রাজারহাটে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যসামগ্রী তৈরি

এ.এস.লিমন,রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই বেকারিগুলোতে খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, রাজারহাট উপজেলার সুন্দরগ্রাম পুটিকাটাঁ গ্রামে শ্রী হরেণ চন্দ্র রায় নামের এক ব্যাক্তি বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই নিজ বাড়িতে টিনশেড ঘরে বেকারি স্থাপন করেছেন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দুই বছর ধরে এ বেকারিতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিস্কুট, কেক, পাউরুটি, চানাচুরসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি করে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে তা বিক্রি করছে।
এছাড়া রাজারহাট উপজেলার সিংগারডাবরী হাট বাজারে মোঃ ইসরারুল হক এর ভাই ভাই বেকারিতে গেলে দুই তরুণ বেকারি মেঝেতে এবং ময়লা ১টি টেবিলে অপরিষ্কার হাত দিয়ে মাড়িয়ে ময়দার খামির করছেন। পাশেই খোলা ড্রামে রাখা পোড়া তেল। ওই তেল দিয়ে কড়াই পাত্রে তৈরী হচ্ছে ক্রীমবল খাজা ও শিশুদের নিম্ন মানের খাবার। এছাড়া  ওই তেল ও অন্যান্য খাবারের ওপর মশা-মাছি মরে আছে। আর কয়েকজন শিশু হাতে গোল্ব না পড়ে পলিটিন ব্যাগ দিয়ে রুটির গায়ের উপরের অংশে তেল লাগিয়ে মাটিতে বিছানো ১টি অপরিষ্কার পলিটিনে রেখে দিচ্ছ খাদ্যসামগ্রী। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন না থাকায় খাদ্যসামগ্রী সাধারণ পলিব্যাগে প্যাকেটজাত করছে। খাদ্যগুলোতে বিভিন্ন রং ও স্যাকারিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এরপর চাকলা বাজার সংলগ্ন সাইদুল ইসলামের সু-স্বাদ বেকারী ও উমরমজিদ ইউপির বালাকান্দি মাইদুল ইসলামে বেকারী গেলে একই দৃশ্য দেখা যায়।
বেকারির মালিক মোঃ ইসরারুল হক বলেন, আমরা গরিব মানুষ। অল্প পুঁজিতে ব্যবসা করি। আমাদের পক্ষে বিএসটিআই ও প্রশাসনের অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে রাখা সম্ভব নয়। বেকারির কারিগরেরা ভালোভাবে হাত-পা ধুয়ে খাবার তৈরি করে। এতে সমস্যা না হওয়ার কথা।
স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন বকসী বলেন, বেকারির খাদ্যসামগ্রী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। বেকারিটি বন্ধ করার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে বললেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয় প্রশাসনের তদারকির ও ভ্রাম্যমাণ অভিযান জোরদার না থাকায় এসব বেকারীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া শিশুদের খাবারে বিষাক্ত ক্যামিকেল( হাইড্রোজ) ও রং মিশানো হচ্ছে। প্রশাসন দেখেও দেখেন না। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণে প্রশাসনের নিকট হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা।
রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ শাহীনুর রহমান সরদার বলেন, অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি খাবার খেয়ে পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে মানুষের। এ খাবারগুলো মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ গুলো খেলে পরিপাকতন্ত্র জনিত ক্যান্সার হতে পারে। মুখের গ্রোব্বর থেকে পাকস্থলি পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ঘাঁ ও হজম জনিত সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও কিডনির ও লিভার পানশনে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম জানান, দ্রুত বেকারীগুলোতে মনিটরিং করা হবে। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব খাদ্যসামগ্রী তৈরি করার সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ সংবাদ