

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ১৩০ কিলোমিটার থেকে ১৫০ কিলোমিটার গতিবেগে সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে।

স্থানীয় আবহাওয়া অধিদফতরের দেওয়া তথ্যমতে, রাত ৮টা অথবা তার আগে আঘাত আনতে পারে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এই মুহূর্তে সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর থেকে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। তবে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ জনের উপস্থিতি খুবই কম।

সাতক্ষীরা-৪ (শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ) আসনের এমপি এস এম জগলুল হায়দার জানান, সাতক্ষীরায় মোট ২৭০টি সাইক্লোন সেল্টারের মধ্যে গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, মুন্সিগঞ্জসহ আশেপাশের সাইক্লোন সেন্টারগুলোতে মানুষজন আশ্রয় নিয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। অধিকাংশ মানুষ তাদের বসতবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে কোনভাবে আসতে চান না। তারা শেষ পর্যন্ত তাদের বসতভিটায় থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে চান।

এদিকে, সুন্দবরবন সংলগ্ন চুনা, কালিঞ্চি, খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদের পানি ১ থেকে ২ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। ঝুকিপূর্ণ বেড়ি বাঁধের অনেক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।  বুলবুল মোকাবেলায় সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসন ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৭০টি আশ্রয় শিবির প্রস্তত রাখা হয়েছে। ১২৫২টি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ফাঁকা করে রাখা হয়েছে। শ্যামনগর, আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার জনগণকে বার বার আশ্রয়কেন্দ্রসহ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দুর্যোগ কবলিতদের সহায়তায় ১১০ মেট্রিক টন চাল, নগদ এক লাখ টাকা, ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ২৭ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধপত্র মজুদ রাখা হয়েছে। ২২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্টের সদস্য, ৮৫টি মেডিকেল টিম প্রস্তত রয়েছে।

নৌ-বাহিনী ও স্থলযান প্রস্তত রাখা  হয়েছে। একইভাবে পুলিশ, বনবিভাগ, কোস্টগার্ড ও বিজিবির পক্ষ থেকেও উপকূলীয় এলাকায় বুলবুল মোকাবেলায় আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জানান, সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তাদের কর্মস্থল ত্যাগ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

অপরদিকে, সুন্দরবনের দুবলার চরে রাসমেলায় অংশগ্রহণেচ্ছু পুর্ণ্যার্থীরা সম্ভাব্য দুর্যোগের কারণে যাত্রা বন্ধ করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত সতর্কতা জারি করে উপকূলবাসীকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে চেয়ারম্যানরা মাইকিং করেছেন। এছাড়া দিনভর দমকা হাওয়ার সঙ্গে থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

 

সর্বশেষ সংবাদ