বেরোবিতে প্রতিষ্ঠার ৫ বছরেও চালু হয়নি ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট: বিপাকে ২৩ গবেষক

 

ইভান চৌধুরী, বেরোবি প্রতিনিধিঃবেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ে এমফিল ও পিএইচডি কোর্সে গবেষক ভর্তির পাছঁ বছরেরও শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারেনি ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। বিগত উপাচার্য ড. এ.কে.এম নূর-উন-নবী সিলেবাস প্রণয়ণ করলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি। ফলে বিপাকে পড়েছেন ভর্তিকৃত ২৩ জন গবেষক। দীর্ঘদিন ধরে কোন কার্যক্রম না থাকায় অনেকেই গবেষণা বাদ দিয়েছেন। গবেষণার জন্য নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া নির্ধারিত ছুটি কাজে লাগাতে না পারায় অনেককে চাকরি হারাতে হয়েছে। ইনিস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে সম্পূর্ন অবগত থাকলেও তা চালু করার কোন উদ্যেগ নেয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভুগিদের।
বিশ^বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ^বিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের সুপারিশ ও আচার্যের অনুমতি নিয়ে ৩ ডিসেম্বর ২০০৯ সালে ড. ওয়াজদ রিসার্চ ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে ২০১১ সালের মার্চ মাসে বিশ^বিদ্যালয়ের ১৭তম সিন্ডিকেটে এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি করানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর ২০১২ সালে জাতীয় দৈনিকে গবেষণার জন্য ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ১৫ জন এমফিল ও ৮জন পিএইচডি কোর্সে আবেদনকারীর নাম তাদের গবেষনার শিরোনাম এবং তত্বাবধায়কের নাম অনুমোদিত হয়। ২৩ জন গবেষক ৮জন তত্বাবধায়কের অধীনে গবেষণা করার কথা।
বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায় ২০১১-১২ সেশনে গবেষকরা এমফিল করতে দুই বছর এমফিল করতে ২০ হাজার টাকা এবং তিন বছর পিএইচডি করতে ৩০ হাজার টাকা জমা দিয়ে গবেষকরা ভর্তি হয়। পরবর্তীতে ২ জুলাই ২০১৬ সালে ইনস্টিটিউটকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নতি করা হলেও গবেষকদের কোর্স চালু করা হয়নি। ফলে ভেস্তে যায় ২৩ জন গবেষকের গবেষণার স্বপ্ন।
গবেষণায় ভর্তিকৃত এক গবেষক বগুড়া কালেক্টর স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা বিথীকা রায়। নির্ধারিত ছুটিতে গবেষণা কাজ শেষ করতে না পারায় তাকে চাকরী হারাতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছি । কিন্তুু ভর্তির পাছঁ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পযর্ন্ত কোন ক্লাস করতে পারিনি। ইনিস্টটিউট কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর উদাসীনতার কারণে আমাকে চাকরী হারাতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ আগের উপাচার্য ড. এ কে এম নূর-উন-নবী সাথে কয়েকবার ব্যাক্তিগত ভাবেও নিজের বিষয়গুলো তুলে ধরলেও তা শুধু আশ^াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকেছে, কোন উদ্যেগ গ্রহণ করা হয়নি। আমি পাঁছ বছর থেকে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি। গবেষনার জন্য আমি চাকুরি হারিইছি, প্রশাসন যেন আমাকে পূর্নবাসনের ব্যবস্থা করেন।
এ ব্যাপারে ড.ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট পরিচালক ও বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বিটিএফও বলেন, “ ইতোমধ্যে রিসার্চ ইনিস্টিটিউট এর ব্যাপারে ১৯তম একাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আমরা অতি তাড়াতাড়ি ড.ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট কার্যকর করার ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো। এমনকি ভর্তিকৃত গবেষকদের যদি গবেষণার সময় থাকে তাদেরকে নিয়েও চিন্তাভাবনা করবো। ”
উল্লোখ্য, ২০১১ সালের গবেষণা ইনস্টিটিউটে গবেষক ভর্তি করা হলেও এর স্বতন্ত্র কোনো ভবন ছিল না। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির জন্য একটি ১০ তলা ভবন নির্মানের কাজ চলছে।

সর্বশেষ সংবাদ