চাঁদপুরে ভাইদের দ্বন্দ্বে খুন হয় কিশোর ইয়াসিন

চাঁদপুরে বড় ভাই-ছোট ভাই দ্বন্দ্বের জের ধরে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় কিশোর মো. ইয়াসিন। এ ঘটনার দুই সপ্তাহের মাথায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে পালিয়ে থাকা এলাকার বড় ভাই হিসেবে পরিচিত প্রধান আসামি মেহেদী হাসান প্রকাশ সাহেদ মিয়াজী।

শনিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সদর মডেল থানায় প্রেসব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন চাঁদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধা সরকার।

প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, বড় ভাই ছোটভাই দ্বন্দ্বের জের ধরে খুন হয় কিশোর মো. ইয়াসিন (১৬)। ঘটনার দিন গত ১০ অক্টোবর দুপুরে শহরের গনি আর্দশ হাইস্কুলের সামনে মো. ইয়াসিনের সঙ্গে ঘাতক মেহদেী হাসান প্রকাশ সাহেদ মিয়াজীর (২০) কথা কাটাকাটি হয়।

তিনি আরো জানান, মূলত সামান্য তর্কবিতর্কের পরই উত্তেজিত হয়ে পকেটে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে মো. ইয়াসিনের গলায় সাহেদ মিয়াজী আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়ে সে।

প্রথমে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় নেয়ার পথে মারা যায় মো. ইয়াসিন। এ ঘটনার পর গা ঢাকা দেয় চাঁদপুর শহরের কোড়ালিয়া এলাকার মফিজ মিয়াজীর ছেলে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান প্রকাশ সাহেদ। এ ঘটনায় প্রধান আসামি সাহেদ মিয়াজীর সঙ্গে আরো কয়েকজন জড়িত ছিল। এমন তথ্য পুলিশকে জানিয়েছে সে।

এদিকে, ঘটনার দুই সপ্তাহ পর শনিবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলার ফরিদগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয় সাহেদকে। আত্মগোপনে থাকা সাহেদ মিয়াজীকে আটক করেন সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হারুনুর রশিদ। অভিযানে তাকে সহায়তা করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল।

প্রেসব্রিফিংয়ে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সদর মডেল থানার ওসি মো. নাসিমউদ্দিন, ওসি (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ।

শনিবার বিকেলে চাঁদপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কামাল হোসেনের আদালতে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান প্রকাশ সাহেদকে হাজির করা হয়। এসময় হত্যাকাণ্ডের বণর্না দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় সে। পরে তাকে আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

রাতে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিলেও আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত সাহেদ মিয়াজীকে রিমান্ডে নেয়া হবে।

জানা গেছে, চাঁদপুর শহরে একটি বাড়ির নৈশ প্রহরী হারুন মোল্লার বড় ছেলে ছিল নিহত মো. ইয়াসিন। সে শহরের একটি টেইলারিং দোকানে কাজ করতো। শহরের কোড়ালিয়া এলাকায় তাদের বাসা।

প্রসঙ্গত, যেদিন এই হত্যাকাণ্ড ঘটে সেদিন চাঁদপুর পৌরসভার নির্বাচন ছিল। আর গনি আর্দশ হাইস্কুলের ভোটকেন্দ্রের বাইরে এই নৃসংশ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

সর্বশেষ সংবাদ