বেরোবিতে বৈধ উপায়ে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবীতে শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন

নাজমুল হুদা নিমু, বেরোবি প্রতিনিধি; বেরোবি, রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৯ অনুযায়ী রসায়ন বিভাগে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিভাগটির সচেতন শিক্ষকবৃন্দ।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় একাডেমিক বিল্ডিং-৪ এর রসায়ন বিভাগের সামনে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এইচ. এম. তরিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে এই বিভাগে মোট এগার (১১ জন) শিক্ষক কর্মরত, যার মধ্যে দুইজন সহযোগী অধ্যাপক, ছয়জন সহকারী অধ্যাপক (দুই জন শিক্ষাছুটিতে) ও তিনজন প্রভাষক রয়েছেন।জাতীয় সংসদে পাশকৃত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন মোতাবেক কোন বিভাগে অধ্যাপক কর্মরত না থাকলে সহযোগী অধ্যাপকগণের মধ্যে থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। বিভাগে যোগ্য সহযোগী অধ্যাপক কর্মরত থাকলে সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার নিচে কারও বিভাগীয় প্রধান নিযুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই।
এই বিভাগে জ্যেষ্ঠতম সহযোগী অধ্যাপক গত ১৩/০৬/২০২০ তারিখে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে
মেয়াদ পূর্ণ করেন। জাতীয় সংসদে পাশকৃত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন মোতাবেক
দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ সহযোগী অধ্যাপক পরবর্তী বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন ।
কিন্তু গত ১৬/০৬/২০২০ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে জাতীয় সংসদে পাশকৃত বিধি
লংঘন করে সহযোগী অধ্যাপক পদ মর্যাদার নিচের পদের শিক্ষককে রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। আমরা মনে করি, ঘৃণ্য উপায়ে রাষ্ট্রীয় আইন লংঘন করে অন্ধ অনুগত জুনিয়র শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করায় অত্র বিভাগের শিক্ষকবৃন্দের মধ্যে একাডেমিক শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে।
গত ১৬/০৬/২০২০ তারিখে রসায়ন বিভাগের
বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দুর্নীতি রোধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট প্রতিবাদ
জানিয়ে চিঠি প্রদান করা হয়, মহামান্য আদালতে বিভাগীয় প্রধান পদে অবৈধ নিয়োগের বিরুদ্ধে রিট করা হয়, মহামান্য আদালত রিটকারী বঞ্চিত শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় আইন মোতাবেক বিভাগীয় প্রধানের পদে নিয়োগ প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাষ্ট্রের আইন অবজ্ঞা করে স্বেচ্ছাচারভাবে দুর্নীতি করেই চলেছেন।সর্বশেষ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৯ এর ৪৫ ধারা এবং ৩৯(২) এর ১১ লঙ্ঘন করে মহামান্য আদালতে রিটকারী বঞ্চিত শিক্ষকের সভাপতিত্বে চলমান পরীক্ষা কমিটিকে বাতিল করে বিভাগের ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পরিক্রমা
রুদ্ধ করে দিয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুর্নীতি চালাতে থাকলে রসায়ন বিভাগের প্রতিটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা একের পর এক একাডেমিক জটিলতায় পতিত হবে।
এর সাথে এ বিভাগে পড়ুয়া প্রায় তিনশ’ শিক্ষার্থী প্রশাসনের প্রতারণার ফলে নতুনভাবে
একাডেমিক দুর্নীতির জটিলতায় পড়তে যাচ্ছে। এরূপ অনিয়মতান্ত্রিক পরিবেশে শিক্ষক
হিসেবে আমাদের পক্ষে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা দুরূহ হয়ে পড়েছে। এরূপ অনিয়ম-
অবিচার নৈতিকভাবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। কাজেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের
এরূপ অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করে বিভাগকে সচল রাখার প্রথম ধাপ হিসেবে রসায়ন বিভাগে “বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৯” অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ অত্যন্ত জরুরী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একের পর এক অনিয়ম-দুর্নীতির ও স্বেচ্ছাচারীতার মাধ্যমে বিভাগকে কার্যত অচল করে দিচ্ছে। তাই আমরা রসায়ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীতার বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছি। এর প্রথম কর্মসূচি হিসেবে আমরা রসায়ন বিভাগ ”বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৯” অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ঘোষণা করছি।
এছাড়াও উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, রসায়ন বিভাগের ড. বিজন মোহন চাকী, ড. মোঃ আব্দুল লতিফ, মোঃ নুরুজ্জামান খান ও ড. মোঃ জাকির হোসেন এবং সাংবাদিকবৃন্দ।

সর্বশেষ সংবাদ