সোনাগাজীর আমিরাবাদের ৫টি ওয়ার্ড চলছে এনাম মেম্বার এর অত্যাচারে দিশেহারা জনগণ

আবদুল্লাহ রিয়েল: সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ১,২,৩,৪,৫নং ওয়ার্ড চলছে আমিরাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি এনাম হোসেন প্রকাশ এনাম মেম্বারের শাসন।এনামও স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার অত্যাচারে দিশেহারা ওই এলাকার জনগণ । এই ওয়ার্ড গুলোর বাজার গুলোতে চলে প্রতিদিন গন্ডির(টোল) নামে চাঁদাবাজি। ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় কিছু লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই ওয়ার্ড সমূহের বাজার গুলোতে ১ কাপ চা ৬ টাকা বিক্রি হলে তারমধ্যে ১টাকা চলে যায় এনাম ও প্রভাবশালী কিছু নেতার পকেটে। এছাড়া বাজারের ইজারা শর্তের বাইরে জোর করে মাছ প্রতি কেজিতে ৫টাকা,শুটকি প্রতি কেজিতে,১০টাকা,চাউল প্রতি বস্তায় ২০টাকা,ধান প্রতি আডিতে ১০ টাকা,গরুর মাংস রান প্রতি ৬০০টাকা,মুরগী প্রতি কেজি ৫টাকা, ফল প্রতি কেজিতে ৫টাকাসহ যদি কেউ কোন সামগ্রী বিক্রি করে তাদের হার অনুসারে চাঁদা (টোল) দিতে হয়। বাজারের প্রতি দোকানে মাসিক চাঁদা ২০০/৩০০ টাকা , সিএনজি, উপকুল গাড়ির জন্যত মাসে ৫০০/১০০০ টাকা দিতে হয়। এখানেই শেষ নয় এই ৫ ওয়ার্ডের প্রতিটি পরিবারকে সরকারি করের নামে সারা বছর নানান চাঁদা দিতে হয়। এই এলাকা গুলোতে যদি কোন ঝামেলা হয় সালিশের নামে উভয় পক্ষকে ৫০ হাজার থেকে ১লক্ষ টাকা দিতে হয়। না দিলে উভয় পক্ষই এলাকায় বসবাস করতে পারেনা।
বিশেষ করে ১ও ২ নং ওয়ার্ড চলে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এনাম মেম্বারের ইশারায়। বাংলাদেশ সরকারের ঘোষিত শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ বিনা পয়সা পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও ১/২/৩ নং ওয়ার্ড এর প্রতি মিটারে এনাম মেম্বার ২ হাজার ৭শ টাকা করে ও কোন কোন মিটারে ২০ হাজার টাকাও নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই এলাকায় সরকারিভাবে রাস্তা,কালভার্ট নির্মাণ করা হলে সেই এলাকার সুবিধাভোগী জনগন কে ২০০০/৩০০০ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা গুলো নেওয়া হয় কাজ আনতে টাকা খরচ হয়েছে বলে।
জানা গেছে এনামের রয়েছে একটি জলসা ঘর।সে জলসা ঘরের নিয়ন্ত্রণ করে সন্ত্রাসী জাশেদ।জাশেদ এনাম মেম্বার কে খুশী করার কথা বলে বিপদে পড়া যুবতী নারীদের বাধ্য করে বিচানায় যেতে। না গেলে বিচার চলে যায় বিপক্ষে। অসহায় পরিবারের যুবতী বিচার পেতে নিজের সম্ভ্রম দিয়ে দেয়।এনামের ডানহাত জাশেদ মিয়ারবাজারের ব্রাক ব্যাংক এর দোতলায় প্রতিরাতে মদ এবং ইয়াবার আশর বসায় সেই আশরে কখনো পতিতা কখনো বিচার কাংখি নিরীহ মহিলা। এই ৩ ওয়ার্ডে চলে মাদকের রমরমা বাণিজ্য, এনামের বামহাত বোমা শরীফ এবং জাশেদ মাদক ব্যবসা করে।,ইয়াবা দিয়ে পুরা এলাকার যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এছাড়া একজন মুসল্লি তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় বিগত ২ মাস বাজারে যেতে পারছেনা মসজিদে নামাজ পডতে পারছেনা।
এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন জানান,এই এলাকার কেউ তাদের অত্যাচারের ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস করেনা। এনাম মেম্বার এবং স্থানীয় এই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে যদি কেউ ভুলেও মুখ খুললে তাদের উপর চলে অত্যাচারের ভয়াবহ স্ট্রীম রোলার।এনাম মেম্বার প্রতিদিন ২/৩টা মোটরসাইকেল যোগে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে নতুন মসজিদ থেকে আহাম্মদ পুর হয়ে সাহেবের হাট দিয়ে তুলাতুলী সফরপুরে শোডাউন দিয়ে জলসা ঘর মিয়ার বাজারে অবস্থান করে যাওয়ার সময় প্রকাশ্যে বলে বেডায় কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে ভাঙা অস্ত্র দিয়ে পুলিশে দেওয়া হবে। সে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি, তার হাত অনেক লম্বা।
৩নং ওয়ার্ডের মোশারফ প্রতিবাদ করেছিলো বলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে।এছাড়া তুলাতুলির খানসাহেব কেও পুলিশে ধরিয়ে দেয়া হয়। আমিরাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে এলাকাবাসী এনামের বিষয়ে অনেকবার অবিহিত করেন। চেয়ারম্যান এনামকে যতবার জিজ্ঞেস করেছে জনগনের উপর অত্যাচার তত বেশী হয়েছে।
এই ব্যাপারে আমিরাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,তিনি দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পেয়েছেন। তবে অপরাধী যেই হোক সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
এ ব্যাপারে আমিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা ও সোনাগাজী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আজিজুল হক হিরন জানান, ৬/৭/৮/৯ নং ওয়ার্ডে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী,চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়েছে। ১/২/৩/৪/৫ নং ওয়ার্ড এলাকার বিষয়গুলো আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব দেখবেন। যদি কোন সহযোগিতা লাগে আমি অবশ্যই করবো।
আমিরাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব নবী ফরহাদ জানান, এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণ সত্য। আমি জানি প্রতিদিন ভুক্তভোগী এবং সাধারণ মানুষ জানায়,তারমধ্যে আমিরাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিন পাশ স্থানীয় এমপির সন্ত্রাসী বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে ছিলো কিন্তু এখন নাই। কারন ফেনী জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারি এমপির সর্বোপরি ভূমিকায়, র্যাব-৭,ফেনী এবং সোনাগাজী মডেল থানার ওসি হুমায়ুন কবিরের আপ্রাণ প্রচেষ্টায় উত্তর পাশের এলাকা চরলামছি,চরডুব্বা,সোনাপুর,বাদামতলি,মুহুর প্রজেক্ট এখন সম্পূর্ণ শান্তির জনপদ। কিন্তু আমিরাবাদ ইউনিয়নের উওর পাশ ১/২/৩/৪/৫ নং ওয়ার্ড এর এলাকাগুলোর এই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এক নেতার ছত্রছায়ায় থেকে জনগনের উপর এই অত্যাচার চালাচ্ছে।অত্যাচারী ব্যক্তির ভয়ে এতদিন কেউ মুখ না খুললেও আমি বিষয়টি নিজাম উদ্দিন হাজারি এমপিকে জানিয়েছি। তিনি সোনাগাজী মডেল থানার ওসি হুমায়ুন কবিরকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই অত্যাচারী ব্যক্তি যতবড় নেতাই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।”নিজাম উদ্দিন হাজারির ঘোষণা সাধারণ মানুষকে কষ্ট পেতে দেওয়া যাবেনা”
খুব শীগ্রই এই সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা হবে। নিজাম উদ্দিন হাজারি এমপির এই ঘোষণা বাস্তবায়ন করার জন্য আমি লডাই করে যাবো। এছাড়া তিনি এই ব্যাপারে ফেনী পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবিষয়ে,সোনাগাজী মডেল থানার পরিদর্শক(ওসি) হুমায়ুন কবির জানান,দুএকটি অভিযোগ লোক মুখে শুনলেও ভুক্তভোগী কেউ অভিযোগ না করায় অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এধরনের ঘটনায় কেউ ফোন করলে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।

সর্বশেষ সংবাদ