রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ দিয়ে কারাগারে সাবেক প্যানেল মেয়র

সুনামগঞ্জে রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ প্রদানের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরী সংক্রান্ত একটি মামলায় জেলার ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর (প্যানেল মেয়র) হোসেন আহমদ রাসেলের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে মামলায় পলাতক থাকা আসামি সাবেক এই কাউন্সিলর  সুনামগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কুদরত এ ইলাহীর আদালতে আত্মসমপর্ণ করেন। হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুনামগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর সেলিম নেওয়াজ।

উল্লেখ্য, প্রতারণার মাধ্যমে দুই রোহিঙ্গা নাগরিককে সুনামগঞ্জ পৌরসভা থেকে জন্মসনদ দেওয়ার মামলায় গত বুধবার সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, প্যানেল মেয়র হোসেন আহমদ রাসেলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ওই মামলার নির্ধারিত তারিখে আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন এবং মামলার পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। পরে গত বৃহস্পতিবার আদালত থেকে জামিন নেন পৌর মেয়র নাদের বখ্ত ও আইনজীবী কাওসার আলম।

আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর (প্যানেল মেয়র) হোসেন আহমদ রাসেল, পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী পীযুষ কান্তি তালুকদার, পৌরসভার জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধক ও স্যানিটারি পরিদর্শক মো. সেলিম উদ্দিন, পৌরসভার মেয়র নাদের বখ্ত ও সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবি সমিতির সদস্য কাওসার আলমের। এই পাঁচজন মামলার এজহারভুক্ত আসামি নন। পুলিশ অভিযোগপত্রে তাদের নাম যুক্ত করেছে বলে জানা গেছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল সুনামগঞ্জ জেলা পাসপোর্ট কার্যালয়ে নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে পাসপোর্ট করতে আসেন দুই রোহিঙ্গা। তারা টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে চার ব্যক্তির সহযোগিতায় সুনামগঞ্জে আসেন। এই চার ব্যক্তি জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। ওই দিন সকালে পাসপোর্ট করতে গিয়ে তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেন। বিকেলে আবার ছবি তোলা ও আঙ্গুলের ছাপ দিতে পাসপোর্ট কার্যালয়ে গেলে কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। পরে দুই রোহিঙ্গা ও তাদের সহযোগী চার ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দেন পাসপোর্ট কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

ওই দিনই প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার তেরানগর গ্রামের চারজনকে আসামী করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর আগে ওই দুই রোহিঙ্গা সুনামগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের আলীপাড়া এলাকার বর্তমান বাসিন্দা হিসেবে স্থানীয় কাউন্সিলর হোসেন আহমদ রাসেলের সুপারিশে পৌরসভা থেকে জন্মসনদ নিয়েছিলেন। পরে সেটি সত্যায়ন করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য কাওসার আলম।

এই মামলায় গত ২০ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এতে এজহারভুক্ত চার আসামি ছাড়াও অভিযুক্তদের তালিকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া পাঁচজনের নাম যুক্ত করে।

সর্বশেষ সংবাদ