১২ সিটির মেয়র নিয়ে হবে গোলটেবিল বৈঠক

দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের সমস্যা নিয়ে আলোচনা, সংকট থেকে উত্তরণ ও সেবার পরিধি বাড়াতে মেয়রদের একটি প্লাটফরম গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে এ প্লাটফরমের গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

রোববার (২৪ নভেম্বর) ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম ও চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেন।

বিকেলে টাইগারপাসের চসিক কনফারেন্স হলে ডিএনসিসি ও চসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দুই মেয়র ছাড়াও ডিএনসিসি সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এম মঞ্জুর হোসেন, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মেয়রের একান্ত সচিব শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল হাসনাত মো. আশরাফুল ইসলাম এবং চসিকের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাসেম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী, মেমন মাতৃসদন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. প্রীতি বড়ুয়া ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় চসিকের শিক্ষা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার তথ্যচিত্র প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ একেএম রেজাউল করিম এবং প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম রাজস্ব আদায় ও এস্টেটের বিস্তারিত তুলে ধরেন। বৈঠকে স্থানীয় সরকার কাঠামো শক্তিশালীকরণে সিটি গভর্নেন্সের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ভাববিনিময়ের কোনো বিকল্প নেই। পরস্পরের মধ্যে অভিজ্ঞতা ও ভাববিনিময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যা আমাদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় সঠিকভাবে সমাজের জন্য কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসবে। পূর্ব অভিজ্ঞতা নিয়ে যেকোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় ধরনের সাফল্য অর্জিত হয়। এ অভিজ্ঞতা আমাদের চলার পথে পাথেয়।
মেমন মাতৃসদন হাসপাতাল পরিদর্শন

সকালে ডিএনসিসি মেয়র চসিক পরিচালিত মেমন মাতৃসদন হাসপাতাল পরিদর্শনে করেন। মেমন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা ঢাকা উত্তর মেয়রকে হাসপাতালের ইপিআই কেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে তিনি নিজহাতে একটি শিশুকে টিকা খাইয়ে দেন। এ সময় চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ মেয়র আতিকুল ইসলাম মেমন মাতৃসদন হাসপাতালের প্রসূতি রোগীদের আউট ডোর, শিশু আউট ডোর, জেনারেল কেবিন, ভিআইপি কেবিন, ডিলাক্স কেবিন পরিদর্শন করেন।

এসময় তারা কেবিনে অবস্থানরত রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন। পরিদর্শন শেষে মেমন হাসপাতাল কনফারেন্স হলে চিকিৎসক, নার্সদের এক মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা।

মেয়র মো. আতিকুর ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এ ৫টি মানুষের মৌলিক অধিকার। মানুষের এসব মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশ স্বাধীন করেছিলেন। এসব মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই প্রচেষ্টা বাস্তবায়ন করাই আমাদের মৌলিক দায়িত্ব।

মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসরত ৭০ লাখ নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে চসিক। নগরবাসীর মধ্যে অধিকাংশই দরিদ্র ও হতদরিদ্র জণগোষ্ঠী রয়েছে। যারা স্বাস্থ্য ও পুষ্টিহীনতায় ভোগে। এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে চসিক ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এর মধ্যে ৪টি মাতৃসদন হাসপাতাল, ১টি জেনারেল হাসপাতাল, ৫৩টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা দাতব্য চিকিৎসালয়, ৩৩৫টি স্থায়ী-অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র, ১টি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যাটস, ১টি মিডওয়াইফারি ইনস্টিটিউট, ১২টি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কেন্দ্র, ১টি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। এসব  প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতি মাসে গড়ে ১ লাখের বেশি নগরবাসীকে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকে চসিক।

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, প্রিমিসেস লাইসেন্স, বিনামূল্যে জলাতঙ্ক টিকা প্রদানের বিষয়ও সিটি মেয়র উল্লেখ করেন।

প্রতিটি ওয়ার্ডের ১ হাজার হতদরিদ্র পরিবারকে মেয়র হেলথ কার্ড দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে মেয়র নাছির বলেন, জানুয়ারি থেকে মেয়র হেলথ কার্ড দেওয়া হবে। হেলথ কার্ডধারী প্রতিটি পরিবার বিনামূল্যে সিটি করপোরেশন থেকে চিকিৎসাসেবা ভোগ করতে পারবে।

সর্বশেষ সংবাদ