আদিতমারীতে স্ত্রীকে নির্যাতন ও বাড়ী থেকে বের করে দেওয়ার অভিযুক্ত স্বামী গ্রেফতার

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট জেলার  আদিতমারী উপজেলায় স্ত্রীকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার মামলায় উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী ভবেশ চন্দ্র রায়কে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৬ আগস্ট) দিবাগত রাতে উপজেলার মহিষাশ্বহর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আদিতমারী থানা পুলিশ। গ্রেফতাকৃত ভবেশ চন্দ্র রায় উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি মহিষাশ্বহর গ্রামের মৃত নিরঞ্জন কুমার রায়ের ছেলে। তিনি আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সহকারী পদে  কর্মরত।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ভবেশ চন্দ্র রায় উত্তম ২০০৯ সালের ২৪ আগস্ট পার্শ্ববর্তী মহিষখোচা গ্রামের মৃত জগদীশ চন্দ্রের মেয়ে বিথী রানীকে নোটারী পাবলিক ও সনাতন ধর্ম মতে বিবাহ করেন। বিবাহের এক বছর না যেতেই ভবেশ চন্দ্র স্ত্রী বিথী রানীর কাছে যৌতুক বাবদ আড়াই লাখ টাকা দাবি করেন। বিথীর গরিব বিধবা মা টাকা দিতে না পারলে স্বামী উত্তম বিথীকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং দ্বিতীয় বিয়ের হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়ে বিথী রানী আদালতের আশ্রয় নিয়ে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা(৭০/২০১০) দায়ের করেন। এ মামলার বিচার কার্য শুরুর এক পর্যায়ে কৌশলী ভবেশ চন্দ্র আগামীতে যৌতুক দাবি করবেন না এবং স্ত্রীকে নির্যাতন বা দ্বিতীয় বিবাহ করবেন না মর্মে আপোষ মীমাংসায় লিখিত দিয়ে আদালত থেকে মামলার নিষ্পত্তি পান। কিছুদিন আগে স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে আপোষের শর্ত ভেঙে ভবেশ চন্দ্র দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এতে বাঁধা দেয়ায় পুনরায় যৌতুকের আড়াই লাখ টাকা দাবি করে বিথী রানীর উপর নির্যাতনের চালায় ভবেশ চন্দ্র। গত ৮ আগস্ট যৌতুকের আড়াই লাখ টাকা আনতে জোর করে বাবার বাড়ি পাঠানোর চেষ্টা করে ভবেশ চন্দ্র। কিন্তু টাকা আনতে বাবার বাড়ি না যাওয়ায় বিথী রানীকে তার স্বামী ভবেশ ও শ্বশুর বাড়ির অন্যান্যরা মিলে বেধম মারপিট করে বাচ্চাসহ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। স্থানীয়দের সহায়তায় আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি হন আহত বিথী রানী। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ১৬ আগস্ট স্বামী ভবেশ চন্দ্রসহ তিন জনের বিরুদ্ধে বিথী রানী আদিতমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় অভিযান চালিয়ে বুধবার (২৬ আগস্ট) রাতে যৌতুক লোভী স্বামী ভবেশ চন্দ্র রায় ওরফে উত্তমকে গ্রেপ্তার করে আদিতমারী থানা পুলিশ।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ভবেশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ সংবাদ